তিন বঙ্গ নায়কের জন্য বাংলার সমর্থন ভাগ হোক চান না লক্ষ্মী

কেকেআরকে দেখলেই তেড়ে যেতে হবে নাকি, পাল্টা শামির

“আরে, আপনারা কী পাগল হয়ে গেলেন নাকি? গোটা জীবন কলকাতায় খেললাম। এখন কেকেআর সামনে পড়েছে বলে রে রে করে তেড়ে যেতে হবে?” মোবাইলে মনোনিবেশ করতে করতে আড়মোড়া ভাঙছিলেন যে বছর চব্বিশের যুবক, তিনি প্রসঙ্গ উত্থাপনে আশ্চর্য এবং বিরক্ত। আজ তাঁর বিগত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে বিন্দুমাত্র অসূয়া নেই। কোটলায় বুধবার এত দিনের চেনা টিমকে দেখলে অসি-সমেত ঝাঁপিয়ে পড়বেন, এমনও নয়। মহম্মদ শামি তাঁর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি পৃথিবীতে অনেক ভাল আছেন। পুরনোর চেয়ে।

Advertisement

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০২:৪৬
Share:

টিম হোটেলে নাইটদের ত্রাস দুই প্রাক্তনী।

“আরে, আপনারা কী পাগল হয়ে গেলেন নাকি? গোটা জীবন কলকাতায় খেললাম। এখন কেকেআর সামনে পড়েছে বলে রে রে করে তেড়ে যেতে হবে?” মোবাইলে মনোনিবেশ করতে করতে আড়মোড়া ভাঙছিলেন যে বছর চব্বিশের যুবক, তিনি প্রসঙ্গ উত্থাপনে আশ্চর্য এবং বিরক্ত। আজ তাঁর বিগত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে বিন্দুমাত্র অসূয়া নেই। কোটলায় বুধবার এত দিনের চেনা টিমকে দেখলে অসি-সমেত ঝাঁপিয়ে পড়বেন, এমনও নয়। মহম্মদ শামি তাঁর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি পৃথিবীতে অনেক ভাল আছেন। পুরনোর চেয়ে।

Advertisement

হোটেল রুমের চেয়ারে যিনি আবার বসে, মহাযুদ্ধের আগে একটু যেন দার্শনিক মনোভাবাপণ্ণ। বত্রিশ পেরিয়ে মঙ্গলবার তিনি তেত্রিশে পড়লেন। এবং দিল্লি বনাম কেকেআর (আদতে বাংলা বনাম কলকাতা) ম্যাচ নিয়ে প্রশ্ন করলে লক্ষ্মীরতন শুক্ল বলে দিচ্ছেন, তিনি কোনও ভাবে চান না মাত্র তিন জনের জন্য কেকেআর আজ বাংলার সমর্থন হারাক!

মনোজ তিওয়ারি সম্ভবত নন। কিন্তু এঁরা দুই আজ, বুধবারের ফিরোজ শাহ কোটলায় কেকেআরের বিরুদ্ধে নিশ্চিত ভাবে নামছেন।

Advertisement

“আসলে আমরা প্রোফেশনাল প্লেয়ার। আমাদের এমন ভাবে ভাবা উচিতও নয়। কলকাতার মানুষ এই ম্যাচকে ঘিরে দু’দিকে চলে যাবেন, জানি। ওঁরা আমাদের নিয়ে গর্ববোধ করেন। তার মর্যাদাটা দিতে হবে,” বলছিলেন লক্ষ্মী। বঙ্গ অধিনায়কের কথা শেষ হল না, শামি বাকি অংশটা জুড়ে দেন, “আমি অন্তত বাংলা বনাম কেকেআর ব্যাপারটা মানি না। ব্যাপারটাকে বরং এ ভাবে দেখি যে আমাকে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েছে। সেটার রিটার্ন দিতে হবে।”

কিন্তু সত্যিই কি কার্স্টেনের সংসারে যুক্ত হওয়ার পর আপনাদের জীবনে কোনও পরিবর্তন হয়নি? শামি, নাইট রাইডার্স আপনাকে খেলাতই না। ডাগআউটে থাকতেন। তা হলে? “জীবনে বদল? জার্সিটা পাল্টেছে। হ্যাঁ, দিল্লির পরিবেশটা কেকেআরের চেয়ে ভাল। এখানে চাপ নেই। পারফর্ম করার সুযোগটাও ভাল রকম পাচ্ছি,” একটু থেমে শামি ফের যোগ করেন, “মিথ্যে বলব না, ইডেন গার্ডেন্সকে আমি মিস করি। ভেবেছিলাম, এই ম্যাচটা ইডেনে খেলব। কিন্তু তাই বলে কেকেআরকে দেখলে বাড়তি তেতে যাব, এমন নয়। সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি সমান হয় না। হয়তো আমাকে নিয়ে কেকেআর ম্যানেজমেন্টের ভাবনাচিন্তা অন্য রকম ছিল। ওখানে স্যুট করিনি। এখানে করছি। এখানে যথেষ্ট ব্যাকিংও পাই। ক্যাপ্টেনের, কোচের। আর কি চাই?”

এলআরএস আবার বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটাকে দেখতে চান। তিনি বলে দিচ্ছেন, এটা রাজ্য টিমের যুদ্ধ নয়। ফ্র্যাঞ্চাইজি ওয়ার্ল্ড। সবাই এখানে ভেবেচিন্তে টিম বানায়। “কেকেআরের বিরুদ্ধে বুধবার প্রথম নামার উত্তেজনা অবশ্যই আছে। কিন্তু সে জন্য কেকেআর নিয়ে কেন গরম গরম কথা বলব? আর সে রকম কিছু বলার নেইও,” সোজাসাপ্টা মন্তব্য লক্ষ্মীর। “যা-ই হোক, কেকেআর ছ’বছরে অনেক কিছু দিয়েছে। দূর থেকে বিরূপ কথাবার্তা বলায় আমি নেই।” বোঝা গেল। কিন্তু বার্থডে গিফট তার কী হবে? কেকেআরকে হারিয়েই তো....

“লাভ নেই, একটা শব্দও বেরোবে না,” মুচকি হেসে বলে দেন বঙ্গ অধিনায়ক। সহাস্য সংযোজনে ব্যাপারটাও মিটিয়ে ফেলেন, “এলআরএস আজ পর্যন্ত নিজের জন্য কিছু চায়নি। বাংলার জন্য চেয়েছে। উপহার হিসেবে তাই বাংলার ভাল চাইবে। আর চাইবে তিনটে লোকের জন্য যেন বাংলার সমর্থন কেকেআরের থেকে না ঘুরে যায়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement