গদিতে প্রত্যাবর্তন, মাঠে লজ্জা

বলেছিলামই তো নাটক!

ভেবেছিলাম সার্কাসটা আরও কিছু দিন হয়তো চলবে। রাতের অন্ধকারে ক্লাব তাঁবুতে পাউডার, নাইট ক্রিম মেখে সাজুগুজু করে আসবেন। আর ‘ক্লাব-অন্ত প্রাণ’-এর একটা ছবি বুকে সেঁটে টিভি ক্যামেরার সামনে প্রবল দুঃখ প্রকাশ করে চলে যাবেন! খুব আফসোস হচ্ছে। টিভিতে অঞ্জন-টুটু-দেবাশিসের সাজানো নাটক আটচল্লিশ ঘণ্টাও টিকল না। অপ্রত্যাশিত ভাবে তিন ‘কিংবদন্তি’ কর্তাই পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিলেন দু’তিন দিন আগে। তবে গোটা ব্যাপারটাই যে একটা নাটক, সেটা কিন্তু আমি প্রথম দিনেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৮
Share:

ভেবেছিলাম সার্কাসটা আরও কিছু দিন হয়তো চলবে। রাতের অন্ধকারে ক্লাব তাঁবুতে পাউডার, নাইট ক্রিম মেখে সাজুগুজু করে আসবেন। আর ‘ক্লাব-অন্ত প্রাণ’-এর একটা ছবি বুকে সেঁটে টিভি ক্যামেরার সামনে প্রবল দুঃখ প্রকাশ করে চলে যাবেন!

Advertisement

খুব আফসোস হচ্ছে। টিভিতে অঞ্জন-টুটু-দেবাশিসের সাজানো নাটক আটচল্লিশ ঘণ্টাও টিকল না। অপ্রত্যাশিত ভাবে তিন ‘কিংবদন্তি’ কর্তাই পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিলেন দু’তিন দিন আগে। তবে গোটা ব্যাপারটাই যে একটা নাটক, সেটা কিন্তু আমি প্রথম দিনেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম। আমার সবচেয়ে বেশি ‘কষ্ট’ হচ্ছে দেবাশিস দত্তের কথা ভেবে। এই নিয়ে বছরে কত বার যে তাকে পদত্যাগপত্র পাঠাতে হল, আর ফিরিয়ে নিতে হল, তার ঠিকানা নেই। আমার ধারণা, এ বার থেকে পশ্চিমবঙ্গের সব কর্মরত মানুষ যাঁরা পদত্যাগ করতে চান নিজের সংস্থা থেকে, তাঁরা দেবাশিসকে দিয়েই পদত্যাগপত্রের ফর্ম্যাট টাইপ করাবেন। পদত্যাগ করাটা হাস্যকর হয়ে গিয়েছে মোহনবাগানে।

তবে এ সব করে ক্লাবের অন্দরে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষদের নিয়ে মজা করা যাবে। সমর্থক-সদস্যদের আর বোকা বানানো যাবে না। এঁরা ভাবছে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ক্লাবে নিয়ে আসব। অর্থের জোগান দেবে। কিন্তু নিশ্চয়তা কোথায়? সারা দিন চিত্‌কার করছে, ফান্ডে টাকা নেই। টাকা নেই। নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে নাকি ক্লাব চালাচ্ছে। এ দিকে বছরের হিসেব চাইলে কোনও কাগজপত্র নেই। পুরোটাই গোলকধাঁধা। এঁদের মধ্যে সততার কত অভাব, সেটা তাঁদের কাজকর্মেই পরিষ্কার। টাকা-পয়সার ভয় দেখিয়ে পদত্যাগ করার নোংড়া প্রথা সভ্য-সমর্থকরা আর মেনে নেবেন না।

Advertisement

প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতিরা এখন ‘মোহনবাগান’ নাম শুনলেই এড়িয়ে যাচ্ছেন। আর যাবে না-ই বা কেন? প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে হেনস্থা, সারদা-কেলেঙ্কারি কিছুই তো বাদ নেই মোহনবাগানে। এ বার আবার সামনে নির্বাচন। যত রকম বিকৃত শক্তি আছে, সব দিয়ে ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, এই মুহূর্তে ক্লাবের আশি শতাংশ কার্যকরী কমিটির সদস্য পাড়ার ক্লাবে সদস্য হওয়ার যোগ্য নয়। অঞ্জন নিজের পদের প্রভাব খাটিয়ে সবাইকে সদস্য করেছে। মঙ্গলবার শুনলাম ক্লাবের বাইরে একটা পোস্টার মারা হয়েছে। ‘মোহনবাগান ক্লাবের স্বার্থে দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বসুকে নৌকার হাল ধরতে হবে।’ এই সব পোস্টার নিজেদের লোকদের দিয়েই মেরেছে। যারা ক্লাবে ঢোকার সময় হাত ধরে ধরে অঞ্জন-টুটু-দেবাশিসকে নিয়ে যায় ভিতরে।

তবে আর নয়। এই সব স্বার্থান্বেষী মানুষের বিদায়ঘণ্টা খুব কাছেই দেখা যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement