‘মোহনবাগান হোক স্বচ্ছ’। বৃহস্পতিবার এই দাবিতেই মিছিলে হাঁটলেন প্রাক্তন ফুটবলাররা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
নির্বাচনের আগে নাটকীয় মোড় মোহনবাগানে।
ক্লাবের কার্যকর কমিটির আসন্ন সভা ঘিরে ধুন্ধুমার শুরু হয়ে গেল বাগানে। একদিকে প্রসূন-সুব্রতর মতো প্রাক্তনরা অন্য দিকে বাগানের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী।
বৃহস্পতিবার ‘ক্লাব পরিষ্কার’-এর দাবিতে সুব্রত ভট্টাচার্য এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মিছিলে হাঁটলেন বেশ কিছু প্রাক্তন ফুটবলার-সহ শ’দেড়েক ক্লাব সমর্থক। যা দেখে বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র জানিয়ে দিলেন, ২৭ ফেব্রুয়ারির বার্ষিক সাধারণ সভায় ক্লাবের চার শীর্ষকর্তাই উপস্থিত থাকবেন। তাঁর দাবি, “সব নিয়ম মেনেই মিটিং ডাকা হয়েছে। আর সেখানে টুটু বসু, সৃঞ্জয় বসু, দেবাশিস দত্ত-সহ কার্যকরী কমিটির সব সদস্যই আসবেন। কারণ কারও পদত্যাগই গৃহীত হয়নি।”
গোষ্ঠ পাল মূর্তির সামনে থেকে শুরু হওয়া মিছিল শেষে সুব্রতর হুমকি, “যতক্ষণ না হিসেবপত্র হাতে পাচ্ছি, ততক্ষণ এজিএম হবে না। আমরা আদালতে যাব। সেখানে কিছু না হলে, তাতে দরকারে ক্লাব ঘেরাও করেও এজিএম আটকাব। তার জন্য যদি জেলে যেতে হয়, তাও যাব।” বিরোধী শিবির অনড়। তবে নর্ডি-কাতসুমিদের জন্য টাকা জোগাড়ে ব্যস্ত বাগান সচিব বিরোধী হুমকিকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। বললেন, “এজিএম হওয়া নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য কী ভাবে প্লেয়ারদের টাকা জোগাড় করা যায়।”
এ দিন সুব্রত-প্রসূনদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটলেন শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রদীপ চৌধুরী, দিলীপ পালিত, নিমাই গোস্বামী, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত ভদ্র, বাসুদেব মণ্ডল, অলোক দাস, অমিত দাস, প্রশান্ত চক্রবর্তীদের মতো বাগান-প্রাক্তনরা। মিছিলকারীদের ফোনে সমর্থন জানান চুনী গোস্বামী, বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিলে ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা বাগান কার্যকরী কমিটির সদস্য অতীন ঘোষও। তাঁদের সবার মুখে একটাই দাবি, ‘স্বচ্ছ হোক মোহনবাগান’। সাংসদ-ফুটবলার প্রসূন বলছিলেন, “অঞ্জনদা অসুস্থ। ক্লাবের দৈনন্দিন কাজেও তাঁকে পাওয়া যায় না। এ রকম একটা অবস্থায় অঞ্জনদার উচিত, প্রাক্তন ফুটবলারদের হাতে ক্লাবটা ছেড়ে দেওয়া।”
তাঁর দাবি নিয়ে অবশ্য ক্লাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ, বাগান সচিব সপ্তাহে দু’তিন দিন ক্লাবে আসেন। ডার্বির আগের দিনও যখন ফুটবলারদের বেতন দেওয়া নিয়ে সমস্যা তুঙ্গে, তখন তাঁকে ছাড়া অন্য কর্তাদের ক্লাবে দেখা যায়নি। সুব্রতর আবার এ দিন দাবি, “বেআইনি ভাবে সচিব পদে আছেন অঞ্জনবাবু। উনি পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেননি। যদি করে থাকেন তা হলে সেটা ক্লাবের ওয়েবসাইটে নেই কেন? সভার কোনও মিনিটস্ নেই। সভাপতি ছাড়াই এজিএম ডাকা হয়ে যাচ্ছে। পুরোটাই তো বেআইনি। সদস্যকার্ডে প্রচুর গরমিল। আমরা রিসিভারের দাবি জানাব আদালতে।”
দাবি এবং পাল্টা দাবির মধ্যেই বাগানে শুরু হয়ে গেল আন্দোলন। নেতৃত্বে দুই ঘরের ছেলে। দেখার, জল কত দূর গড়ায়!