অশ্বিন অনেকটা আমার মতো: কুম্বলে

টেস্ট ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ১৩৮ বছরের ইতিহাসে তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। কিন্তু তাঁর—অনিল কুম্বলের অবসরোত্তর জীবনেও আক্ষেপ, “ইস! যদি লিস্টে আমার আগের দু’জনের মতোই বোলিং স্কিল থাকত আমারও।”

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৫
Share:

আইসিসি ‘হল অব ফেম’-এ আসার পর অনিল কুম্বলে। শনিবার। ছবি: এএফপি।

টেস্ট ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ১৩৮ বছরের ইতিহাসে তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। কিন্তু তাঁর—অনিল কুম্বলের অবসরোত্তর জীবনেও আক্ষেপ, “ইস! যদি লিস্টে আমার আগের দু’জনের মতোই বোলিং স্কিল থাকত আমারও।”

Advertisement

লিস্টে কুম্বলের আগের সেই দু’জন— মুথাইয়া মুরলীধরনের ৮০০ টেস্ট উইকেট এবং শেন ওয়ার্নের ৭০৮ টেস্ট উইকেটের পাশে ভারতীয় লেগ স্পিনারের টেস্ট উইকেট সংখ্যা ৬১৯। যথেষ্ট সম্ভ্রম জাগানো কৃতিত্ব। তবু এমসিজি-তে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা কাপ-যুদ্ধের আগের দিন আইসিসি হল অব ফেম-এ আনুষ্ঠানিক প্রবেশ ঘটিয়ে কুম্বলের তাত্‌পর্যপূর্ণ মন্তব্য, “হ্যাঁ, ওয়ার্ন-মুরলীর লড়াই... ঠিক বুঝতে পারছি না সেই লড়াইয়ে আমি নিজেকে কোথায় রাখব, কী ভাবেই বা রাখব! আসলে আমার তো কোনও মুরলী বা কোনও ওয়ার্নের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব ছিল না। ইস! ওদের মতো স্কিল যদি আমারও থাকত!” বরং ওয়ার্ন বা মুরলীর সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বের কথাই যেন বেশি আগ্রহের সঙ্গে বলতে চান কুম্বলে।

“ওয়ার্নির সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্ব ছিল, তবে মুরলীর আর আমার বন্ধুত্ব আরও বেশি ছিল। কারণ আমরা একে অন্যের বিরুদ্ধে আরও বেশি খেলেছি। খেলোয়াড় জীবনে আমাদের মধ্যে আরও বেশি দেখাসাক্ষাত ঘটত। আমার প্রতিটা মাইলস্টোনের পর মুরলী আমাকে ফোনে অভিনন্দন জানাত। আর বেশির ভাগ সময় ও নিজে তখন পরের মাইলস্টোনের থেকে তিরিশ-চল্লিশটা উইকেট দূরে থাকত। ফলে আমি তখনই ওকে আগাম অভিনন্দন জানিয়ে বলতাম, মুরলী আর তিনটে টেস্ট পরে কিন্তু আমি ওই তিরিশটা উইকেট পাব!”

Advertisement

এই প্রজন্মের কার মধ্যে তিনি নিজের মিল খুঁজে পান প্রশ্ন উঠলে কুম্বলের সার্টিফিকেট রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। বিশ্বকাপে ধোনির অফস্পিনার সম্পর্কে কুম্বলের মন্তব্য, “ওর ওয়ার্ক এথিক আর ক্রিকেট খেলাটা নিয়ে ধারণা অনেকটা আমার মতোই।” ধোনির ভারত চাপের মুখে ম্যাচ জিততে জানে বললেও বিদেশে তাঁর এক স্পিনার নিয়ে খেলার ঘুরিয়ে সমালোচনাও করলেন কুম্বলে। “আমার লজিক হল, যে বোলিং সেট্‌ তোমাকে দেশের মাঠে ম্যাচ জেতাচ্ছে তাকেই তুমি বিদেশেও খেলাবে না কেন? আমার তো মনে হয়, অশ্বিন যত বেশি বিদেশে খেলবে, ততই বিদেশি পরিবেশে সফল হওয়ার রাস্তা পাবে আর সফলও হবে।”

উনিশশো নব্বই থেকে নিজের আঠারো বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের রোমন্থন করতে গিয়ে কুম্বলে ভারতীয় দলের সেই ‘কোর গ্রুপ’-কে সবচেয়ে কৃতিত্ব দিচ্ছেন। যার ভেতর তিনিও পড়তেন। সেই পঞ্চপাণ্ডব—সচিন, দ্রাবিড়, সৌরভ, লক্ষ্মণ, কুম্বলে। “ওই কোর গ্রুপ-টা বহু দিন ছিল আর আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম, যে কোনও প্রতিপক্ষকেই আমরা হারাতে পারি। এই পাঁচের সঙ্গে আপনারা সহবাগ, শ্রীনাথ, হরভজন, জাহিরের নামও যোগ করতে পারেন। আমাদের একটা অসাধারণ দল ছিল। আমি ভাগ্যবান যে আমাকে কেবল নেটেই সচিন, সহবাগ বা দ্রাবিড়কে বল করতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে করতে হয়নি। সত্যি বলতে কী, একটা সময় তো ওরাই আমার কোচ হয়ে উঠেছিল। আমাকে নেটে খেলে উঠে ওরাই আমাকে বলে দিত, কোন জায়গায় আমি দারুণ করছি বা কোন জায়গায় আমার আরও ফাইন টিউনিং দরকার। আর আমি সে ভাবেই পরের দিনের টেস্টের জন্য তৈরি থাকতাম।” আন্তর্জাতিক ম্যাচে যাঁদের বিরুদ্ধে বল করেছেন তাঁদের মধ্যে সেরা ব্যাটসম্যান কুম্বলের মতে ব্রায়ান লারা। “একটাই ডেলিভারির উপর চার-পাঁচটা শট খেলতে পারার ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতা ছিল লারার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement