মাঠে নেমে কিছু করার উপায় নেই। ডাগআউটে বসা অসহায় সচিনের ম্লান হাসি। ছবি: পিটিআই
গত বারের চ্যাম্পিয়নদের কি এ বার আইপিএলে অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্টের দশা? নইলে ২০১৩-র আইপিএলই শুধু নয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি জয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের আইপিএল সাতে প্রথম চারটে ম্যাচেই হারের ব্যাখ্যা কী! রোহিত শর্মার দলের হেড কোচের নাম জন রাইট। টিম ম্যানেজার অনিল কুম্বলে। ফিল্ডিং কোচ জন্টি রোডস, সহকারী কোচ রবিন সিংহ। আজই বিশেষ পরামর্শদাতা হিসেবে যোগ দিলেন রিকি পন্টিং। এবং সর্বোপরি টিম এমআই-এর ‘আইকন’-এর নাম সচিন তেন্ডুলকর।
নিট ফল?
চার ম্যাচে চার হার। তা-ও বড় বড় ব্যবধানে। কখনও সেটা ৪১ রান। দু’বার সাত উইকেটে। এ দিন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কাছে ছ’উইকেটে। হতাশ অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলছেন, “আমাদের কোনও কিছুই এখন ঠিক মতো হচ্ছে না!”
রোহিত দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি, ওয়ান ডে-তে ওপেন করলেও কোনও অজানা কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমের হয়ে চারে নামছিলেন। বলা হচ্ছিল, মুম্বইয়ের প্রথম তিন ম্যাচে ১২২-৭, ১১৫-৯, ১৪১-৭-এর মতো মামুলি টোট্যালের পিছনে রোহিতের পরের দিকে নামা অন্যতম কারণ। এ দিন টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে টিভির সামনে “আমরা একটা বড় স্কোর করতে চাই” বলেটলে ওপেন করতে নেমে রোহিত বাংলার মহম্মদ শামির বলে ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই অহেতুক ঝুঁকিপূর্ণ সিঙ্গলস চুরি করতে গিয়ে বোলারের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে গেলেন মাত্র ৪ করে। বাকি ১৮ ওভারের মধ্যে একমাত্র কায়রন পোলার্ডের (৩৩ নঃআঃ) ব্যাটিং বাদে সারাক্ষণ ঠুকঠুক করে গেল হাফ ডজন তারকা পরামর্শদাতার দল। ২০ ওভারে ১২৫-৬।
সাড়ে ছয়ের স্বস্তির আস্কিং রেটের সামনে দিল্লি দেখেশুনে খেলেও সাত বল বাকি থাকতে ছ’উইকেটে জিতল। মুরলী বিজয় (৪০) ম্যাচের সেরা, কিন্তু মনোজ তিওয়ারিকে বসিয়ে নামা ডেয়ারডেভিলদের বড় স্বস্তি বোধহয় কেভিন পিটারসেনের সাবলীল ব্যাটিং। কেপি এ বারের আইপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৮ বলে ২৬ নট আউট থাকলেনই শুধু নয়, একটা সময় চেনা মেজাজে পরপর তিন বলে নেন ১৪ রান। ২X৪, ১X৬। রোহিত প্রথম চার ওভারে চার জনকে (মালিঙ্গা-প্রজ্ঞান-জাহির-হরভজন) দিয়ে বল করিয়ে পাল্টা ধাক্কা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দিনটা কেপি-র। “আমি পুরোপুরি খুশি। এ রকম টিমগেম চালিয়ে যেতে চাই,” ম্যাচ শেষে বলার পর রাতে প্রিমিয়ার লিগে তাঁর প্রিয় চেলসির লিভারপুলের বিরুদ্ধে অসাধারণ জয়ে টুইট করলেন, ‘চে-ল-সি... চে-ল-সি!’
ধোনি-পত্নীর সঙ্গে চেন্নাই ম্যাচ দেখতে হাজির মাসাবা গুপ্ত। ছবি: পিটিআই
শারজা স্টেডিয়ামে এ দিন পরের ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস (৫ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট) পাঁচ উইকেটে সাইরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে পয়েন্ট টেবলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের সঙ্গে যুগ্ম শীর্ষে পৌঁছল। হিলফেনহস ও ইশান্ত শর্মার শেষ দু’ওভার থেকে ৩২ রান তুলে হায়দরাবাদ (১৪৫-৫) চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেওয়ার পর ডোয়েন স্মিথ (৬৬) ও ব্রেন্ডন ম্যাকালাম (৪০), দুই ওপেনারের দাপটে একটা সময় মনে হচ্ছিল চেন্নাই সহজেই জিতবে। কিন্তু ১১৪-১ থেকে ধোনির দল ডেথে আচমকা ১৩৮-৫ হয়ে পড়ায় লড়াইটা জমে ওঠে। শেষ ওভারে ছ’রান বাকি থাকতে সেই ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনির (১৩ নঃআঃ) বাউন্ডারিই তিন বল বাকি থাকতে জেতায় সিএসকে-কে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ২০ ওভারে ১২৫-৬, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ১৮.৫ ওভারে ১২৬-৪।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ২০ ওভারে ১৪৫-৫, চেন্নাই সুপার কিংস ১৯.৩ ওভারে ১৪৬-৫।