ত্রেজেগুয়ের টোটকা পেয়ে আপ্লুত ডুডু

কুড়ি বছর বয়সেই জিনেদিন জিদানের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি! ছিলেন ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য! ২০০৬-এর বিশ্বকাপে রানার্স আপ টিমেও ছিলেন। ফ্রান্সের জার্সিতে করেছেন ৩৪ গোল। জুভেন্তাস-সহ ক্লাব ফুটবলে তাঁর গোলসংখ্যা তো চারশোর গণ্ডি টপকে গিয়েছে অনেক দিন। সেই হাই প্রোফাইল পারফর্মার ডেভিড ত্রেজেগুয়ের কাছ থেকে গোলের টিপস পেয়ে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন ডুডু ওমাগবেমি।

Advertisement

তানিয়া রায়

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০১
Share:

পুণে সিটির জোড়াফলা। ডুডু-ত্রেজেগুয়ে।

কুড়ি বছর বয়সেই জিনেদিন জিদানের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি!

Advertisement

ছিলেন ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য! ২০০৬-এর বিশ্বকাপে রানার্স আপ টিমেও ছিলেন।

ফ্রান্সের জার্সিতে করেছেন ৩৪ গোল। জুভেন্তাস-সহ ক্লাব ফুটবলে তাঁর গোলসংখ্যা তো চারশোর গণ্ডি টপকে গিয়েছে অনেক দিন।

Advertisement

সেই হাই প্রোফাইল পারফর্মার ডেভিড ত্রেজেগুয়ের কাছ থেকে গোলের টিপস পেয়ে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন ডুডু ওমাগবেমি। এতটাই যে তিনি বলেও দিলেন, “জীবনে প্রচুর গোল করেছি। ইউরোপিয়ান সার্কিটে খেলেছি। কেউ কখনও যা বলেনি তাই বলছে ত্রেজেগুয়ে। ‘গোল করার জন্য যদি পাঁচটা ভাল শট মারো, তা হলে মাথায় রাখবে অন্তত তিনটে গোল সেখান থেকে করতেই হবে।’ ত্রেজেগুয়ের এই টিপসটা অনুশীলনের সময় মাথায় রাখছি।”

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এফসি পুণে সিটির আইকন ফুটবলার হিসাবে যোগ দিয়েছেন ত্রেজেগুয়ে। স্ট্রাইকিং ফোর্সের ঝাঁঝ বাড়াতে ফরাসি স্ট্রাইকারের সঙ্গে নাইজিরিয়ান গোলমেশিন ডুডুকে জুড়ে দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। পুণে কর্তাদের ধারণা দু’জনের যুগলবন্দি সফল হলেই সাফল্য আসবে।

প্র্যাকটিসের সময় ত্রেজেগুয়ের খেলার স্টাইল, গোলের শট, অন্য ফুটবলারদের ড্রিবলিং করা— সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লক্ষ করছেন ডুডু। ফরাসি স্ট্রাইকারের থেকে যদি আরও কিছু শিখে নেওয়া যায়। যদি নিজেকে আরও ধারালো করা যায়। ত্রেজেগুয়ের সঙ্গে তাঁর সপ্তাহ খানেকের প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে ডুডু জানালেন, “ত্রেজেগুয়ে কিন্তু গোলটা দারুণ চেনে। এই বয়সেও বক্সের মধ্যে বল পেয়ে গেলে ওকে আটকানো মুশকিল। কঠিন কোণ থেকেও গোল করছে। ৩৬ বছর বয়সেও শটের কী জোর! গোলার মতো সব শট। প্রতিদিন শিখছি ওর থেকে। অসাধারণ অভিজ্ঞতা।”

নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচ শুরুর দশ দিন আগেই দিল্লিতে চলে এসেছেন ত্রেজেগুয়ে-ডুডুরা। ১৪ অক্টোবর তাঁদের প্রথম ম্যাচ দিল্লি ডায়নামোসের বিরুদ্ধে। রাজধানীর আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই পুণের হেড কোচ ফ্র্যাঙ্কো কলোম্বার এই সিদ্ধান্ত। সেখান থেকেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে আপ্লুত ডুডু লিখলেন, “ত্রেজেগুয়ে খুব শান্ত স্বভাবের। একটু কম কথা বলে। তবে মানুষ হিসেবে খুব ভাল। আমাদের সব রকম সাহায্য করছে। কিছু জানতে চাইলে খুব ভাল করে বুঝিয়ে দেয়। আমার একার সঙ্গে নয়, সবার সঙ্গেই ওর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে এই ক’দিনে। ভাল লাগছে ওর পাশে আমি খেলব ভেবে। এত কাছ থেকে দেখছি এ রকম একজন সফল বিশ্বকাপারকে, এটাই তো জীবনের বড় প্রাপ্তি।”

ত্রেজেগুয়ের মতো ফুটবলার নিজের দলে রয়েছেন। রয়েছেন আরও অনেক বিদেশি ফুটবলার। গ্রিসের বিশ্বকাপার কোস্তাস কাতসুরানিসও যোগ দিয়েছেন সদ্য। ব্রাজিল বিশ্বকাপে দলে খেলেছেন। শুধু পুণে সিটিতেই নয়, আইএসএলের আটটি দলেই তো বিশ্বকাপার, ইউরো জয়ী তারকা ফুটবলারদের ছড়াছড়ি। এঁদের মধ্যে পড়েও জাত চেনাতে চান ডুডু। সবাইকে ছাপিয়ে যাওয়াই তাঁর আসল চ্যালেঞ্জ। “ত্রেজেগুয়ের পাশে খেলাটা নিঃসন্দেহে বাড়তি প্রেরণা। তবে আমি চাই, নিজের সেরাটা দিয়ে ত্রেজেগুয়ের চোখে পড়তে। ওর পাস থেকে অনুশীলনেও গোল করছি। টুর্নামেন্ট খেলতে নেমে ও রকমই গোল করার স্বপ্ন দেখছি।” এর সঙ্গেই ডুডু যোগ করলেন, “ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদেরও তো একটা প্রত্যাশা রয়েছে আমার উপর। ওরা নিশ্চই চাইবে ত্রেজেগুয়ের সঙ্গে আমিও গোল করি। ”

প্রথম ম্যাচেই দেল পিয়েরোদের মুখোমুখি হবে পুণে। কতটা কঠিন প্রতিপক্ষ বলে মনে হচ্ছে দিল্লিকে? ডুডুর সাফ উত্তর, “কোন দল কতটা শক্তিশালী মাঠে না নামলে আগে থেকে বোঝা যাবে না। সব দলই তো নতুন। তবে এটুকু বলতে পারি, আমরা প্রস্তুত। ত্রেজেগুয়ের সঙ্গে আমার জুটিটা কিন্তু মনে হচ্ছে জমে যাবে। র‌্যান্টির সঙ্গে যেমন ইস্টবেঙ্গলে জমছে।” নিজের দলের সাফল্যের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডুডুর আশাবাদী মন্তব্য, “আমাদের টিম বেশ ভাল হয়েছে। কোচ মূলত আক্রমণাত্মক খেলাতেই পছন্দ করে। তবে প্রয়োজন মতো স্ট্র্যাটেজিও বদলান। প্র্যাকটিস ম্যাচেও আমাদের দল ভাল পারফরম্যান্স করেছে। আমিও গোল পেয়েছি। আশা করছি, আইএসএলেও নিজেদের জেতার অভ্যাসটা ধরে রাখতে পারব সবাই।”

আনেলকা, রবার্ট পিরেস, দেল পিয়েরো, ত্রেজেগুয়ে, মাতেরাজ্জি, লুই গার্সিয়া--- নামী তারকাদের ভিড়ে ভারতে খেলা বিদেশিরা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না। যাবতীয় হইচই হচ্ছে আইকন ফুটবলারদের ঘিরে। এই জায়গাটা বদলাতেই মরিয়া ডুডু। তাঁরাও যে কারও থেকে কম যান না, সেটা প্রমাণ করতে চান লাল-হলুদের নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার। “যদি আইএসএলে আমি, র‌্যান্টি বা ভারতে খেলা বাকি বিদেশিরা ভাল পারফরম্যান্স করতে না পারে, তবে ক্লাবগুলো কেন ভরসা করবে আমাদের উপর? এটাও যে আমাদের সম্মান রক্ষার মঞ্চ।”

তা হলে গোল করায় ত্রেজেগুয়েকেও কি ছাপিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ডুডু? প্রশ্ন দেখে কিছুক্ষণ সময় নেন। তারপর লেখেন, “দু’জনেই গোল করব। তবেই তো পুণে সফল হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement