রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করতেন কুস্তিগিরেরা। —ফাইল চিত্র।
অলিম্পিক্সজয়ী কুস্তিগিরেরা রাস্তা বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন ব্রিজভূষণ সিংহের বিরুদ্ধে। ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধানের বিরুদ্ধে যৌননিগ্রহের অভিযোগ করেছিলেন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনীত ফোগটের মতো কুস্তিগিরেরা। কিন্তু আর তাঁরা রাস্তায় বসবেন না। এ বার থেকে কোর্টেই লড়বেন বজরংরা।
রবিবার বজরং, সাক্ষী এবং বিনীত একই রকম টুইট করেন। তাঁরা লেখেন, “আমাদের প্রতিবাদ চলবে, তবে রাস্তায় নয়, কোর্টে। ভারতের কুস্তি সংস্থার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১১ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব।” এই টুইটের পর সমাজমাধ্যম থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন সাক্ষী এবং বিনীত।
দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর নিয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই কারণেই কুস্তিগিরেরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ থেকে সরে এলেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিজভূষণ যদিও তাঁর উপরে ওঠা সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও তাঁকে কুস্তি সংস্থার প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের তিন বছর জেল হতে পারে। তাঁর এক পরিচিত জানিয়েছেন যে, ব্রিজভূষণ পুলিশের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করতে রাজি।
সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দেশের কুস্তিগিরদের একাংশের অভিযোগ কি কিছুটা লঘু হয়ে গিয়েছে? সাক্ষী, বজরংরা কি কিছুটা কোণঠাসা? কিছু দিন আগে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাক্ষী। নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা আদালতে নিজের অভিযোগের বয়ান বদল করেছেন। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন প্রথমে। পরে তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের প্রতি বঞ্চনার সুরাহা না পেয়ে রাগের মাথায় হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পসকো আইনে মামলা রুজু হয়েছিল। পরে তিনি আদালতে গিয়ে অভিযোগ বদল করায় বিজেপি সাংসদকে পসকো আইন অভিযুক্ত করা যাচ্ছে না।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবার অভিযোগ বদল নিয়ে সাক্ষী বলেছিলেন, ‘‘প্রথম বার নাবালিকা কুস্তিগির ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে যে অভিযোগ করেছিল, তার ভিত্তিতে ব্রিজভূষণকে তখনই গ্রেফতার করা হলে বয়ান বদল করত না। শুধু তাই নয়, অন্য মেয়েরাও সাহস করে এগিয়ে এসে অভিযোগ জানাতে পারত। যত দূর জানি বয়ান বদলের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখন সবটাই আদালত বিচার করবে।’’ চাপ থাকলেও অভিযোগ বদল করা ভুল হয়েছে বলেও মনে করছিলেন সাক্ষীরা। এ বার নিজেরাও জানালেন যে, রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবেন না।
সামনেই এশিয়ান গেমস। সেখানে অংশ নিতে চান সাক্ষীরা। সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করা কঠিন ছিল তাঁদের পক্ষে। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে বজরংদের। তাঁরা সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও তা মানেনি এশীয় অলিম্পিক্স সংস্থা।