বিনাযুদ্ধে আইসিসি-র সর্বোচ্চ আসনে সেই শ্রীনিবাসন

ক্রিকেট বিশ্বের সিংহাসনে বসেই পড়লেন আদালতের নির্দেশে ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানো নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। মেলবোর্নে বার্ষিক সম্মেলনে নিজেদের গঠনতন্ত্রে বৈপ্লবিক সংশোধন এনে চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে এনে শ্রীনিকে সেই পদে বসাল আইসিসি। চেয়ারম্যানের হাতেই তুলে দেওয়া হল সর্বোচ্চ ক্ষমতা। বৃহস্পতিবার ৫২ সদস্য দেশের কাউন্সিল প্রতিনিধিদের সম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০৩:৩৯
Share:

মেলবোর্নে ডেভ রিচার্ডসনের সঙ্গে আইসিসি-র নতুন চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি

ক্রিকেট বিশ্বের সিংহাসনে বসেই পড়লেন আদালতের নির্দেশে ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানো নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।

Advertisement

মেলবোর্নে বার্ষিক সম্মেলনে নিজেদের গঠনতন্ত্রে বৈপ্লবিক সংশোধন এনে চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে এনে শ্রীনিকে সেই পদে বসাল আইসিসি। চেয়ারম্যানের হাতেই তুলে দেওয়া হল সর্বোচ্চ ক্ষমতা। বৃহস্পতিবার ৫২ সদস্য দেশের কাউন্সিল প্রতিনিধিদের সম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ল। তবে আইপিএলের স্পট ফিক্সিং বিতর্কে জড়িয়ে পড়া শ্রীনিবাসনকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ আসনে বসানোর প্রশ্নে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। এমনকী, যে দুই দেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এখন থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা ভোগ করতে চলেছে ভারত, সেই ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমও এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব।

শ্রীনিবাসন অবশ্য বরাবরের মতোই এ দিনও সাফাই গাইলেন, “আমি নির্দোষ এবং নিজের সততা নিয়ে আমার মনে কোনও সংশয়ও নেই।”

Advertisement

সুপ্রিম কোর্ট যাঁকে আইপিএল স্পট ফিক্সিং মামলার তদন্ত চলাকালীন বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে, সেই শ্রীনিবাসন গত দু’দিন ধরে আইসিসি-র বিভিন্ন সভায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডপ্রধান ওয়ালি এডওয়ার্ডস ও ইংল্যান্ডের জাইলস ক্লার্কের সঙ্গে অন্যান্য সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিদের বোঝান, বিশ্ব ক্রিকেটের প্রশাসনিক পরিকাঠামোয় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ফলে তাঁরা কী সুফল ভোগ করতে চলেছেন।

এ দিকে, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেই সুপ্রিম কোর্টে ফের আবেদন জানাতে চলেছেন বিহার ক্রিকেট সংস্থার সচিব আদিত্য বর্মা। এ দিন তিনি পটনা থেকে ফোনে বললেন, “শ্রীনিবাসন যে ভাবে দিনের পর দিন আদালত অবমাননা করে চলেছে, সেই ঘটনাগুলোই কোর্টের সামনে ফের তুলে ধরব। তার পর বিচারপতিরা যা বিবেচনা করার করবেন।”

এই বৈপ্লবিক সংশোধনের পর ক্রিকেট বিশ্বে এখন ‘বিগ থ্রি’ বলে পরিচিত ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড এই তিন দেশ যেমন ক্রিকেট বিশ্বকে শাসন করবে, তেমনই আইসিসি-র মোট আয়ের ৬২ শতাংশ এই তিন দেশই পাবে। ক্রিকেট প্রশাসনের এই নতুন ব্যবস্থায় প্রবল আপত্তি অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমের। প্রখ্যাত ক্রিকেট লিখিয়ে শিল্ড বেরি সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে লিখেছেন, “এই ব্যবস্থার ফলে ভবিষ্যতে ধনী ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ আরও ধনী হবে। আর গরিবরা আরও গরিব।” তাঁর বক্তব্য, “শ্রীনিবাসনের মতো এক ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিই কিনা ক্রিকেটের দুর্নীতিদমন, নীতি ও স্বচ্ছতা বজায়ের দিকটা দেখবেন! ক্রিকেটে এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হয়নি।” এই সংবাদপত্রেরই শিরোনাম “ক্রিকেট বিশ্বাসযোগ্যতার উইকেটটা হারাল”। ফেসবুক, টুইটারেও ঝড় ওঠে। বেশির ভাগ পোস্টই ব্যঙ্গাত্মক। এক টুইটে মন্তব্য করা হয়, “এ বার না সিএসকে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়ে যায়।” আর এক টুইট, “আইসিসি এখন ইন্ডিয়া সিমেন্ট কাউন্সিল।” ফেসবুকে একটি পোস্ট, “ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে শ্রীনিবাসনের চেয়ে বড় ‘খেলোয়াড়’ জন্মায়নি।”

আগের দু’দিন একাধিক বৈঠকে সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিদের বুঝিয়ে-সুঝিয়েই এ দিন কাউন্সিলের সভায় এসেছিলেন শ্রীনি। শুধু শিলমোহর পড়াটাই বাকি ছিল। মেলবোর্নে উপস্থিত এক ক্রিকেট ওয়েবসাইট প্রতিনিধি জানান, সভায় উপস্থিত এক সদস্যকে নাকি বেরিয়ে এসে বলতে শোনা যায়, “আমরা সারাক্ষণ সেজেগুজে বসেই ছিলাম আর যেখানে দরকার পড়েছে, শুধু ‘হ্যাঁ’ বলেছি আর হাত তুলেছি।”

এর আগে দুই ভারতীয় আইসিসি-র সর্বোচ্চ পদে বসেছেন, ১৯৯৭ থেকে ২০০০ জগমোহন ডালমিয়া ও ২০১০ থেকে ২০১২ শরদ পওয়ার। দু’জনের কেউই এ দিন এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেননি। ডালমিয়া বলেন, “আজই কিছু বলব না। সব ভাল করে জেনে নিয়ে যথা সময়ে বলব।” শ্রীনিবাসনের পাশাপাশি এ দিন আইসিসি-র প্রেসিডেন্ট পদে এলেন বাংলাদেশ বোর্ডের প্রধান মুস্তাফা কামাল।

ভাল ব্যাটিং দিয়ে সফর শুরু পূজারাদের

নিজস্ব প্রতিবেদন

লেস্টারে গৌতম গম্ভীর। ছবি: এপি

সিরিজ শুরুর আগে বিপক্ষকে চাপে ফেলার জন্য মনস্তাত্বিক যুদ্ধ শুরু না করে উল্টোপথে হাঁটলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শ্রীলঙ্কার কাছে সিরিজ হেরে তোপের মুখে পড়া ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার কুকের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। বাগযুদ্ধ নয়, মাঠের যুদ্ধই যে তাঁদের কাছে আসল, তার ইঙ্গিত দিয়ে প্রথম দিন মাঠে নেমে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ভাল ফর্মে।

দেড় বছর আগে কুকের ইংল্যান্ড ভারতে এসে টেস্ট সিরিজ জেতার পর যেমন ধোনির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, তেমনই অবস্থা এ বার কুকের। তাই লিস্টারে সফরের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে নামার আগে ধোনি যখন বললেন, “মিডিয়া এ রকমই। দেশে, বিদেশে সর্বত্র। দলের খেলোয়াড়দের পাশে থাকাটা খুব জরুরি ব্যাপার। সে ক্যাপ্টেনই হোক বা ব্যাটসম্যান বা বোলার। খারাপ সময় সবারই আসে। তখন সবাই ভাল সময়ের কথা ভুলে যায়। এ রকম সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোটাই বড় ব্যাপার।” এই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার প্রায় দু’সপ্তাহ আগে গ্রেস রোডে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে অবশ্য ভালই প্র্যাকটিস সেরে নিচ্ছেন ভারতীয়রা। লিস্টারশায়ারের বিরুদ্ধে দুই ওপেনার শিখর ধবন ও গৌতম গম্ভীর যথাক্রমে ৬০ ও ৫৪ করে অবসর নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। পূজারাও ৫৭ রান করে একই রাস্তায়। হাঁটেন অন্যদের প্র্যাকটিসের সুযোগ দিতে। বিরাট কোহলি ২৯ রানে বোল্ড হয়ে যান। রাহানে ৪৭ ও রোহিত ৪৩ করে যখন দিনের শেষে অপরাজিত থাকেন, তখন ভারত ৯০ ওভারে ৩৩৩-৪-এ। ইংল্যান্ডের এই হাল সত্ত্বেও তাদের হাল্কাভাবে নিচ্ছেন না ধোনি। বলেন, “ওরা তো ওদের ঘরের মাঠের পরিবেশ আমাদের চেয়ে ভাল জানে। ”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement