শুক্রবারের ম্যাচটা দু’টো টিমের কাছে পুরোপুরি মরণ-বাঁচন যুদ্ধ। ভারতের ভাগ্য ভাল বলতে হবে যে, ওরা এখনও ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এটাকে আবার বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সাল হিসেবেও দেখা যেতে পারে। বিশ্বকাপের যা ফর্ম্যাট এ বার, তাতে বেশির ভাগ টিমের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ হবে শেষ আটের ম্যাচগুলো। যা সব টিমের কাছেই তখন নক আউট পাঞ্চ দাঁড়াবে। গ্রুপ পর্বে ফর্ম্যাটটা এমনই যে, নক আউটে ওঠার জন্য শক্তিশালী টিমগুলোকে স্রেফ দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারালেই চলবে। পুরোটাই তাই এখন নার্ভ ঠিক রাখা, নির্দিষ্ট সেই দিনে নিজেদের সেরা টিম প্রমাণ করা। আমার মনে হয়, সেটাই কাপ-ভাগ্য ঠিক করে দেবে।
সিরিজে দু’বার ইংল্যান্ডকে খেলছে ভারত। ইতিমধ্যে যার একটা ব্রিসেবেন হয়ে গিয়েছে। শুক্রবারেরটা পারথে। প্রসঙ্গটা তুললাম কারণ, ব্রিসবেন আর পারথই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে দ্রুততম দু’টো সারফেস। যেখানে সাফল্য পেতে হলে কম্বিনেশনটা ঠিকঠাক হওয়া দরকার। আর ওয়াকাতে ব্রিসবেনের চেয়েও বেশি গতি আর ক্যারি থাকবে। ভারতের তাই ব্রিসেবন ম্যাচকে পুরোপুরি মাথা থেকে বার করে দিতে একদম নতুন ভাবে শুরু করা উচিত। গাব্বার পিচে ভারতকে উড়িয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। ওরা আবারও ভাববে যে, পারথের পিচ যত না ভারতের, তার চেয়ে অনেক বেশি তাদের ক্রিকেটীয় ধরণের সঙ্গে মানাবে বেশি।
চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্স একটা ব্যাপার বোঝাচ্ছে। বোঝাচ্ছে, গত গ্রীষ্মের ইংল্যান্ডের চেয়ে এই ইংল্যান্ড অনেক উন্নত। তখন ওদের টিমটকে দেখে মনে হত ধন্ধে ভুগছে। বুঝতে পারছে না কখন আগ্রাসনের রাস্তায় হাঁটবে আর কখন ডিফেন্সের। যে তফাতটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম আর খুব কম সময়ই ইংল্যান্ড সেটা ধরতে পেরেছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে নানা রকম সমালোচনা আর নির্বাচকদের কিছু কঠোর সিদ্ধান্তের পর টিমটা অনেক বেশি লক্ষ্য নির্দিষ্ট ক্রিকেট খেলছে। পারথের হার্ড পিচে ওদের শক্তিশালী সিম আক্রমণ আবারও বোলিং করাটা উপভোগ করবে, চেষ্টা করবে ভারতকে ব্যাকফুটে ঠেলার।
উল্টো দিকে ভারতকে আবার কয়েকটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভাবতে হবে, শিখর ধবনকে ওপেনিংয়ে টানবে? নাকি নতুন কাউকে আনবে? রোহিত শর্মা চোট পেয়ে যাওয়ায় ভারত ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে হাত দিতে পারছে না। কিন্তু শিখরের খারাপ ফর্মও টিমের কাছে একটা বিশাল চিন্তা। এই মুহূর্তে শিখরকে দেখে মনে হচ্ছে, ফর্মের চেয়ে টেকনিক বেশি ভোগাচ্ছে। যার উত্তরটা বার করতে হবে শিখরকেই। পারথের পিচে ভারতীয়দের শট বাছাইটাও অন্য ভাবে করতে হবে। গাব্বার বাউন্সের সামনে দেখা গিয়েছিল বল অনেক সময়ই ব্যাটের কানায় লেগে চলে যাচ্ছে। ভারতীয়দের যার সঙ্গে খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। টিম কম্পোজিশনের ক্ষেত্রে বলব, পারথের পিচ পেসারদের পিচ। টিমে তিন ফাস্ট বোলারের সঙ্গে স্টুয়ার্ট বিনিকে রাখতে হবে। বিশ্বকাপের আগে রবীন্দ্র জাডেজা কী অবস্থায় আছে, ম্যাচে সেটাও দেখে নেওয়া যাবে। আর ভারত ফাইনালে উঠবে কি না, সেটা নির্ভর করবে পারথে ভারত কেমন ব্যাট করল, তার উপর। তবে টিম ম্যানেজেমন্টে আমি থাকলে, শামি আর উমেশ যাদবকে বিশ্রাম দিতাম। তা সে ম্যাচের গুরুত্ব যতই হোক না কেন।