এরিক। জোড়া গোলের চমক।
ইউনাইটেড ২ (এরিক ২)
চার্চিল ০
‘নেই রাজ্যের বাসিন্দা’ তারা। স্পনসর নেই। ফুটবলারদের মাইনে অনিয়মিত। অনুশীলনের খরচ জোগাড় করতে কর্তারা ঘুরছেন দোরে দোরে। এই অবস্থায় গোয়ার মাঠে গিয়ে ফেড কাপ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে আই লিগে অবনমন বাঁচিয়ে ফেলল ইউনাইটেড স্পোর্টস।
এরিক ব্রাউনের জোড়া গোল উল্টে দিল সব হিসেবনিকেশ। আরও অন্ধকারে ঠেলে দিল সুভাষ ভৌমিকের চার্চিল ব্রাদার্স এবং সঞ্জয় সেনের মহমেডানকে। পরিস্থিতি যা তাতে এই দু’টি দলের কোনও একটির অবনমন হবে। দু’জনেরই একটি করে ম্যাচ বাকি। তবে চার্চিলের সুবিধা একটাই যে, তারা মহমেডানের ফল দেখে মাঠে নামতে পারবে।
শনিবার তিলক ময়দানের দিকে সারাক্ষণ চোখ রেখে ছিলেন মহমেডান কোচ সঞ্জয় সেন। ম্যাচের পর বলছিলেন, “ইউনাইটেডের এই লড়াই দেখে আমার ছেলেদের শেখা উচিত। মুম্বই এফসি ম্যাচ খেলতে নামার আগে ইউনাইটেডের উদাহরণ দিয়েই নিজের দলের ফুটবলারদের মোটিভেট করব। তারপর দেখা যাক কী হয়!” আর চার্চিল টি ডি সুভাষ ভৌমিক? এদিনও নাকি ছিলেন ‘জ্বর’-এ আক্রান্ত। তাই ফোনও ধরেননি। গোয়ার খবর, সুভাষকে বাড়িতে বসিয়ে রেখে চার্চিল কর্তারা ‘পয়া’ কোচ মারিয়ানো ডায়াসের উপর আস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু মারিয়ানোও বাঁচাতে পারেননি টিমকে। উল্টে সুব্রত ভট্টাচার্যের দলের কাছে বিশ্রী ভাবে হেরেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। যারা দু’দিন আগেই আর্মান্দোর কোলাসোর ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিল। চার্চিলকে অবনমন বাঁচাতে গেলে সালগাওকরের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ জিততেই হবে। সেই ম্যাচে আবার খেলতে পারবেন না শনিবার লালকার্ড দেখে বাইরে চলে যাওয়া সাবানা। এ দিন তো সাবানা বেরিয়ে যাওয়ার পরই দু’গোল হজম করেছে চার্চিল।
বিরতির কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত সাবানা যতক্ষণ মাঠে ছিলেন গোয়ার টিমের হাতেই ম্যাচের রাশ ছিল। চার্চিল দশ জন হয়ে যাওয়ার পরই দ্বিতীয়ার্ধে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে ইউনাইটেড। সুখেন দে-র ক্রস থেকে দুরন্ত হেডে দলকে এগিয়ে দেন এরিক। এই লাইবিরিয়ান ফুটবলারই ২-০ করেন কলকাতার দলের পক্ষে। আসাধারণ একটি গোল করে। তবে বেগুনি ব্রিগেডের কিপার অভিজিৎ দাসের প্রশংসা করতেই হবে। অভিজিৎ বেশ কিছু ভাল সেভ না করলে হয়তো ম্যাচের স্কোর অন্য রকম হত।
ম্যাচের পর ইউনাইটেড টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য গোয়া থেকে ফোনে বললেন, “আমি পুরো মরসুম ছিলাম না। তবে যখন দলের দায়িত্ব নিয়েছি, লক্ষ্য ছিল ইউনাইটেডের অবনমন হতে না দেওয়া। চার্চিলকে হারানোর পর অনেকটাই নিশ্চিন্ত লাগছে।” মোহনবাগানের কোচ হিসাবে এক বার অবনমন বাঁচিয়ে ছিলেন সুব্রত।
আর মাসের পর মাস বেতন না পেয়েও মাঠে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ফুটবলারদের একজন-- লালকমল ভৌমিক বললেন, “অনেক আগেই অবনমন বাঁচিয়ে ফেলতে পারত দল। যাই হোক অ্যাওয়ে ম্যাচে চার্চিলকে যে আমরা হারিয়েছি এটাই বড় ব্যাপার।” এ দিনের জয়ের নায়ক এরিক বললেন, “অনেক কষ্ট করেছি। অবনমন বাঁচাতে না পারলে এত লড়াইয়ের কোনও দাম থাকত না।”
শনিবারের ম্যাচ হেরে চার্চিল একই জায়গায় থেকে গেল। ২৩ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট। শেষ ম্যাচ চার্চিল খেলবে ঘরের মাঠে সালগাওকরের বিরুদ্ধে। আর লিগ তালিকার লাস্ট বয় মহমেডানের পয়েন্ট ২৩ ম্যাচে ২২। শেষ ম্যাচ মুম্বই এফসি-র বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ। এখন দেখার, শেষ পর্যন্ত আই লিগে পরের বার টিকে থাকে কার দল? সুভাষের না সঞ্জয়ের?