চিমার পুলিশকে হারাতে মাঠে বোয়া

মাঠের ভিতরের লোকটাকে দেখলে মাঠের বাইরের লোকটাকে চেনা যাবে না। যেন মুখোশে ঢাকা দুই ব্যক্তিত্ব! প্র্যাকটিসে কখনও তিনি কাতসুমিদের ভুল-ত্রুটি শোধরাতে ব্যস্ত। কখনও আবার সেট পিসে জোর। টিমের স্ট্র্যাটেজি যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী কোচের কাছে পাচার না হয়ে যায়, তার জন্য ‘ক্লোজড ডোর’ প্র্যাকটিস করালেন। জুনিয়ররা ভুল করলে শাসন। কোনও ভাল মুভ হলে প্রশংসা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৫
Share:

গুরু-শিষ্যের লড়াই। শনিবার পুলিশ মাঠে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত চিমা। মোহনবাগানে সুভাষ ভৌমিক। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

মাঠের ভিতরের লোকটাকে দেখলে মাঠের বাইরের লোকটাকে চেনা যাবে না। যেন মুখোশে ঢাকা দুই ব্যক্তিত্ব!

Advertisement

প্র্যাকটিসে কখনও তিনি কাতসুমিদের ভুল-ত্রুটি শোধরাতে ব্যস্ত। কখনও আবার সেট পিসে জোর। টিমের স্ট্র্যাটেজি যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী কোচের কাছে পাচার না হয়ে যায়, তার জন্য ‘ক্লোজড ডোর’ প্র্যাকটিস করালেন। জুনিয়ররা ভুল করলে শাসন। কোনও ভাল মুভ হলে প্রশংসা। শৌভিক-জেজেদের ‘হেডস্যার’ যে কতটা কড়া, শনিবার সকালে সেটা ঘণ্টাখানেকের প্র্যাকটিসেই বুঝিয়ে দিলেন সুভাষ ভৌমিক। তবে প্র্যাকটিসের মধ্যে যে বাগান কোচের ছবি ফুটে উঠল, প্র্যাকটিস শেষ হতেই তা একেবারে বদলে গেল। ঠোঁটের কোণে একটা মিষ্টি হাসি লেপ্টে। কথায় কথায় রসিকতার ফুলঝুরি ছোটাচ্ছেন। কোনও প্রশ্নের আগেই যেন জবাব তৈরি! সুব্রত ভট্টাচার্যের টালিগঞ্জের বিরুদ্ধে তো ঠিক আছে। পুলিশের বিরুদ্ধে কি ‘ক্লোজড ডোর’ প্র্যাকটিস প্রয়োজন ছিল? বাগান টিডি-র মন্তব্য, “ময়দানে আমি যা করি, সেটাই ট্রেন্ড হয়ে যায়। তা নিয়ে হইচই হয়। সমালোচনা হয়। তবে সময় বলবে, আমি ঠিক না ভুল। প্রয়োজন না অপ্রয়োজন ছিল।”

কলকাতা লিগের প্রথম ম্যাচে ময়দানের ‘বাবলু’-কে হারানোর পরে যেন এ দিন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী সুভাষ। তবে ম্যাচের আগে ‘বন্ধু’ সুব্রতকে যতটা সমীহ করেছিলেন, ‘ছাত্র’ চিমা সম্পর্কেও ততটাই বিনয়ী মোহনবাগান টিডি। বিপক্ষ টিমকে কীভাবে দেখেছেন? প্রাণোচ্ছল সুভাষ বলে উঠলেন, “যেভাবে আপনাকে দেখি।” একটু থেমেই তাঁর সংযোজন, “আমার থিওরি হল, জীবনে সবাইকে গুরুত্ব দিতে হয়। চিমা হয়তো কোচিং জীবনে বড় ট্রফি পায়নি। তা বলে কি ওকে পাত্তা দেব না? আমিও কোচিং জীবনের প্রথম দিকে ক’টা ট্রফি পেয়েছি!”

Advertisement

রবিবারের ম্যাচে বোয়াকে শুরু থেকেই খেলাতে চাইছেন সুভাষ। ক্যামেরুনের ফুটবলারকে অন্তত পনেরো দিন বাদে মাঠে নামানোর কথা ভেবেছিলেন বাগান টিডি। কিন্তু মাত্র আট দিনের মধ্যে হঠাৎ তাঁকে ম্যাচ খেলানোর পিছনে কি কোনও নির্দিষ্ট রহস্য লুকিয়ে আছে? সুভাষ বললেন, “দু’দিন আগে যা ভেবেছি, দু’দিন পরেও যে সেটাই ভাবব, তার কোনও মানে আছে কি? ক্লাব ওকে খেলানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে। তাই সুযোগ যখন আছে, তখন খেলাতে আপত্তি কোথায়?” বোয়ার মাঠে নামার আগের দিন রাতেই অবশ্য শহরে এসে গেলেন ডিফেন্ডার আলাও আদিসা ফাতাই।

গুরু যখন ছাত্রের প্রশংসায় বুঁদ, তখন ছাত্র কীভাবে পিছিয়ে থাকতে পারেন। পুলিশ কোচ চিমা প্র্যাকটিস শেষে বললেন, “সুভাষ ভৌমিকই আমাকে প্রথম মোহনবাগানে নিয়ে এসেছিলেন। ওঁকে আমি দারুণ সম্মান করি। তবে রবিবার মাঠে উনি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী। এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। মোহনবাগান আইকন ফুটবলার বোয়াকে শুরু থেকে খেলাবে তো কী হয়েছে? আমরাও ঘুমিয়ে নেই!”

জিততে মরিয়ে দুই শিবির-ই। এখন দেখার, ‘ছাত্র’ চিমার টিমের শারীরিক শক্তিনির্ভর ফুটবল বনাম ‘গুরু’ সুভাষের পাসিং ফুটবলের পর বিজয় পতাকা নিয়ে কে বা কারা মাঠ ছাড়েন?

রবিবারে কলকাতা লিগ

মোহনবাগান: পুলিশ এ সি
(যুবভারতী ৪-০০)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement