জার্সি বদলালেও জাত মরে না! র্যান্টি মার্টিন্সের ক্ষেত্রে আমি এই কথাটাই বলব। গোয়া থেকে কলকাতায় এসেও র্যান্টি গোল করেই চলেছে। ভারতে ও প্রায় দশ বছরের খেলে ফেলল, কিন্তু তার পরেও গোলের খিদে যে এতটুকু কমেনি, সেটা রবিবার আরও একবার প্রমাণ করে দিল। বয়স বাড়ায় হয়তো একটু স্লো হয়েছে। কিন্তু ডান পায়ে নেওয়া নিখুঁত শট, গোল চেনার ক্ষমতা, দুরন্ত টার্নিং, উইথ দ্য বল জায়গা করে নেওয়া—এগুলো তো এক জন ভাল স্ট্রাইকারেরই লক্ষণ। সব ক’টি গুণই র্যান্টির মধ্যে রয়েছে।
ইস্টবেঙ্গল-ডেম্পো ম্যাচের পর আমি অবশ্য কিছুটা হতাশ আর্থার পাপাসের টিমের খেলায়। রক্ষণ দুর্বল, প্ল্যানিংয়ের অভাব, টিমের বোঝাপড়া খুবই খারাপ। আর এটাকেই কাজে লাগিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। বলা ভাল, র্যান্টি মার্টিন্স। ম্যাচের শুরুতেই পর পর দু’টি গোল পেয়ে যাওয়ায় ওর আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গিয়েছিল। এ দিনের পাঁচ গোল ওকে কিন্তু আরও তাতাবে। উদ্বুদ্ধ করবে আরও গোল করতে। যাতে সর্বোচ্চ গোলদাতার জায়গাটা ও ধরে রাখতে পারে। অন্য টিমের কোচদের র্যান্টিকে নিয়ে চিন্তা তাই আজকের পর আরও বাড়ল। র্যান্টির মতো স্ট্রাইকারকে ছেড়ে রাখলে অঘটন তো ঘটবেই। গোয়ায় ও বহু বছর খেলেছে। চেনা মাঠ, চেনা পরিবেশ—এগুলোও আজ কাজে লেগেছে।
র্যান্টির এই দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখার পরও আমি বলব, সব দিন সবার সমান যায় না। ডেম্পো টিম কিন্তু এ বার খুব একটা ভাল জায়গায় নেই। জাতীয় লিগ ও আই লিগ মিলিয়ে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের যদি অবনমনও হয়ে যায় আমি অবাক হব না। তবে আই লিগ সবে শুরু। এখনও অনেক পথ যেতে হবে। তবু তুলনামূলক শক্তিশালী টিমের বিরুদ্ধেও র্যান্টি যদি এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারে তবে বলব, ইস্টবেঙ্গলের আই লিগে ভবিষ্যত্ উজ্জ্বল। অবশ্য যদি পারে ব্যাপারটাই আসল। এ ক্ষেত্রে মোহনবাগান ম্যাচটার উদাহরণ দিতে চাই। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে র্যান্টি কিন্তু এতটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারেনি। দু’জন বড় চেহারার ডিফেন্ডারকে দিয়ে যদি র্যান্টিকে আটকে দেওয়া যায়, তবে কিন্তু চাপে পড়ে যেতে পারে ইস্টবেঙ্গল। এখন দেখার, সেই জায়গাটা কী করে কাটিয়ে উঠতে পারে টিমের বাকি ফুটবলাররা। নজর রাখতে হবে, ইস্টবেঙ্গল যেন র্যান্টি-নির্ভর না হয়ে পড়ে।