যে দেশের মাঠে নামলেই গ্যালারি থেকে তাঁর নামে ভেসে আসত শুধু বিদ্রুপ ও কটূক্তি, সেই অস্ট্রেলিয়া এখন মুথাইয়া মুরলীধরনের শরণাপন্ন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের সিরিজের জন্য অস্ট্রেলিয়ার উপদেষ্টা হচ্ছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনার।
কয়েক দিন আগেই শ্রীলঙ্কায় নাথান লিয়ঁ ও আরও কয়েকজন উঠতি স্পিনারকে তালিম দেওয়া শুরু করেছেন মুরলী। অক্টোবরে আরব আমিরশাহিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে লিয়ঁকে ক্যারম বলের ওস্তাদ করে তোলাই লক্ষ্য তাঁর। তবে শুধু ওই সিরিজের জন্য শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনারকে উপদেষ্টা করে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া নিল বেশ অপ্রত্যাশিতভাবেই।
১৯৯৫-এ মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে তাঁর ওভারে আম্পায়ারদের পরপর নো বল ডাকার ঘটনার পর থেকে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ অম্লমধুর। তাঁকে ‘চাকার’ আখ্যা দিয়ে সারা দুনিয়ায় তা প্রচার করতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেনি অজি মিডিয়া। এমনকী অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ডও তাঁকে প্রতারক বলেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে তিনি বল করতে এলেই গ্যালারিতে চিৎকার শুরু হত ‘নো বল..নো বল’। এ সবে বিরক্ত মুরলী অস্ট্রেলিয়াকে একবার ‘নরক’ বলেছিলেন। সেই মুরলীকেই যে পাকিস্তানিদের জব্দ করার কাজে সাহায্যের জন্য ডাকবেন অজি ক্রিকেট কর্তারা, তা অপ্রত্যাশিতই।
অস্ট্রেলিয়া দলে শুধু স্পিনারদের সাহায্য করাই তাঁর কাজ হবে না। সইদ আজমল ও অন্যান্য পাক স্পিনারদের কী ভাবে সামলাতে হবে, তাঁর স্বল্পমেয়াদী ভূমিকায় অজি ব্যাটসম্যানদের সেই রাস্তাও বাতলে দেবেন আন্তর্জতিক ক্রিকেটে তেরোশরও বেশি উইকেট শিকারী এই অফ স্পিনার। নতুন ভূমিকা নিয়ে মুরলী বলেন, “আমিরশাহির পরিবেশে স্পিনাররা সাহায্য পেতে পারে। কীভাবে ওই পরিবেশকে কাজে লাগাতে হবে, সেটাই ওদের শেখানোর চেষ্টা করব। এর বেশি কিছু করতে পারব না। আর আজমল যেহেতু আমার মতো বোলিং করে, তাই নেটে অজি ব্যাটসম্যানদের আমি বোলিং করলে আজমলকে খেলতেও সুবিধা হবে ওদের।” অস্ট্রেলীয় কোচ ড্যারেন লেম্যানও মুরলীকে ডাকার এই সিদ্ধান্তে খুশি। বলেন, “মুরলীর মতো গ্রেটকে অস্ট্রেলিয়া দল যথেষ্ট উপকৃত হবে।”