পরিত্যক্ত এই বাজার ভবনেই কোয়রান্টিনে ছিলেন দিলীপ পণ্ডিত। নিজস্ব চিত্র
কাজ করতে গিয়েছিলেন ভিন্ রাজ্যে। সদ্য ফিরেছিলেন নিজের এলাকায়। কিন্তু বাড়িতে ঢোকা হল না দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জের দিলীপ পণ্ডিতের (৬০)। ‘কোয়রান্টিনে’ থাকার সময়েই সাপের ছোবলে তাঁর মৃত্যু হল। প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ করেছে পরিবার। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় গ্রামে ঢুকতে বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেওয়ায় পাম্প-ঘরে থাকতে হয়েছে বলে অভিযোগ কর্ণাটক থেকে ফেরা দশ জন শ্রমিকের।
দিলীপবাবুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৬ জুন সুভাষ মালি নামে পড়শি গ্রামের এক শ্রমিকের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের পুণে থেকে বালুরঘাটে ফেরেন তিনি। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে তাঁরা পাগলিগঞ্জে জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত মার্কেট কমপ্লেক্সে ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকতে শুরু করেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শনিবার মাঝরাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দিলীপবাবুকে সাপে কাটে। পরিবারের লোকজন জানান, সুভাষবাবুর কাছে খবর পেয়ে তাঁরা মার্কেট কমপ্লেক্সে ছুটে যান। রবিবার সকালে পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেহ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তের রিপোর্টেও সাপে কাটার ফলে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যাল, বাঙুরে বৃদ্ধি পাচ্ছে সুস্থ হওয়ার হার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৃতের পরিবারের সদস্যেরা সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, ওই কমপ্লেক্সের চারদিকে ঝোপঝাড় ও আবর্জনা। আরও অভিযোগ, দিলীপবাবুদের খোঁজ নেয়নি প্রশাসন। বাড়ি থেকে খাবার ও পানীয় জল পাঠানো হচ্ছিল। লাগোয়া আত্রেয়ী নদীতে তাঁদের স্নান-প্রাতঃকৃত্য সারতে হত। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য বিডিও (বালুরঘাট) অনুজ সিকদারকে ফোন করা হলেও তিনি উত্তর দেননি। তবে জেলাশাসক (দক্ষিণ দিনাজপুর) নিখিল নির্মলের আশ্বাস, ‘‘ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’’
আরও পড়ুন: ৩০% বাস ও মিনিবাস নামানোর আশ্বাস, ভাড়া বৃদ্ধির দাবি বিবেচনা করবে কমিটিই
গ্রামবাসীর একাংশের বাধায় সাবমার্সিবল পাম্প রাখার দরজা-জানলা না থাকা এক চিলতে পরিত্যক্ত ঘরে দশ জন শ্রমিককে প্রায় ৩৫ ঘণ্টা ধরে ঠাঁই নিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে কাঁকসার মলানদিঘির রক্ষিতপুরে। শনিবার ওই শ্রমিকেরা কর্ণাটক থেকে গ্রামে ফেরেন। কালু বাউড়ি নামে এক শ্রমিকের অভিযোগ, ‘‘গ্রামে ঢুকতে গিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘গ্রামে থাকতে দেওয়া হবে না’। তাই গ্রামের অদূরে, জঙ্গলের পাশে পাম্প-ঘরে উঠতে হয়েছিল।’’ তাঁদের খাবার দিতে এসেও গ্রামবাসীর বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ শ্রমিকদের পরিবারের। শেষমেশ রবিবার রাতে গ্রামের স্কুলে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয় বলে জানায় পুলিশ। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির বক্তব্য, ‘‘প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ করেছে।’’