শিষ্যের ইনিংসে উচ্ছ্বসিত গুরু

‘ঋদ্ধিকে বলেছিলাম চেন্নাইয়ের উপেক্ষার জবাবটা আজ দিয়ে দিস’

বাষট্টির জাকার্তা এশিয়ান গেমসে ফুটবল ফাইনালের আগের রাতে ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ প্রয়াত রহিম সাহেব চুনী-পিকেদের কাছে একটা মিষ্টি ‘তোফা চেয়েছিলেন। যা ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করে ক্যান্সার আক্রান্ত রহিমকে দিয়েছিলেন তাঁর ছেলেরা। ঠিক সে রকম ভাবেই শনিবার রাতে শিলিগুড়ির বাড়িতে বসে প্রিয় ছাত্রের ফোনটা ধরেছিলেন কোচ জয়ন্ত ভৌমিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০৩:৪১
Share:

বাষট্টির জাকার্তা এশিয়ান গেমসে ফুটবল ফাইনালের আগের রাতে ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ প্রয়াত রহিম সাহেব চুনী-পিকেদের কাছে একটা মিষ্টি ‘তোফা চেয়েছিলেন। যা ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করে ক্যান্সার আক্রান্ত রহিমকে দিয়েছিলেন তাঁর ছেলেরা।

Advertisement

ঠিক সে রকম ভাবেই শনিবার রাতে শিলিগুড়ির বাড়িতে বসে প্রিয় ছাত্রের ফোনটা ধরেছিলেন কোচ জয়ন্ত ভৌমিক। তখনই ঋদ্ধিমান সাহার ক্রিকেট জীবনের ‘ফ্রেন্ড, ফিলোজফার অ্যান্ড গাইড’ জয়ন্তবাবু প্রীতি জিন্টার দলের উইকেট কিপারের কাছে উপহারটা চেয়ে বসেছিলেন। কী বলেছিলেন? রবিবার রাতে চিন্নাস্বামীতে কেকেআর-এর পাশুপাত সুনীল নারিনকে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি করছেন তখন আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বলছিলেন জয়ন্তবাবু। ‘সেঞ্চুরি’ বলে এমন চিৎকার করলেন যে ফোন গেল কেটে। তারপর নিজেই ফোন করে বললেন, “শনিবার রাত বারোটার সময় ফোন করেছিল। তখন ওকে বললাম, ছ’টা আইপিএল খেলেও তুই প্রচারের অন্তরালেই থেকে যাস। সব যন্ত্রণা কাল যেন তোর ব্যাট থেকে বেরোয়। কাল একটা ধামাকা ইনিংস চাই তোর কাছে। ঋদ্ধিকে বলেছিলাম চেন্নাইয়ের উপেক্ষার জবাবটা আজ দিয়ে দিস।” এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে একটু থামলেন জয়ন্তবাবু। শিলিগুনির অগ্রগামী ক্লাবের হলঘরে তখন ‘ঋদ্ধি’, ‘ঋদ্ধি’ চিৎকার চলছে। জয়ন্তবাবু ফের বলতে শুরু করলেন, “ও কাল রাতেই বলেছিল স্যার, রবিবার আপনার কথা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করব। সেই চেষ্টা সফল। এই আনন্দ রাখার জায়গা নেই।”

ম্যাচ শুরুর আগে শহরে স্লোগানটা ছিল, ‘অব কি বার, কেকেআর’। কিন্তু ম্যাচের বয়স যত বাড়ল ততই জোরদার হল অন্য আর একটা স্লোগান ‘আইপিএল সেভেন ফাইনাল কার? ঋদ্ধিমান আবার কার!”

Advertisement

কথাটা অমূলক নয়। যে ম্যাচে সহবাগ, মিলার, ম্যাক্সওয়েলরা ব্যাট হাতে ব্যর্থ সেখানে বাংলার উইকেটকিপার ৫৫ বলে ১১৫। আইপিএল ফাইনালের ইতিহাসে প্রথম শতরান। বঙ্গসন্তানের যে ইনিংস মন কেড়েছে সুনীল গাওস্কর থেকে ভিভিএস লক্ষ্মণ-সহ ভারতীয় ক্রিকেটের ‘হুজ হু’-দের। বাংলার প্রধান নির্বাচক দীপ দাশগুপ্ত যে ইনিংস দেখার পর আনন্দে বলছেন, “আমি অবাক নই। ঋদ্ধি এ রকমই খেলে। এ বার কিংস ইলেভেন-এ যাওয়ার পর বলেছিলাম ভালই হল সব ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবি। সেই সুযোগ কাজে লাগাল ছেলেটা।” স্বাধীনতার পর বাংলার একমাত্র রঞ্জি জয়ী অধিনায়ক আবার একধাপ এগিয়ে বললেন, “কোনও এক বঙ্গসন্তানই আইপিএল ফাইনালে প্রথম সেঞ্চুরি করে গেল। এর চেয়ে গর্বের কী হতে পারে? সামনের বছর বিশ্বকাপের টিকিটটা আজই কনফার্ম করে নিল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement