বাগযুদ্ধে দুই বাগান কিংবদন্তি

একে অন্যকে ক্ষমতালোভী আর অপরাধী বলছেন সুব্রত-চুনী

সাধারণ সভার ঝামেলার ধাক্কায় চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মোহনবাগানের অন্দরমহলে ভাঙন। তীব্র লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লেন সবুজ-মেরুনের দুই ঘরের ছেলে। চুনী গোস্বামী আর সুব্রত ভট্টাচার্যের মধ্যে শুরু পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগা। “সুব্রতর উচিত আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া। ক্লাবের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া অপরাধ। ১২৫ বছরের ক্লাবের ঐতিহ্যের পক্ষে অত্যন্ত খারাপও। ক্লাবে অনেক ঝামেলা হয়েছে। কুমারবাবুর সঙ্গে ধীরেনদার, ধীরেন দার সঙ্গে মান্নাদার। কিন্তু কেউ ক্লাবকে আদালতে টেনে নিয়ে যাননি।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৫ ০৩:০২
Share:

সাধারণ সভার ঝামেলার ধাক্কায় চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মোহনবাগানের অন্দরমহলে ভাঙন। তীব্র লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লেন সবুজ-মেরুনের দুই ঘরের ছেলে। চুনী গোস্বামী আর সুব্রত ভট্টাচার্যের মধ্যে শুরু পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগা।

Advertisement

“সুব্রতর উচিত আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া। ক্লাবের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া অপরাধ। ১২৫ বছরের ক্লাবের ঐতিহ্যের পক্ষে অত্যন্ত খারাপও। ক্লাবে অনেক ঝামেলা হয়েছে। কুমারবাবুর সঙ্গে ধীরেনদার, ধীরেন দার সঙ্গে মান্নাদার। কিন্তু কেউ ক্লাবকে আদালতে টেনে নিয়ে যাননি।” চুনী ‘শাসক গোষ্ঠীর ভাষায়’ কথা বলছেন জেনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত সুব্রত। বলে দিলেন, “চুনীদাকে দিয়ে এটা কেউ বলাচ্ছে, যারা আদালতের কথা জেনে ভয় পাচ্ছে। আমি ক্লাবের বিরুদ্ধে কোনও মামলা করিনি। করেছি কিছু ক্লাব কর্তার অপশাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করেননি। করেছিলেন ব্রিটিশ অপশাসনের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে। আমি চোরদের হাত থেকে ক্লাবকে বাঁচাতে চাই।”

সাধারণ সভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হওয়া ক্লাবের হিসাব নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন সুব্রত-সহ বাগানের চার সদস্য। আদালত সেই মামলা গ্রহণও করেছে বলে খবর। সোম বা মঙ্গলবার শুনানির সম্ভাবনা। এর পাশাপাশি সভায় ঝামেলার সময় তাঁর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন এই অভিযোগে পদত্যাগী ক্লাব সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসুর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে চলেছেন কর্মসমিতির সদস্য মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ।

Advertisement

হিসাব নিয়ে মামলা, মানহানির মামলার খবরের মধ্যেও ক্লাবের পদ্মশ্রী বনাম অর্জুনের তর্ক-পাল্টা তর্ক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে।

সুব্রত এ দিন বেনজির তোপ দাগলেন তাঁর পূর্বসূরি কিংবদন্তি ফুটবলারের বিরুদ্ধে। “চুনীদা বরাবর ক্ষমতালোভী। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে ভালবাসেন। উনি তো ক্লাবে এসে আমাকে আর প্রসূনকে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট হতে চান। এখন হয়তো শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে কোনও প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন।” যা শুনে অবশ্য পিছিয়ে যাননি চুনীও। পাল্টা বলছেন, “ববি চার্লটন, দি’স্তেফানো তো তাঁদের ক্লাবে আলঙ্কারিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন। নানা কাজে পরামর্শ দেন। সেটা তো ক্লাবের কোনও প্রাক্তন ফুটবলার থাকতেই পারে।”

টুটু-অঞ্জনরা যে কথা বলে এপ্রিলে নির্বাচনে যেতে চাইছেন, চুনী সেটাই প্রশ্ন হিসাবে তুলেছেন সুব্রতদের সামনে। “সুব্রত-প্রসূনরা ক্লাব চালাতে চাইছে। কিন্তু ফুটবল টিম চালাতে গেলে ভাল স্পনসর এবং প্রচুর টাকার দরকার হয় সেটা জোগাড় করার ক্ষমতা আছে ওদের?” সাউথ ক্লাবে বসে চুনীর করা মন্তব্য মাইল কয়েক দূরের গল্ফগ্রিনের বাড়িতে বসে শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন সুব্রত। “পদত্যাগের নাটক করে আবার ফিরে আসতে হয়েছে টুটু-অঞ্জনদের। ক্ষমতায় থাকার জন্য ওরা সব করতে পারে। ওরা ছেড়ে চলে যাক। দেখিয়ে দেব কী ভাবে টাকা এনে টিম চালাতে হয়। ওরা সরে গেলে বহু লোক টাকা দেবে।”

চুনী এবং সুব্রত দু’জনেই সাধারণ সভায় যাননি। সুব্রত যাননি মামলা করেছেন বলে। চুনী কেন যাননি? “এই বয়সে কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাই না। তবে এটা বলছি, নির্বাচনে সর্বসম্মত প্যানেল হলে ভাল হবে।”

দুই ঘরের ছেলের কাজিয়া কী ভাবে দেখছেন বাগান কর্তারা? প্রেসিডেন্ট টুটু বসু দুবাই চলে গিয়েছেন সকালেই। সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “আজ মোহনবাগান নয়, দেশের বাজেট দেখছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement