দিলীপ বেঙ্গসরকর, ভরত অরুণদের সঙ্গে ওয়াংখেড়ে পিচ দেখছেন ধোনি-রোহিত শর্মা। শনিবার। ছবি: পিটিআই
চেন্নাইয়ে দারুণ একটা টস জিতেছিল ভারত। আর ওরা ২৯৯ করে ফেলার পর দক্ষিণ আফ্রিকাকেই বারবার পেছন থেকে এগিয়ে আসার কাজটা করতে হয়েছে। এই সিরিজে পরে ব্যাটিং করাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। চিপকেও সেটাই দেখলাম। এবি ডে’ভিলিয়ার্সের দুর্দান্ত ইনিংসটা বাদ দিলে চেন্নাইয়ের ওই পিচে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিংয়ের বাকি সদস্যরা সে ভাবে রানই তুলতে পারেনি।
যাই হোক, পাঁচ ম্যাচের সিরিজটা চেন্নাইয়ে ২-২ হয়ে যাওয়ার পর আজ, রবিবার মুম্বইয়ের ম্যাচটা সিরিজ নির্ণায়ক এবং অসাধারণ একটা যুদ্ধ হতে চলেছে।
ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে প্রচুর স্পিন থাকবে। তাই রবিবারও টস খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। অবশ্য ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকা, দুটো দলের পেসাররাও ওয়াংখেড়েতে বল করাটা উপভোগ করবে। কারণ ওখানে পিচ বেশ শুকনো থাকলেও বল ভাল স্পিড আর উচ্চতায় আসবে বলে মনে হয়।
চেন্নাইয়ে বিরাট কোহলি আরও এক বার নিজের জাত চিনিয়ে দিল। সবাইকে আবার বুঝিয়ে দিল, ও রকম পরিবেশে কেন ওর তিন নম্বরে ব্যাট করা উচিত। ওই জায়গায় বিরাট সত্যিই একজন ম্যাচ উইনার। অজিঙ্ক রাহানে আর সুরেশ রায়নার যোগ্য সঙ্গতে বিরাট শুধু টিমের ইনিংস গড়ার কাজটাই করেনি। পাশাপাশি নিজে বড় সেঞ্চুরিও করেছে। আর ও যখন সেট হয়ে যায় তখন ও নিশ্চিত করে যে শেষ দশ ওভারে ক্রিজে একজন ব্যাটসম্যান থাকবে। পরের দিকে রান তুলতে যেটা খুব জরুরি। এই জন্যেই ভারত তিনশোর টার্গেট সেট করতে পেরেছিল। যে রানটা ডে’ভিলিয়ার্সের টিমের পক্ষে তাড়া করা সব সময়ই কঠিন ছিল।
অন্য দিকে রায়নার ইনিংস নিশ্চয়ই অধিনায়ককে সন্তুষ্ট করেছে। লোয়ার অর্ডারে ফিনিশারের যে অভাব নিয়ে ধোনি চিন্তা করছিল, সিরিজের শেষ ম্যাচে সেটা আর থাকার কথা নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকানরা খুব তাড়াতাড়ি উইকেট হারাচ্ছিল। ওরা তো জানত যে, মাঝের ওভারগুলোয় স্পিনারদের সামলানো কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে। সেটা মাথায় রেখে আমলা বা ডি’ককদের বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল। দুমিনি না থাকায় ওদের লোয়ার অর্ডার কিছুটা ভঙ্গুর দেখাচ্ছিল। ওয়ান ডে ক্রিকেটে সাত নম্বর জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। টার্নিং পিচে ডে’ভিলিয়ার্স অসাধারণ খেলল। ওর ফুটওয়ার্ক এত দ্রুত যে উইকেটের দু’পাশেই ও শট খেলতে পারে।
সিরিজে দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছে ভারত। কিন্তু ওরা জানে শেষ ম্যাচটা যে কোনও দিকে যেতে পারে। রায়না চেন্নাইয়ে যা খেলে দিল, তার পর টিম কম্বিনেশন নিয়ে ওদের আর কোনও মাথাব্যথা থাকার কথা নয়। মনে হয় ধোনি অপরিবর্তিত টিমই নামাবে। অন্য দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার দুটো জিনিস— মর্নি মর্কেলের ফিট হয়ে ওঠা আর সাত নম্বরে ভারসাম্য। দুমিনির জায়গায় টিমে এসেছে ডিন এলগার। মরণবাঁচন ম্যাচে কি ওকে দিয়ে ওপেন করিয়ে আমলাকে তিনে নামানোর ঝুঁকি নেবে ওরা? এলগার বাঁ-হাতি স্পিনটাও করে। মুম্বই পিচে ও সাহায্য পেতে পারে।
এ বার প্রশ্ন হল, ফেভারিট কারা? আমার কাছে, কেউই নয়। বা হয়তো যে টিম টস জিতবে। আমাদের সবার মনে রাখা উচিত, শেষ পনেরো বছরে দেশের মাঠে ভারত খুব বেশি ওয়ান ডে সিরিজ হারেনি। তাই যে উইকেটে ওদের পেসাররা বল করা উপভোগ করবে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অসাধারণ ভাল খেলতে হবে।