সাক্ষী মালিক। —ফাইল চিত্র।
এশিয়া কাপের জন্য কুস্তির দল নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের মাঝে সাক্ষী মালিক জানিয়ে দিলেন, তিনি ট্রায়ালে ছাড় চাননি। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাড-হক কমিটি বজরং পুনিয়া এবং বিনেশ ফোগটকে ট্রায়াল ছাড়াই এশিয়া কাপের দলে সরাসরি নির্বাচিত করায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাক্ষীও। কুস্তিগিরদের আন্দোলনের প্রধান তিন মুখ সাক্ষী, বজরং এবং বিনেশ। তা হলে কি তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে? সাক্ষীর বক্তব্য ঘিরে উঠছে প্রশ্ন।
দল নির্বাচন নিয়ে সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেছেন সাক্ষী। জানিয়েছেন, এশিয়ান গেমসের জন্য তিনি প্রথম থেকেই স্বচ্ছ ট্রায়ালের পক্ষে ছিলেন। কখনও বাড়তি সুবিধা চাননি। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাড-হক কমিটি জানিয়েছে, এশিয়ান গেমসের জন্য ২২ এবং ২৩ জুলাই ট্রায়াল হবে। তার পর চূড়ান্ত দল ঘোষণা হবে। যদিও এর মধ্যেই বজরং এবং বিনেশকে এশিয়ান গেমসের জন্য সরাসরি নির্বাচিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে আন্দোলনের প্রধান তিন মুখ ছিলেন সাক্ষী, বজরং এবং বিনেশ।
সাক্ষী বলেছেন, ‘‘সরকারের তরফ থেকে আমাদের এশিয়ান গেমসের ট্রায়ালের কথা বলা হয়েছিল। আমরা অনুরোধ করেছিলাম ১০ অগস্টের পর ট্রায়ালের ব্যবস্থা করতে। আমরা কিছুটা সময় চেয়েছিলাম। সরকার সম্মতি দেওয়ায় বিদেশে প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু দু’তিন আগে জানলাম দু’জনকে সরাসরি সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি ই-মেল করে কারণ জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু জানানো হয়নি। ট্রায়াল না দিয়ে আমি এশিয়ান গেমসে যেতে চাইনি। আগে কখনও ট্রায়াল না দিয়ে কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিইনি। ভবিষ্যতেও এমন দাবি করব না। আমি সব সময় সাম্যের পক্ষে। আমি চাই, সবাই সমান বিচার পাক। দল নির্বাচনে স্বচ্ছতা চাই।’’
আর একটি বক্তব্যে তিনি সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। কুস্তিগিরদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাক্ষী। তিনি বলেছেন, ‘‘কুস্তিগিরদের মধ্যে একতা ভাঙার কাজ করছে সরকার। কেন দু’জনকে সরাসরি সুযোগ দেওয়া হল? আমি ট্রায়াল না দিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে বিশ্বাসী নই। এ ধরনের বিষয় সমর্থন করি না। সরকারের এই অভিপ্রায়ে আমি ব্যথিত। ট্রায়াল কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া নিয়েই শুধু কথা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের তরফে যেটা করা হল, তা ভাল হয়নি।’’
গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাক্ষী। তাঁর দাবি, তাঁকেও বিশেষ ছাড়ের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সাক্ষী সমাজমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘আমরা শুধু ১০ আগস্টের পর ট্রায়াল নেওয়ার কথা বলেছিলাম ইন্ডিয়ান অলিম্পিক কমিটির অ্যাড-হক কমিটিকে। কারণ, আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারিনি। আশ্বাস পাওয়ার পর প্রস্তুতি শুরু করি। এর পর সরকারের তরফে আমাকে ফোন করা হয়। বলা হয়েছিল, দু’জনের নাম (বজরং এবং বিনেশ) এশিয়ান গেমসের জন্য সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার নামও সরাসরি পাঠানোর জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছিল। প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে জানিয়েছিলাম, এরকম চাই না। ট্রায়াল না দিয়ে আগে কখনও প্রতিযোগিতায় নামিনি। এখনও নামব না। ভবিষ্যতেও না।’’ সাক্ষীর বক্তব্য নিয়ে বজরং এবং বিনেশের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
অন্য দিকে, অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অন্তিম পাঙ্ঘাল এবং অনূর্ধ্ব ২৩ এশিয়া চ্যাম্পিয়ন সুজিত কলকলের করা মামলার পরিপ্রক্ষিতে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদ নোটিশ পাঠিয়েছেন সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে। কীসের ভিত্তিতে বজরং এবং বিনেশকে ছাড় দেওয়া হল, তার ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।