খোশমেজাজ। ঢাকায় ক্রিস গেইল। শনিবার। ছবি: দেবাশিস সেন
শের-ই-বাংলা মাঠে তাঁর বিরাট চওড়া চেহারা আর গমগমে কণ্ঠস্বর মিলে-টিলে তখন যেন ‘শের’ লাগছিল ক্রিস গেইল-কেই। ধোনির ভারতকে হারাতে রবিবার যে বিধ্বংসী জামাইকান ওপেনারের দিকে তাকিয়ে গোটা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ। তার চব্বিশ ঘণ্টা আগে ভারতীয় স্পিন আক্রমণ থেকে সুনীল নারিন, নিজের গ্যাংনাম থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ড্রেসিংরুমের সবচেয়ে খারাপ ডান্সার সব কিছু নিয়ে অকপট গেইল।
প্রশ্ন: ভারতের সঙ্গে টক্কর নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে তো?
গেইল: আমরা সবাই ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে আছি। জানেন তো, এই টুর্নামেন্টের জন্য আমরা দুর্দান্ত প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। এখানে দু’টো ভাল প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছি। এই তো সঠিক সময় ‘ক্লিক’ করার।
ভারত ওদের প্রথম ম্যাচ জিতেছে। আশা করি, কাল ওদের বিরুদ্ধে আমরা ১-০ এগিয়ে যাব। তার পর সেখান থেকে টুর্নামেন্টে এগোতে থাকব।
প্র: ভারতের হাতে অমিত মিশ্র-অশ্বিনের মতো উঁচুমানের স্পিনার আছে। যাদের সামলাতে আপনারা কী ভাবে তৈরি হয়েছেন? বিশেষ করে অশ্বিনের ক্যারম বল খেলার ব্যাপারে?
গেইল: আমরা স্রেফ নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি হয়েছি। টিম মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে অশ্বিনদের আমরা কী ভাবে খেলব সে সব নিয়ে। প্রত্যেক প্লেয়ারের প্রতিপক্ষের কোনও নির্দিষ্ট প্লেয়ারকে সামলানোর ব্যাপারে একটা মাইন্ডসেট থাকে। আমরা বোর্ডে একটা ভাল রান তুলতে চাই। অশ্বিন আর অমিত খুব ভাল স্পিনার। আর এক জন ভাল স্পিনার হল রবীন্দ্র জাডেজা। ওরা এই ধরনের পরিবেশে খেলে-খেলে একেবারে তৈরি। ওদের বিরুদ্ধে আমাদের যেটা দরকার, তা হল ইতিবাচক ব্যাটিংটা করা।
প্র: দু’দলই পাওয়ার-হিটারে ভর্তি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাঁদের মধ্যে এক জনের নাম ক্রিস গেইল!
গেইল: (হা হা হা... অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে) হ্যা।ঁ কিন্তু সত্যি বলতে শুধু ক্রিস গেইল-ই নয়, ডোয়েন স্মিথ খুব ভাল ব্যাট করছে। আশা করি ও ওর ভাল ফর্ম ধরে রাখবে। আমরা গোটাকয়েক দারুণ ওপেনিং পার্টনারশিপ গড়েছি। তা ছাড়াও আরও একঝাঁক ব্যাটসম্যান আছে ব্র্যাভো, স্যামুয়েলস, ক্যাপ্টেন স্যামি। সুতরাং আমাদের দলে অনেকেই আছে যারা প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
প্র: ভারতীয় দল নিয়ে কী বলবেন?
গেইল: ভাল অলরাউন্ড দল। সম্প্রতি বেশ ভাল ক্রিকেট খেলছে। অধিনায়কও খুব ভাল। দু’টো দলই এই ম্যাচে একে অপরের মাথায় চড়তে চাইবে। আমরা তার উপর নিজেদের ঝুলিতে এই টুর্নামেন্টের প্রথম জয়টা পুরতে চাইব।
প্র: সুনীল নারিনের মতো স্পিনার কি ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন?
গেইল: (মুচকি হেসে) দেখুন ভাই, সুনীল আমাদের দলের দ্বিতীয় সেরা বোলার। গেইল হল আমাদের দলের এক নম্বর বোলার। যাক গে, ইয়ার্কি ছেড়ে বলি যে, সুনীলের মতো উঁচুমানের বোলার দলে থাকায় আমরা রীতিমতো আনন্দিত। বোলার তো নয়, ম্যাজিসিয়ান! যে দিন থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ঢুকেছে, অবিশ্বাস্য কাণ্ডকারবার ঘটিয়ে চলেছে।
প্র: রবিবার মাঠে প্রতিপক্ষ দলে তো আপনার আরসিবি-র কয়েক জন সতীর্থের সঙ্গেও লড়াই। যেমন বিরাট কোহলি, যুবরাজ সিংহ...
গেইল: (প্রশ্নটা থামিয়ে দিয়ে) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট বাবা! ওরা আমার ভাল বন্ধু হতে পারে, কিন্তু ওরা যেন মনে রাখে, আমি এখানে এসেছি নিজের কাজ সারতে।
প্র: ঢাকায় নেমে আপনি ঘোষণা করেছেন, কলম্বোর মতো জিতে ফের গ্যাংনামের মতো কোনও নতুন নাচ নাচবেন!
গেইল: (ফের একদফা অট্টহাসি) হ্যা।ঁ আবার একটা নতুন নাচ দেখানোর সময় আসছে আমার। তবে আগেরবার গ্যাংনামের জন্য আমার মোটা অঙ্কের চেকটা কিন্তু এখনও পাইনি। এখনও তার অপেক্ষায় আছি। যতক্ষণ না কেউ ও রকম একটা চেক আমাকে দিয়ে বলে যে, ক্রিস, এই নাও তোমার গ্যাংনামের দক্ষিণা, ততক্ষণ আমি সত্যি বলতে আবার কোনও নতুন নাচ নাচতে পারবই না।
প্র: আপনাদের দলে সেরা ডান্সার কে?
গেইল: ক্রিস গেইল!
প্র: সেরা গায়ক কে?
গেইল: ক্রিস গেইল!
প্র: সবচেয়ে খারাপ নাচে কে?
গেইল: ডোয়েন ব্র্যাভো।
প্র: নিজেই নাকি রান্না করে খান?
গেইল: আমি শ্রেষ্ঠ শেফ!
প্র: আপনার জার্সিতে লেখা ‘কনফিডেন্ট গ্রুপ’ বলতে কী বার্তা দিচ্ছেন?
গেইল: আমরা আত্মবিশ্বাসী একটা ইউনিট। আমরা গতবারের চ্যাম্পিয়ন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনও দল এখনও পর্যন্ত খেতাব অটুট রাখতে পারেনি। আমরাই প্রথম একটা ‘গ্র্যান্ড ডাবল’ করতে চাই।