ফার্নান্দিনহো। আরও সুযোগের অপেক্ষায়।
বারো বছর আগেও ছবিটা মোটামুটি একই রকম ছিল। সমস্যায় পড়া মিডফিল্ডে পরিবর্ত হিসেবে কাকে নামাবেন, তা নিয়ে দোটানায় পড়ে গিয়েছিলেন লুই ফিলিপ স্কোলারি। শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে যাঁকে বেছে নেন, সেই ক্লেবারসন একেবারে কোচের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিয়ে থেমেছিলেন।
বারো বছর পর পরিস্থিতিটা প্রায় সে রকমই। মিডফিল্ডে অফ ফর্মে থাকা পওলিনহো, না টগবগে ফার্নান্দিনহো? কাকে খেলাবেন তা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেননি স্কোলারি। কিন্তু ২০০২-এর অন্যতম নায়ক ক্লেবারসন তাঁর পছন্দের কথা জানিয়ে দিচ্ছেন—“ফার্নান্দিনহোকে নামাও।” আর যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা সেই ফার্নান্দিনহোর বক্তব্য, “ক্লেবারসন যেমন খেলেছিল সে বার, আমিও সেটা করতে চাই।”
চিলি ম্যাচে লুই গুস্তাভোর সঙ্গী হবেন কে? ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে ব্রাজিল ফুটবল মহলে। দুই দাবিদারের মধ্যে এক জন পওলিনহো। যিনি কনফেডারেশনস কাপ থেকে স্কোলারির দলে নিয়মিত জায়গা পাচ্ছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে তাঁর ফর্ম নিয়ে অনেক কাটাছেঁড়া হচ্ছে। দুই, ফার্নান্দিনহো। যিনি ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসেবে সুযোগ পেয়ে দুরন্ত পারফর্ম করা ছাড়াও গোল উপহার দিয়েছেন। সেই ম্যাচের পরে প্রথম দলে সুযোগ পাওয়ার প্রসঙ্গে ফার্নান্দিনহো বলেন, “আশা করছি চিলি ম্যাচে প্রথম দলে থাকব।” সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “একটা গোল করা মানে এমন নয় যে প্রথম দলে সুযোগ পেয়ে গেলাম। কিন্তু কোচ যা বলেছিলেন তা করতে করেছি। যেমন বিপক্ষের আক্রমণ ভাঙা ও বল নিজেদের দখলে রাখতে সাহায্য করা।”
ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের বিধ্বংসী পারফরম্যান্সের অন্যতম কারণ ছিল ফার্নান্দিনহোর ওয়ার্ক রেট। এ ছাড়াও ব্রাজিল মাঝমাঠে তিনিই একমাত্র ফুটবলার যিনি গোলটা ভাল চেনেন। ঘরোয়া ফুটবলে ফার্নান্দিনহো দারুণ ফর্মে ছিলেন। এমনকী পাঁচ গোল করে ম্যানুয়েল পেলিগ্রিনির ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন করতে সাহায্য করেন ফার্নান্দিনহো।
প্রথম দুটো গ্রুপ ম্যাচের পরে এমনিতেই পওলিনহোকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্রয়ের জন্য দায়ী করা হয় পওলিনহোর ঝাঁঝহীন পারফরম্যান্সকে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী মেক্সিকোর বিরুদ্ধে মোট ১১ বার বল হারান পওলিনহো। তৈরি করতে পারেননি কোনও আক্রমণ। যদিও হঠাৎ করে পওলিনহোর এত খারাপ ফর্মের পিছনে টটেনহ্যামকেই দায়ী করছেন জিকো। ব্রাজিলের প্রাক্তন বিশ্বকাপারের মতে, ক্লাবে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়ায় পওলিনহোর ফর্ম পড়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি ক্যামেরুন ম্যাচের পরে স্কোলারিও সাংবাদিক সম্মেলনে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি যতই পওলিনহোকে ভালবাসুন না কেন, দলের স্বার্থে যে কাউকে তিনি বাইরে রাখতে তৈরি। “পওলিনহো খুবই ভাল ফুটবলার। ওর প্রতিভা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ফর্ম নেই বলে ও একটু খারাপ খেলছে। অন্য দিকে আবার ফার্নান্দিনহো খুব ভাল খেলেছে। ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে অনেক আক্রমণ গড়তে সাহায্য করেছে। জানি না চিলির বিরুদ্ধে কাকে নামাব। আগের ম্যাচগুলোর ভিডিও দেখতে হবে।”