বহাল তবিয়তে জাডেজা। ছবি: রয়টার্স
কিছু কিছু দুঃস্বপ্ন শেষই হতে চায় না। যেমন, বিদেশে পিঠোপিঠি টেস্ট জিততে পারে না ভারত। বা ভারতের কুড়িটা উইকেটের দাম বিপক্ষের চেয়ে অনেক কম থাকে। বা লম্বা সিরিজে আমাদের প্রধান বোলিং অস্ত্ররা ক্রাচে ভর করে থাকে। আমরা প্রায় সবাই-ই এখন একটা চেনা অন্ধকার গলিতে ফিরে গিয়েছি। এই মনোভাব খুব বিপজ্জনক। ধোনিদের এই ভাইরাস থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সিরিজ হারা-জেতা তো এখনও বাকি। প্রথম দুটো টেস্টে যে পদ্ধতি ধোনিদের এত সাহায্য করল, সেটায় ফিরে যেতে আপত্তি কোথায়? যেখানে ট্রেন্টব্রিজের ভাবমূর্তির দাম ছিল না। যেখানে লর্ডস পিচের সবুজ সাভানাকে কর্তৃত্বের সঙ্গে বশে আনা গিয়েছিল।
শুরুটা হয়েছিল পাঁচ ব্যাটসম্যান আর পাঁচ বোলারের থিওরি দিয়ে। ভারতীয়রা হয়তো ইংরেজদের সেই গোপন কথাটা জেনে গিয়েছিল যে, ওরা আগ্রাসী প্রতিপক্ষ পছন্দ করে না। হয়তো মাইকেল ক্লার্ক বা মিসবা উল হক ওদের ফোন করেছিল! মনে আছে তো, দুবাইয়ে এক বার দেড়শো তাড়া করতে পারেনি ইংল্যান্ড। বিপক্ষ যে মুহূর্তে নড়বড় করতে শুরু করে, সেই মুহূর্তে ইংল্যান্ড মাস্তানিতে ফিরে যায়। যেটা সাউদাম্পটনে ভুলে গেল ভারত।
তা হলে এখন থিওরিটা ফিরুক। তার পর সে সব প্লেয়ারকে নির্বাচন করা যাক, যারা কাজটা করতে পারবে। রোহিত শর্মাকে হঠাও, রবি অশ্বিনকে ফেরাও। তাতে ভারসাম্যটা ফিরবে। আশা করছি ভুবি ঠিক আছে। না হলে বরুণ অ্যারনকে সুযোগ দেওয়া হোক। পঙ্কজ সিংহ নিয়ে কী বলব! আশা করছি ওর ঘরে ঈশ্বরের পায়ের ধুলো পড়েছে। আস্থার ঋণ শোধ করার জন্য মহম্মদ শামি তৈরি। ব্যাটসম্যানের প্যাডের প্রতি নিজের ভালবাসা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে স্যর জাডেজা। আশা করছি পূজারা-কোহলি সাউদাম্পটনের ঘা সারিয়ে ফেলেছে। আমি হলে শিখর ধবনকে এখনই বসিয়ে দিতাম না। ওর থেকে একটা ভাল সেশন আগ্রাসনের একটা ভাল ডোজ দিতে পারবে, যেটা ভারতের খুব দরকার। আর ঈশ্বরের দোহাই, মইন আলিকে দয়া করে মইন আলির মতোই দেখা হোক! ছেলেটা মোটেও নিরীহ নয়। কিন্তু ওর দাড়ি থেকে তো তিনশো উইকেটও ঝুলছে না! মান বুঝে ওকে খেললে ভারতের অসুবিধে হবে না।
ক্যাচ নেওয়াটা প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ হবে। শরীরী ভাষা পজিটিভ হওয়াও দরকার। টেস্টের শুরুর দিকে একটা সেশন জিততে পারলে তাতে প্রচুর লাভ হবে। দেখতে পাচ্ছি, গত সপ্তাহে জেমস অ্যান্ডারসন-রবীন্দ্র জাডেজা মামলার শুনানির যন্ত্রণা ভারত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এর বদলা নেওয়ার সবচেয়ে ভাল জায়গা কিন্তু বাইশ গজ। এ বার আক্রমণের সময় এসে গিয়েছে।