নেইমার নির্ঘাত ভাবছিল পাড়ার কোনও ম্যাচে পেনাল্টি মারছে

ফিফার বিচারে ম্যান অব দ্য ম্যাচ জুলিও সিজার। যাঁকে নিয়ে লুই ফিলিপ স্কোলারির সবচেয়ে গর্বিত থাকার দিন! সমালোচকদের অগ্রাহ্য করে তিনি জুলিওকে টিমে রেখেছেন। অবিরত লেখালেখি হয়েছে, গ্রাহ্য করেননি। কিন্তু চিলি-পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে মনে হল কোচের ব্যক্তিগত ম্যান অব দ্য ম্যাচ নেইমার দ্য সিলভা!

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

বেলো হরাইজন্তে শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০৪:২৩
Share:

ছবি এএফপি

ফিফার বিচারে ম্যান অব দ্য ম্যাচ জুলিও সিজার। যাঁকে নিয়ে লুই ফিলিপ স্কোলারির সবচেয়ে গর্বিত থাকার দিন! সমালোচকদের অগ্রাহ্য করে তিনি জুলিওকে টিমে রেখেছেন। অবিরত লেখালেখি হয়েছে, গ্রাহ্য করেননি। কিন্তু চিলি-পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে মনে হল কোচের ব্যক্তিগত ম্যান অব দ্য ম্যাচ নেইমার দ্য সিলভা!

Advertisement

শুরুতে এত চুপচাপ ছিলেন স্কোলারি যে মনে হচ্ছিল জিতে উঠেও ব্রাজিলীয় জনতার মতো শকটা সহ্য হয়নি এখনও। কিন্তু নেইমারের পেনাল্টি-প্রশ্ন উঠতেই তিনি উত্তেজিত। “ছেলেটাকে কী প্রচন্ড মারল। সাত-আট মিনিট নাগাদ এমন লাথি মারে যে ওর থাই ফুলে ঢোল। আমি তো ভেবেছিলাম খেলতেই পারবে না। ওই অবস্থাতেও উঠে পুরো ম্যাচ লড়ল। তার চেয়েও অসহ্য একটা কার্ড দেখাল রেফারি,” গর্জে উঠলেন স্কোলারি! “ওটায় কার্ড হবে না!” জানালেন নেইমারের যা চোট কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁকে ফিট করাটা এখন ফিজিওর একটা পরীক্ষা হয়ে গেল!

এ বার এলেন নেইমারের পেনাল্টি-প্রসঙ্গে। বললেন, “নেইমার সতেরো বছর বয়স থেকেই বরফশীতল মাথার। ওর বয়স এখন বাইশ। কিন্তু আসলে যেন পঁয়ত্রিশ। এটা যে বিশ্বকাপের পেনাল্টি সে সব বোধহয় ও মাথাতেই আনেনি। ও ভাবছিল সান্তোসের মাঠে মারছি। বা পাড়ায় বন্ধুদের সঙ্গে বাগানে খেলছি। অনবদ্য এই ছেলেটা!”

Advertisement

জিজ্ঞেস করা হল এ ভাবে আপনারা খেললে তো ব্রাজিলবাসীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে যাবে? স্কোলারি রুক্ষ ভাবে বললেন, “সে আপনার মেডিক্যাল রিপোর্ট কী, সে আপনাকে খোঁজ রাখতে হবে। বিশ্বকাপ ম্যাচে টেনশন হবেই। এই তো উইলিয়ান এত ভাল পেনাল্টি মারে। বেচারা চাপে পারল না। সীমাহীন চাপ আমাদের দেশের মাঠে।” স্কোলারি বলেন, “শুরু থেকে এই চাপটা আমরা নিজেরা নিয়েছি। আমরাই বলেছি কাপ জিতব। এখন লোকে তো আমাদের কাছে বলবেই যে তোমরাই তো আশা দিয়েছিলে ভাই।”

ইংরেজ সাংবাদিক জিজ্ঞেস করছিলেন পেনাল্টির সময় আপনাদের মনের অবস্থা কী ছিল? স্বভাষীর অনুবাদে বোধহয় কোনও গণ্ডগোল হয়েছিল। রাগার প্রশ্ন নয় কিন্তু কোচ রেগে গেলেন, “সবাই ভেবেছেটা কী? আমরা ভদ্র বলে সবাই ব্রাজিলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে? চিলির অ্যাসিসট্যান্ট কোচ সারাক্ষণ গালাগাল দিচ্ছে। ফোর্থ রেফারিকে এসে মিনিটে মিনিটে অসন্তোষ জানিয়ে যাচ্ছে। অনেক সহ্য করেছি। আর নয়। ব্রাজিলও এ বার উগ্র হবে।”

সারমর্ম বোঝা গেল, ব্রাজিলীয় কোচ গোটা দেশের মতোই এখনও ঘোরে আছেন। সবাইকে বললেন, “প্লিজ সবাই ছুটি নিন আজ আর কাল। সোমবার দেখা হবে। যা গেল।”

ওটা হ্যান্ডবলই

সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

তুকতাকের বিশ্বকাপ

শুধু মাঠের এগারো জনই নন, ব্রাজিলকে জেতাতে নেমে পড়েছেন ফুটবলপ্রেমীরাও। প্রিয় দলের জন্য তাঁদের বিভিন্ন ‘অবদান’...

পয়া শার্ট, পকেটে পাথর

রবার্তো সান্তানা আর গুলেরমে ভিয়েরার মধ্যে তুকতাকের তফাত হচ্ছে, গুলেরমে বিশ্বাস রাখেন পয়া শার্টে। আর সান্তানার পকেটে থাকে তিনটে পাথর। যা তাঁর স্বপ্নে পাওয়া। এরপর থেকে ব্রাজিলের যে কোনও ম্যাচে স্টেডিয়ামে ওই তিনটি পাথর নিয়ে তিনি ঢোকেন। “শুধু ২০০৬ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ঢুকতে পারিনি। আর ব্রাজিল হেরে গেল ফ্রান্সের কাছে।” উল্টো দিকে গুলেরমে পয়া শার্ট গত বছর কনফেডারেশনস কাপ ফাইনাল থেকে চালাচ্ছেন।

প্রতিপক্ষ থাক ফ্রিজে

সৌজা দ্য সিলভা নিশ্চয়ই আলেক্সিস সাঞ্চেজ আর ভিদালের জন্য একই ব্যবস্থা করেছেন গত রাতে। তাঁর বহু দিনের কুসংস্কার, ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ টিম, তাদের নাম-ধাম সব একটা কাগজে লিখে ফ্রিজে ঢুকিয়ে দেওয়া। কেন? সিলভার সহাস্য উত্তর, “এতে বিপক্ষের যাবতীয় বিষ ঠান্ডা হয়ে যায়।”

ছবি উৎপল সরকার

৯০ মিনিট বাথরুমে

কী কুক্ষণে যে জোয়াও রিবেইরো ব্রাজিল গোল দেওয়ার সময় বাথরুমে গিয়েছিলেন। ফ্লাশ টানার শব্দে তাঁর বাবা টের পান ছেলে বাথরুমে, আর ব্রাজিল গোল দিয়েছে। এরপর থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশ: ব্রাজিল ম্যাচ থাকলে ছেলে বাথরুমেই থাকবে। পুরো ৯০ মিনিট।

পেটে খিদে, মুখে হাসি

রিও দে জেনেইরোর হোসে রিবেইরোর বিশ্বাস করেন ব্রাজিল ম্যাচে তিনি অভুক্ত থাকলে টিম তো জিতবেই। কিন্তু তার চেয়েও বড় ব্যাপার নিজের এনার্জি সেক্ষেত্রে প্লেয়ারদের মধ্যে সঞ্চারিত হবে। তেসরা জুন থেকে ব্রাজিলের ম্যাচে এটা তিনি করছেন আর বলছেন, “ পেট খালি থাকুক, শুধু আমার এনার্জিটা টিমের কাছে গেলেই হল।”

রং চটে ধুসর

সাইমন জনসন ব্রাজিলের ছেলেই নন। জন্মসূত্রে ইংল্যান্ডের। কিন্তু সালভাদরে এসে থাকতে থাকতে ব্রাজিল ফ্যান যে কবে হয়ে গিয়েছেন নিজেও জানেন না। এবং নেইমারদের ম্যাচ থাকা মানে অবধারিত ওয়ার্ডরোব থেকে পুরনো একটা শর্টস বেরোবে। যা পরে তিনি স্টেডিয়ামে যাবেন, ব্রাজিলকে জেতাবেন। কাচতে-কাচতে যার রং এখন কালো থেকে ধুসর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement