ইতিমধ্যেই আব্দুল কাদির তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বলে দিয়েছেন, আফ্রিদির সমালোচকদের এ বার মুখ বন্ধ করা উচিত। চলতি এশিয়া কাপে ভারত এবং তার পরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও দু’টো ‘বুম বুম’ ইনিংস খেলার পর এ বার স্বয়ং শাহিদ আফ্রিদি তাঁর সমালোচকদের একহাত নিলেন। মিরপুরে এ দিন সংবাদ সংস্থাকে আফ্রিদি বলেছেন, “যে মুহূর্তে বুঝব আমি পাকিস্তান দলের কাছে বোঝা স্বরূপ, তৎক্ষণাৎ ব্যাট-গ্লাভস-প্যাড আলমারিতে তুলে রেখে দল থেকে সরে দাঁড়াব। সমালোচকদের বলার অপেক্ষায় থাকব না। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত তাঁরা যেন দয়া করে আমার উল্টোপাল্টা সমালোচনা বন্ধ রাখেন।”
শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীলঙ্কা। যাদের কাছেই টুর্নামেন্টের একমাত্র হার আফ্রিদিদের উদ্বোধনী ম্যাচেই। কিন্তু সে দিনের আফ্রিদিরা আর ফাইনালের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগের আফ্রিদিদের মধ্যে অনেক তফাত। যেটা এ দিন আফ্রিদির কথাবার্তাতেও স্পষ্ট। “আমি কাউকে কিছু বলার সুযোগ দেব না। খারাপ ফর্ম যাচ্ছে বুঝলে নিজেই সরে যাব। কিন্তু তার আগে নিজের পারফরম্যান্সে আমার দেশকে কিছু দিয়ে যেতে চাই।” এবং সেটা শুধু তাঁর ব্যাটের দাপটেই দিতে হবে মানছেন না আফ্রিদি। বলছেন, “এমন কোনও ব্যাপার নেই যে আমাকে প্রতিদিন ব্যাটেই পারফরম্যান্স করতে হবে। প্রতি ম্যাচে দ্রুত বড় রান তুলতে হবে। ব্যাটের মতোই আমি নিজের লেগ স্পিন বোলিংয়ের দিকেও সমান ফোকাসড্। আমি কিন্তু বোলার হিসেবেও নিজেকে এমন ভাবে তৈরি রাখতে চাই যাতে টিমের প্রয়োজনে বল হাতেও পারফরম্যান্স করতে পারি।”
চৌত্রিশ বছর বয়সি আফ্রিদি তাঁর ধারাবাহিকতার অভাবের ক ারণে সমালোচকদের হাতে ইদানীং আক্রান্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু এশিয়া কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে দু’বলে দু’টো ওভার বাউন্ডারি মেরে পাকিস্তানকে জেতানো, তার পরের ম্যাচেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২৫ বলে ৫৯ রানের ঝড়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিরাটের ভারতকে ছিটকে দেওয়ার পর ছবিটাই পাল্টে গিয়েছে। দু’টো ইনিংসের মধ্যে সেরা বাছতে বললে আফ্রিদি বলেছেন, “অনেক কারণেই আমি এই দু’টো ইনিংসের মধ্যে কোনটা সেরা বাছব না। তবে দু’টো ইনিংসই আমার নিজের কেরিয়ার এবং পাকিস্তান দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ যে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।” সঙ্গে আফ্রিদির দাবি, তাঁর কোনও কোচের দরকার নেই। “ম্যায় আপনা কোচ বেহতর হু।ঁ আমি জানি আমাকে ক্রিকেটার হিসেবে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না।”
ছিয়াশিতে শারজায় চেতন শর্মার শেষ বলে মিয়াঁদাদের ছক্কায় পাকিস্তানের সেই রোমাঞ্চকর জয়ের পর ভারতের কাছে তারা পরপর অনেক ম্যাচ হেরেছিল। এ বার বাংলাদেশে অশ্বিনের শেষ ওভারে আফ্রিদির সেই ‘মিয়াদাদ’ হয়ে ওঠার পর পাকিস্তান আবার ভবিষ্যতে ভারতের বিরুদ্ধে খারাপ করবে না তো? এই প্রশ্নে আফ্রিদি হেসে প্রায় ছক্কা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার মতোই বললেন, “সেটা তো ভারতীয় দলের উপর নির্ভর করছে যে, আমার জোড়া ছক্কা ওদের মানসিকতায় কী রকম প্রভাব ফেলবে ভবিষ্যতে।”