অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্রীড়াবিদ ফেলিক্স। —ফাইল চিত্র
অবসর নিচ্ছেন না অ্যালিসন ফেলিক্স। গত শনিবার মিক্সড রিলেতে ব্রোঞ্জ পাওয়ার পর জুতো খুলে রাখার কথা জানিয়েছিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদল। শনিবার মেয়েদের রিলেতে নামবেন ফেলিক্স। মিক্সড রিলে তাঁর জীবনের শেষ দৌড় নয়। ৩৭ বছরের এই দৌড়বিদ ফের দেশের হয়ে মাঠে নামবেন। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে ফের এক বার দেখা যাবে ফেলিক্সকে।
পদকসংখ্যা এবং কৃতিত্বের বিচারে অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্রীড়াবিদ ফেলিক্স। ১১টি অলিম্পিক্স পদক, ১৯টি চ্যাম্পিয়নশিপ পদক রয়েছে তাঁর। ২০০৪ সালে আথেন্স অলিম্পিক্সে ২০০ মিটারে রুপো জয় দিয়ে শুরু। বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে মিক্সড রিলেতে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন গত শনিবার। এর পরেই অবসরের কথা জানিয়েছিলেন ফেলিক্স। সেই সিদ্ধান্তে বদল। পদক সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এক সংবাদ সংস্থাকে ফেলিক্স বলেন, “কোচরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল ফের নামব কি না। ওদের নাকচ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।”
শনিবার মেয়েদের ৪X৪০০ মিটার রিলের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নামবেন ফেলিক্স। রবিবার ফাইনাল। গত সপ্তাহে শেষ বার রিলেতে দৌড় শেষ করে লস অ্যাঞ্জেলসে চলে যান। একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান তিনি। কিন্তু তাঁকে ফের রিলেতে নামতে হবে জেনে কী করলেন ফেলিক্স? তিনি বলেন, “ফোন আসতেই নিজেকে ঘরবন্দি করি। রিলেতে নামার জন্য মনোযোগ বাড়াতে শুরু করি।”
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে মেয়েদের ৪X৪০০ রিলেতে সোনা জিতেছিল আমেরিকা। সেই দলে ছিলেন ফেলিক্স। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিডনি ম্যাকলফলিন, ডালিদাহ মহম্মদ এবং আথিং মু। চার জনের এই দল অলিম্পিক্সে সাতটি পদক জিতেছেন।
শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও লড়াকু ফেলিক্স। ২০১৮ সালে তিনি সন্তানসম্ভবা থাকার সময় বেঁকে বসে তাঁর স্পনসর এক বিখ্যাত ক্রীড়াসরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা। তাঁর চুক্তি রাতারাতি ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। যখন ফেলিক্স জানতে পারেন মাতৃত্বের সময় তাঁকে কোনও ভাবে সাহায্য করা হবে না, তখন অন্য লড়াই শুরু। ফেলিক্স একটি অলাভজনক সংস্থা তৈরি করেন, যাঁরা বিশ্বের সমস্ত ক্রীড়াবিদ, কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফকে মাতৃত্বকালীন সাহায্য করবে। পাশাপাশি তৈরি করেন একটি কোম্পানি, যারা শুধু মহিলা ক্রীড়াবিদদের জন্য জুতো তৈরি করবে। শুধু তাই নয়, এক মানবাধিকার সংগঠনের হয়ে আফ্রিকার রোয়ান্ডা, উগান্ডা এবং প্যালেস্টাইনের মতো দেশে গিয়ে সেখানকার তরুণদের খেলাধুলোয় উৎসাহিত করেছেন।
ফেলিক্সের সামনে সুযোগ আরও এক বার পদক জেতার। ফেলিক্স বলেন, “এই সপ্তাহে আমার সেরা মুহূর্ত অবশ্যই গ্যালারি থেকে মেয়ের সমর্থন। সেই সঙ্গে অন্য খেলোয়াড়দের পায়ে আমার কোম্পানির জুতো।”