ঘাস ওড়ানো ও তার পরিণামে বিজয় হাজারের সেমিফাইনাল থেকে বিদায়কে ঘিরে অর্ন্তদ্বন্দ্ব বেঁধে গেল বাংলা শিবিরে। শুধু তাই নয়, প্রশ্ন উঠে পড়ল ইডেন পিচ থেকে ঘাস ওড়ানোর সিদ্ধান্ত শুধু অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লর ছিল কি না?
পুরো ঘটনাটা কী?
শনিবার সিএবি আয়োজিত ‘ভিশন ২০২০’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা ক্রিকেটের দুই তারকা। একজন, অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল। অন্য জন, টিমের সহ-অধিনায়ক ও বাংলার এক নম্বর পেস বোলার অশোক দিন্দা। যেখানে সেমিফাইনালে বাংলার বিপর্যয়কে ঘিরে দিন্দা বলে দেন, “ঘাস ওড়ানোর সিদ্ধান্তটা কোচ-ক্যাপ্টেনের ছিল। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমাদের জানানো হয়েছে।” প্রকারান্তরে দিন্দা বুঝিয়ে দেন, সেমিফাইনালের আগে পিচ থেকে যে ঘাস ওড়ানো হবে, সেটা তিনি আগে জানতেন না। সাংবাদিকদের কেউ কেউ দিন্দাকে আরও জিজ্ঞেস করেন, কোনটা তাঁর পছন্দের উইকেট ছিল? তামিলনাড়ু ম্যাচের সবুজ পিচ? নাকি রেলের বিরুদ্ধে যে বাইশ গজে নামতে হল বাংলাকে? দিন্দা এ বার স্পষ্ট বলে দেন, “তামিলনাড়ু ম্যাচের উইকেট।”
যার পরপরই জল্পনা শুরু হয়ে যায় যে, অধিনায়ক বলছেন ঘাস ওড়ানোর সিদ্ধান্তটা টিম ম্যানেজমেন্টের ছিল। কিন্তু দিন্দা তো আবার উল্টো কথা বলে গেলেন! বঙ্গ অধিনায়ককে এ বার ধরা হয়। তিনি বলে দেন, “দিন্দার মন্তব্য প্রসঙ্গে আমি কোনও পাল্টা মন্তব্য করব না। আমি কাউকে কোনও কৈফিয়তও দেব না। মেনে নিচ্ছি, সিদ্ধান্ত আমরাই ছিল। কিন্তু সেটা চেয়েছিলাম, ম্যাচটা দু’টো টিমের ক্ষেত্রেই সমান যাতে হয় বলে। চাইনি, টস জিতলেই কেউ ম্যাচটাও পকেটে নিয়ে চলে যাক।” তার পরপরই লক্ষ্মীর সেংযাজন, “যাদের দম ছিল তারা জিতেছে। আমাদের ছিল না, তাই হেরেছি।”
কিন্তু পিচ-কাণ্ডের পূর্ণ দায় বঙ্গ অধিনায়ককে পুরোপুরি নিজের কাঁধে নিয়ে নিতে দেখে বাংলা টিম ম্যানেজমেন্টেরই কেউ কেউ অবাক হয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বলেও দিচ্ছেন, ঘাস ওড়ানোর অর্ধেক দায় লক্ষ্মীর হতে পারে কিন্তু পুরোটা নয়। বরং শোনা গেল, ঘাস ওড়ানোর প্রকৃত ইচ্ছে নাকি ছিল টিমের এক সিনিয়র ব্যাটসম্যানের। অধিনায়কের নয়। বলা হচ্ছে, ইডেন উইকেটে অত ঘাস দেখে সংশ্লিষ্ট ওই ব্যাটসম্যানই নাকি অধিনায়ককে গিয়ে বলেছিলেন যে, এত ঘাস থাকলে ব্যাটসম্যানরাই অসুবিধেয় পড়ে যাবে। টিমের ব্যাটিং এমনই পারছে না, আরও সমস্যা হয়ে যাবে। যা শুনে নাকি দোটানায় পড়ে যান লক্ষ্মী। কোচ অশোক মলহোত্র-র সঙ্গে কথাবার্তা বলে তার পর পিচ-পরিবর্তন করা হয়।
যদিও বিশ্রী হারের পিছনে পিচের ব্যাপারস্যাপার পুরোপুরি ব্যবহার করা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, ঘাস ওড়ানোর পরেও পিচকে ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারত ব্যাটসম্যানরা। অশোক দিন্দা তো পরিষ্কার বলে দিলেন, “আমাদের ব্যাটিংয়ের চাপ নেওয়ার কোনও ক্ষমতাই নেই।”
রবিবার বিজয় হাজারে ফাইনাল
কর্নাটক : রেলওয়েজ, ইডেন, সকাল ৮-৪৫