অনুষ্কা-সাক্ষীদের আটকাতে চলেছে বিসিসিআই।
বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে সেঞ্চুরি ছোঁওয়ার পর অনুষ্কার উদ্দেশে কোহলির উড়ন্ত চুম্বন।
ধোনি ম্যাচ জেতানোর পর গ্যালারিতে সাক্ষীর উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠা।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন বিপক্ষের সেরা ব্যাটসম্যানের স্টাম্প উড়িয়ে দিতেই উত্তেজনায় হাততালি দিয়ে প্রীতি নারায়ণনের দাঁড়িয়ে পড়া।
বিশ্বকাপে এমন দৃশ্য দেখা যাবে?
সম্ভবত না।
ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁদের স্ত্রী-বান্ধবীদের নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ারই পক্ষে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ফলে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’-তে হয়তো এক সঙ্গে থাকা হবে না বিরাট-অনুষ্কার।
বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী, তাঁদের স্ত্রী বা বান্ধবীরা অস্ট্রেলিয়া গেলেও ক্রিকেটারদের সঙ্গে একই হোটেলে থাকতে পারবেন না। নিজেদের যাবতীয় ব্যবস্থা তাঁদের নিজেদেরই করতে হবে। তবে সাধারণত দেখা যায়, বোর্ড অনুমতি না দিলে স্ত্রী বা বান্ধবীরা নিজে থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে বিদেশ সফরে যান না। ফলে বিশ্বকাপে স্ত্রী-ব্রিগেডের থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
ধোনি-পত্নী সাক্ষী এই সম্ভাবনার আঁচ পেয়ে সম্প্রতি টুইটারে লিখেছেন, “মাহির সঙ্গে দেখা হতে আরও ৭১ দিন বাকি।” অর্থাৎ বিশ্বকাপে ভারতের অভিযান শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ হয়ে গেলেও ভারতীয় ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়াতেই থেকে যাবেন।
অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে কোহলির সঙ্গে তাঁর তারকা বান্ধবী অনুষ্কার থাকা নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। কোহলিদের টিম হোটেলেই কী করে ছিলেন অনুষ্কা, এই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার আগে ইংল্যান্ড সফরে দু’জনের একসঙ্গে থাকা নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন খোদ ভারতীয় দলের ম্যানেজার সুনীল দেব। তাঁর রিপোর্টে নাকি লেখা ছিল, ‘ভারতীয় সমাজে যা অপসংস্কৃতি বলে গণ্য করা হয়, তা দলের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া মানে অপসংস্কৃতিকেই প্রশ্রয় দেওয়া।’
বিশ্বকাপ শুরু হতে আর এক মাসও বাকি নেই। তাই যাতে এই নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি না হয় এবং ক্রিকেটাররা যাতে পুরোপুরি ভাবে ক্রিকেটে মন দিতে পারেন, সে জন্যই দল থেকে নারী-বর্জনের এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। যার গাইডলাইন নাকি প্রত্যেক ক্রিকেটারের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অস্ট্রেলিয়ায় ফোন করে এ দিন জানা গেল। তবে তাতে নাকি স্পষ্ট লেখা নেই যে সিরিজ চলাকালীন কেউ কারও স্ত্রী বা বান্ধবীকে সঙ্গে রাখতে পারবেন না। আপাতত লেখা, স্ত্রী বা বান্ধবীকে সঙ্গে রাখতে আগে থেকে বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু এখন কেউ অনুমতি চাইলেও বোর্ড তা দেবে না বলে ঠিক হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে হয়তো পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হবে, স্ত্রী-বান্ধবীদের থেকে দূরে থাকতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের।
আপাতত অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের যা পারফরম্যান্স, তার ভিত্তিতে স্ত্রী-বান্ধবীদের বিশ্বকাপের সময় সঙ্গে রাখার অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। বোর্ড মহলে খোজ করে জানা গেল, পারফরম্যান্সের অসাধারণ উন্নতি হলে তবে সিদ্ধান্ত বদলের কথা ভাবা হলেও হতে পারে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা আপাতত খুবই কম।
বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেলকে ফোন করা হলে তিনি এ দিন বলেন, “গত বিশ্বকাপেও স্ত্রী-বান্ধবীদের না রাখার এই নিয়ম ছিল। এ বারের বিশ্বকাপেও থাকবে বোধহয়।” কিন্তু এমন কোনও ঘোষণা তো করেনি বোর্ড। বোর্ড সচিবের মন্তব্য, “ঘটা করে ঘোষণা করার কী আছে? এটা ক্রিকেটারদের নিজেদের ব্যাপার। তাদেরই জানিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বকাপের আগেও হয়তো তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।”