কেন এমন করল যুবরাজ সিংহ? না, এর কোনও ব্যাখ্যা নেই আমার কাছে।
রবিবার মিরপুরে যুবরাজের ওই স্লো ব্যাটিংই যে ভারতকে জয় থেকে অনেকটা দূরে সরিয়ে দিল, এটা বলাই যায়। যে সময়টা ভারত ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছিল, ঠিক সেই সময়েই যুবরাজের ওই ইনিংস! ২১ বলে ১১। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একে অনেকে ‘ক্রাইম’ বলতে পারেন। সব চেয়ে বড় কথা এমন একটা পরিস্থিতিতে যুবি এই ব্যাটিংটা করল, যাতে ওর এই ‘অপরাধ’-এর মাত্রাটা বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গেল।
আমরা ক্রিকেটের শুরুর দিন থেকে শিখে এসেছি, যে ব্যাটসম্যান ফর্মে রয়েছে, একটা সিঙ্গল নিয়ে তাকে ব্যাট করতে দাও। ১০.৩ ওভারে ৬৩-১ অবস্থায় রোহিত ফিরে যাওয়ার পর যখন যুবরাজকে পাঠাল ধোনি, তখন নিশ্চয়ই ওকে এই দায়িত্বটাই দেওয়া হয়েছিল। ক্রিকেটের সাধারণ বোধ থেকে এটাই মনে হচ্ছে। ওই সময়ে কোহলি যখন পঞ্চাশ বলে ৭০ করে ক্রিজে, ওর নিজের সঙ্গে সঙ্গে দলের ছন্দও ফিরে আসছে, তখন কোনও রকমে একটা সিঙ্গল নিয়ে বিরাটকে ব্যাট করার সুযোগ না দিয়ে যুবি যে দশটা ডট বল খেলে গেল, তাতেই কোহলির ছন্দটা নষ্ট হয়ে গেল। ভারতও আর এগোতে পারল না।
ওই রকম একটা সময়ে ‘অ্যাক্সেলারেটর’-এ যত পারো চাপ দাও এটাই শেষ কথা। সেটা একমাত্র বিরাটই করতে পারত। একজন ব্যাটসম্যানের ‘অফ ডে’ আসতেই পারে। ব্যাট করতে করতে সেটা সে বুঝতেও পারে। যখন যুবরাজ বুঝতে পারল যে, দিনটা ওর নয়, তখনই ওর বিরাটকে স্ট্রাইক দেওয়া উচিত ছিল। ম্যাচ দেখতে দেখতে নেওয়া নোট বলছে শেষ চার ওভারে কোহলি মাত্র আটটা বল খেলতে পেরেছে। যুবরাজের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কী করে এত বড় ভুল করল, বুঝতে পারছি না। ডাগ আউটে যেখানে ধোনি-রায়না বসে, সেখানে কেন খুচরো রানেও ঝুঁকি নিল না ও, বুঝলাম না। ভারতীয় দলে নিজের জায়গা ধরে রাখার জন্য এটাই ছিল যুবির শেষ সুযোগ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওই ৬০-এর ইনিংসটা ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে পারল না। ওর ফিল্ডিংও বেশ চোখে পড়ার মতো খারাপ হল টুর্নামেন্টে। সন্দীপ পাটিলদের নির্বাচক কমিটি ওকে আর সুযোগ দেবে কি না, এখন সেটাই প্রশ্ন। তেমন কোনও আশা দেখছি না। একটা ক্ষীণ আলো আইপিএল। তবে সেটাও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ফেরার পক্ষে কতটা উপযোগী প্ল্যাটফর্ম হবে, সন্দেহ আছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ভারত আর ক’টাই বা খেলে। আর সেখান থেকেও তো হারিয়ে যেতে বসল যুবরাজ।