WB Madhyamik exam 2023

চিকিৎসক হতে চায় ইমাম, বাধা অনটন

ছোট থেকেই ইমাম পড়াশোনায় ভাল বলে জানাচ্ছেন পরিজনেরা। বাবা অ্যাম্বুল্যান্স চালক ছিলেন। বছর দু’য়েক আগে মল্লারপুরে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ০৯:৫৭
Share:
ইমাম হোসেন। নিজস্ব চিত্র

ইমাম হোসেন। নিজস্ব চিত্র

বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী বছর দুয়েক ধরে। দিদিমা ও মামা অল্প রোজগার থেকে পরিবারের জন্য টাকা দেন। সেই টাকায় পড়াশোনা করে মাধ্যমিকে ৬৫০ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হল নলহাটি ২ ব্লকের ভদ্রপুর মহারাজা নন্দকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মহম্মদ ইমাম হোসেন। স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু তা পড়ার খরচ কোথা থেকে জোগাড় হবে এই চিন্তায় ঘুম উড়ছে ইমামের পরিবারের।

ছোট থেকেই ইমাম পড়াশোনায় ভাল বলে জানাচ্ছেন পরিজনেরা। বাবা অ্যাম্বুল্যান্স চালক ছিলেন। বছর দু’য়েক আগে মল্লারপুরে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তার পর থেকেই কোনও কাজ করতে পারেন না ইমামের বাবা। তার পর থেকেই পরিবারের দায়িত্ব নেয় ইমামের দিদা নুঙ্গিনী বেগম। তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহ কর্মী। ইমামের মামা বিদ্যুৎ দফতরের অস্থায়ী কর্মী। তাঁদের অভাবের সংসার হলেও নাতি ও মেয়ের জন্য প্রত্যেক মাসে টাকা পাঠান নুঙ্গিনী। সেই সামান্য টাকায় সংসার সামলে কোনও মতে ছেলেকে পড়াশোনা করার সাহস জুগিয়ে এসেছেন ইমামের মা ঊষা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের পড়াশোনার জন্য ঘরের ঘটি বাটি সব বিক্রি করে দেব। তবুও চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষজনের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলব।’’ ইমাম বলছে, ‘‘দিনে দশ ঘণ্টার বেশি পড়তাম। আরও ভাল ফলের আশা করেছিলাম। দিদা ও স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্যে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হতে পারলাম।’’

ইমামের গৃহশিক্ষক আক্রম রাজা, মহম্মদ খলিলুল্লা শেখ বইখাতা দিয়ে সাহায্য করেছেন। এ ছাড়াও অন্য শিক্ষকেরা টাকা নিতেন না। স্কুলের শিক্ষকেরাও অনেক সাহায্য করেছেন। ইমাম বলছে, ‘‘চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষজনের পাশে থাকতে চাই। ভদ্রপুর ও শীতলগ্রামের মানুষজন সে ভাবে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না। বাবার চিকিৎসা করতেও অনেক সমস্যা হয়েছে। তাই চিকিৎসক হব বলে মনস্থির করেছি।’’

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক শ্রীমন্ত মার্জিত বলেন, ‘‘গ্রামের স্কুলে ইমামের এই ফল স্কুলের সম্মান বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে ইমামের পড়াশোনার জন্য কোনও সাহায্য দরকার হলে স্কুলের শিক্ষকেরা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন