এ বার ইউরোপা লিগেও জুটল হার

ভাগ্যকে দুষছেন ফান গল

প্রিমিয়ার লিগ হোক বা ইউরোপা লিগ। একটা ছবি কিছুতেই পাল্টাচ্ছে না— লুইস ফান গলের মাথায় হাত। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড কোচের গত সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগে অবনমনের আতঙ্কে থাকা সান্ডারল্যান্ডের কাছে হেরে মাথায় হাত পড়েছিল। আর বৃহস্পতিবার পড়ল ইউরোপা লিগে ডেনমার্কের কোনও এক ক্লাব মিটজিল্যান্ডের কাছে হেরে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৩
Share:

মাথায় হাত। মিটজিল্যান্ডের কাছে হেরে ম্যান ইউ কোচ ফান গল। সমান হতাশ সহকারী কোচ রায়ান গিগসও। ছবি: গেটি ইমেজেস।

প্রিমিয়ার লিগ হোক বা ইউরোপা লিগ। একটা ছবি কিছুতেই পাল্টাচ্ছে না— লুইস ফান গলের মাথায় হাত। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড কোচের গত সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগে অবনমনের আতঙ্কে থাকা সান্ডারল্যান্ডের কাছে হেরে মাথায় হাত পড়েছিল। আর বৃহস্পতিবার পড়ল ইউরোপা লিগে ডেনমার্কের কোনও এক ক্লাব মিটজিল্যান্ডের কাছে হেরে। দুটো ম্যাচেই এক ফল, ১-২।

Advertisement

এমনিতেই ইউরোপা লিগে ম্যাঞ্চেস্টারের রেকর্ড খুব ভালো নয়। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে কখনও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি রেড ডেভিলস। তার উপর ফান গল চোটের জন্য এই ম্যাচে ওয়েন রুনি-সহ তেরো জন প্লেয়ারকে পাননি। এমনকী প্রস্তুতিতে গোলকিপার দাভিদ দ্য জিয়াও হাঁটুতে চোট পেয়ে ম্যাচের বাইরে চলে যান।

সেরা ৩২ দলের লড়াইয়ে নেমে এ দিন তবু মেম্ফিস ডিপে ম্যাঞ্চেস্টারকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু রেড ডেভিলস ডিফেন্স তা ধরে রাখতে পারেনি। পিওনে সিস্টো আর পল ওনুয়াচুর গোলে মিটজিল্যান্ড জিতে যায়। ফান গল তাই হার নিয়ে বলছেন, ‘‘ভাগ্যটাই খারাপ। প্রথম ১০-১৫ মিনিটে আমরা ভাল খেলতে পারিনি। প্লেয়ারদের মাথায় একসঙ্গে অনেক কিছু ঘুরছিল মনে হয়।’’ ডাচ কোচের মনে হয়েছে প্রথমার্ধের থেকে দ্বিতীয়ার্ধে বেশি সুযোগ পেয়েছে তাঁর দল। কিন্তু তার সদ্ব্যবহার করতে না পারায় হারতে হল। ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে আমরা কোনও ডুয়েলই তো লড়তে পারলাম না। এই অবস্থায় দুটো গোল খেলে সামলানো কঠিন হয়ে যায়। জেসি লিনগার্ড দুটো দারুণ সুযোগও তো পেয়েছিল গোলের।’’

Advertisement

তবে ম্যাঞ্চেস্টার কোচ যাই বলুন, টিমের এই পারফরম্যান্স মেনে নিতে পারছেন না সমর্থকেরা। ম্যাচের পর সমর্থকদের ক্ষোভেই সেটা পরিষ্কার। বিশেষ করে এমন একটা দলের বিরুদ্ধে যাদের কিনা গত মরসুমেই প্রথম বার জাতীয় লিগ জেতার রেকর্ড রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে ক্লাবের ফুটবলারদের মানসিকতা নিয়ে। কোথাও যেন জিততেই ভুলে যাচ্ছে টিম, এমন অভিযোগও উঠছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ম্যান ইউ কোচ-ফুটবলারদের মুণ্ডপাত তো এতটাই চরমে উঠেছে যে অনেক সমর্থক তো খোলাখুলি বলছেন প্রিয় ক্লাবের ম্যাচ দেখার থেকে কম্পিউটার গেম খেলা অনেক ভাল ছিল। শুধু সমর্থকরাই নন, মাস দু’য়েক আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে উলফসবর্গের বিরুদ্ধে রেড ডেভিলস জার্সিতে খেলা ফুটবলার নিক পাওয়েলও সেই দলে আছেন। এখন লোনে হাল সিটিতে খেলা নিক পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘সত্যি বলতে ম্যাচের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। তাই ম্যাচটা দেখা হয়নি। ফিফা খেলছিলাম। পরে জানলাম সব। খুব খারাপ লাগছে। এ ভাবে হারের কোনও অজুহাত হয় না।’’

এখানেই অবশ্য শেষ নয়। কোচের চাকরি বাঁচাতে মরিয়া ফান গলের সামনে আরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইংরেজ মিডিয়ায় বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা চলছে জোসে মোরিনহো তাঁর জায়গায় নতুন কোচ হয়ে আসছেন। এ নিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার কর্তাদের সঙ্গে নাকি কথাও হয়ে গিয়েছে প্রাক্তন চেলসি কোচের। ফান গল নিজেই স্বীকার করে নিয়েছিলেন, এক সময় বার্সেলোনায় কোচিং করানোর সময় তাঁর সহকারী মোরিনহোর তাঁর চেয়ারে বসার খবরে তিনি হতাশ। তার উপর যে ভাবে এখন পরপর দল হারছে, তাতে যে চাকরি বাঁচানো আরও কঠিন হয়ে উঠছে ফান গলের জন্য, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

ম্যাঞ্চেস্টারের পরের ম্যাচ সোমবার, এফএ কাপ পঞ্চম রাউন্ডে শ্রুসবারির বিরুদ্ধে নিউ মেডোয়। যার আগে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করে রেখেছেন, টানা তৃতীয় ম্যাচ হারার পথে ক্লাব। ফান গলের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে ঘরেও। ম্যাঞ্চেস্টার সমর্থকদের একাংশের দাবি, এখনই ফান গলকে সরানো উচিত। ইংরেজ মিডিয়াও ফান গলকে তুলোধোনা করে ছাড়ছে। একটি ইংরেজ সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘‘ম্যাচ দেখতে আসা ম্যাঞ্চেস্টার কর্তারা যেখানে বসেছিলেন তার খুব কাছেই ছিল প্রেস বক্স। টিমের পারফরম্যান্স দেখে কর্তারা যে শকড সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল প্রেসবক্স থেকে। কর্তাদের তো কিছুটা আতঙ্কিতও মনে হল।’’

এই অবস্থায় ফান গল তাঁর চাকরি কত দিন সামলাতে পারেন, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement