সংস্কারে ধাক্কা খেয়েও শেষ আটে রামনাথন

হাতে বিগ সার্ভ আছে। দ্বিতীয় সার্ভের তীক্ষ্মতাও ভাল। আবার প্রতিটা সার্ভিসের আগে বল সমেত লাইনে হাত ছুঁয়ে প্রণাম করেন! পেশাদার ট্যুরের প্রথমসারির প্লেয়ারদের মতোই স্লাইস শট মারেন। দারুণ ভলি, ড্রপ শট। নেটে আসেন চমৎকার। আবার নীল-সাদা মলাটের একটা ধর্মগ্রন্থ ম্যাচের সারাক্ষণ সাইডলাইনে তাঁর বিশ্রাম-চেয়ারে সাদা তোয়ালের উপর রাখা থাকে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩০
Share:

সাউথ ক্লাবের নতুন সদস্যের সঙ্গে বিখ্যাত প্রাক্তনীরা। বুধবার সোমদেবকে সাম্মানিক আজীবন সদস্যপদ দিল ভারতীয় টেনিসের আঁতুড়ঘর। ছবি: উৎপল সরকার।

হাতে বিগ সার্ভ আছে। দ্বিতীয় সার্ভের তীক্ষ্মতাও ভাল। আবার প্রতিটা সার্ভিসের আগে বল সমেত লাইনে হাত ছুঁয়ে প্রণাম করেন!

Advertisement

পেশাদার ট্যুরের প্রথমসারির প্লেয়ারদের মতোই স্লাইস শট মারেন। দারুণ ভলি, ড্রপ শট। নেটে আসেন চমৎকার। আবার নীল-সাদা মলাটের একটা ধর্মগ্রন্থ ম্যাচের সারাক্ষণ সাইডলাইনে তাঁর বিশ্রাম-চেয়ারে সাদা তোয়ালের উপর রাখা থাকে!

বার্সেলোনায় ট্রেনিং করছেন চার বছর ধরে। আবার মোটেই তেমন ফুটবলভক্ত নন! বরং পোকার খেলেন অবসরে! বেশ কষ্ট করে মনে আনলেন, মেসিদের দু’টো ছোট দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ দেখতে তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন স্প্যানিশ টেনিস কোচই। টিকিটের দাম বড্ড বেশি। তাও বার্সা দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর গ্যালারির অন্য দিকে খেলায় পুরো ম্যাচ দেখেননি!

Advertisement

পরতে-পরতে এ রকমই বৈপরীত্যে ভরা রামকুমার রামনাথন। একমাত্র ভারতীয় হিসেবে কলকাতা ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন বৈপরীত্যে ভরা টেনিস খেলেই। এই দুর্দান্ত তো পরক্ষণে সাদামাঠা! সার্বিয়ার মিকি ইয়াঙ্কোভিচকে এ দিন ৬-১, ৫-৭, ৭-৫ হারিয়ে স্বীকার করলেন, “সার্ভিসের আগে টাচলাইন প্রণাম করার বরাবরের অভ্যাসের জন্য ‘টাইম ভায়োলেশনে’ও পড়ি। আজও দ্বিতীয় সেটে ৪-৫-এ চেয়ার আম্পায়ার সতর্ক করেছেন। আর এক বার হলে ওই পয়েন্টটা খোয়াতাম। কিন্তু ঠিক ওর পরেই পরপর দু’টো ডাবল ফল্ট করে সেটটা হারলাম। আসলে খেলার মধ্যেও নিজের ধর্মীয় সংস্কারগুলো ঠিক মতো পালন করতে না পারলে ফোকাসটা নড়ে যায়। কেমন নড়বড়ে লাগে!”

চ্যালেঞ্জারে নিজের সেরা ছুঁতে (গত বছর ইনদওরে সেমিফাইনাল) বৃহস্পতিবার যাঁর বিরুদ্ধে নামবেন রামনাথন, সেই চিনা তাইপের তি চেন আবার একমাত্র প্লেয়ার যিনি গতবারও কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিলেন। নইলে এ বার শেষ আটের সাত জনই নতুন মুখ। যা শহরের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক টেনিস টুর্নামেন্টের মানোন্নয়ন ঘটারও প্রমাণ। তবে য়ুকি ভামব্রি বা সনম সিংহ সম্পর্কে সেই কথা খাটে না। দু’জনই এ দিন দ্বিতীয় ম্যাচেই হেরে গেলেন। মলডোভার অ্যালবটের বিরুদ্ধে প্রথম সেট সহজে জিতেও পরের দু’টোয় উড়ে গেলেন য়ুকি। ৬-৩, ২-৬, ১-৬। সনমকে অস্ট্রেলীয় শীর্ষ বাছাই ডাকওয়ার্থ ৬-২, ৬-১ শুধু চুরমারই করেননি, বুঝিয়ে দিলেন দিল্লি ওপেনে তাঁকে সনমের হারানোটা ছিল খাঁটি ফ্লুক।

আবার অন্য দুই সিঙ্গলস তারকা এটিপি চ্যালেঞ্জার সিরিজের টুর্নামেন্টে নিজেদের অপ্রত্যাশিত হারের দুঃখ ভুলতে তেড়েফুঁড়ে ডাবলসে এগোচ্ছেন। সোমদেব দেববর্মন স্বদেশীয় সঙ্গী নিয়ে ক্রোট জুটিকে ৬-৪, ৬-২ হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছেছেন। গতবারের সিঙ্গলস চ্যাম্পিয়ন বোজোলিয়াক তাঁর পার্টনার নিয়ে পা রেখেছেন শেষ আটে, এ বারের শীর্ষ বাছাই ডাবলস টিমকে হারিয়ে। আর একটা ম্যাচ জিতলেই বোজোলিয়াক-সোমদেব ডাবলস-যুদ্ধ কিন্তু শেষবেলায় আচমকা ইউএসপি হয়ে উঠবে কলকাতা ওপেনের!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement