মেয়েদের আই লিগে বাংলার বাজি সীমান্তরক্ষীরা

সেনা উর্দি গায়ে রঞ্জিতা দেবী যখন বন্দুক কাঁধে সীমান্ত পাহারা দেন, তখন বোঝার উপায় থাকে না মণিপুরের এই মেয়েই গোলের সামনে বল পেলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০২:৪১
Share:

সেনা উর্দি গায়ে রঞ্জিতা দেবী যখন বন্দুক কাঁধে সীমান্ত পাহারা দেন, তখন বোঝার উপায় থাকে না মণিপুরের এই মেয়েই গোলের সামনে বল পেলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হন না।

Advertisement

সুমিত্রা মারান্ডি সীমান্তে চোরাচালানকারীদের ধরতে যেমন আগুনে মনোভাব নিয়ে ধাওয়া করেন, ফুটবল মাঠে ঝাড়খণ্ডের সেই মেয়েই বিপক্ষের স্ট্রাইকারকে রুখতে সমান ভাবে একাগ্রতা দেখান।

ভারতীয় দলের জার্সিতে সাফ কাপ জিতে আসা বাংলার সঙ্গীতা বাসফোর কিছুদিন আগেই গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন শিলিগুড়ির রানিডাঙা সেনা ছাউনিতে। মাঝমাঠে সঙ্গীতার গোলের জন্য বাড়ানো পাস তাঁর ছোড়া গুলির মতোই নিখুঁত।

Advertisement

রঞ্জিতা, সুমিত্রা, সঙ্গীতারা সবাই মেয়ে জওয়ান। সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) নামে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের সদস্য সবাই। ভারত-নেপাল এবং ভারত-ভূটান সীমান্ত রক্ষার অতন্দ্রপ্রহরী ওঁরা। মেয়েদের আই লিগে বাংলার সম্মান রক্ষার দায়িত্ব এ বার সেই সেনাদের হাতেই।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রবিবার থেকে পঞ্জাবের লুধিয়ানায় শুরু হচ্ছে ১৪ দলের আই লিগ। সেখানে কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে এসএসবি। শুক্রবার বিকেলে বাংলার মানুষ যখন ‘ফণী’ নামক ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় তটস্থ, তখন সুজাতা করের কোচিংয়ে থাকা আঠারো জন মেয়ে-জওয়ান উঠে পড়লেন রাজধানী এক্সপ্রেসে। দিল্লি পৌঁছে শনিবার দুপুরে তাঁরা যাবেন লুধিয়ানায়। সীমান্তের লড়াইয়ে জেতার জন্য নয়, তাঁরা সেখানেই বল পায়ে নামবেন অন্য লড়াইয়ে জিততে। দলের সরকারী কোচ সুজাতা কর বলছিলেন, ‘‘আমাদের কাছে এটা নতুন চ্যালেঞ্জ। খেতাব জেতার লক্ষ্য নিয়েই পঞ্জাব যাচ্ছি। দলে এমন কিছু ফুটবলার রয়েছে, যারা দেশের হয়ে আগে খেলেছে। পেশাদার এবং অভিজ্ঞ।’’ দু’বছর আগে আই লিগের দল চাঁদনি স্পোর্টিংয়ের দায়িত্ব নিয়ে সফল হতে পারেননি সুজাতা। জওয়ানদের দায়িত্ব নিয়ে এ বার তিনি তাই নিজেও মরিয়া। বলছিলেন, ‘‘এই টিমের অনেকেই আমার প্রশিক্ষণে আগে ক্লাব পর্যায়ে খেলেছে। ফলে দেরিতে দায়িত্ব নিলেও তৈরি হয়ে যাচ্ছি।’’

সঙ্গীতা-সুমিত্রাদের প্রথম ম্যাচ গতবারের চ্যাম্পিয়ন রাইজিং স্টুডেন্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে। তাতে অবশ্য ভয় পাচ্ছেন না কলকাতা লিগে খেলার দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা দুলহারা মারান্ডি। বলছিলেন, ‘‘চ্যাম্পিয়নদের প্রথম ম্যাচে হারাতেই হবে। প্রথম ম্যাচ জিততে পারলেই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে।’’ আর এক স্ট্রাইকার অনুবালা দেবির মন্তব্য, ‘‘সীমান্তে আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েই তো জিতি। এখানেও একই মনোভাব নিয়ে নামব।’’ গ্রুপ লিগে মোট পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে সুজাতার দলকে। লিগ টেবলের প্রথম দুটি দল যাবে সেমিফাইনালে।

সেনা দল বলেই বাংলা ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, কেরলের মেয়েরা রয়েছেন এই দলে। দু’বছর আগে ট্রায়াল দিয়ে খেলোয়াড় হিসাবে চাকরি পেয়েছেন সবাই। কলকাতা লিগে নেমেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এসএসবি। যা আত্মবিশ্বসী করে তুলেছে সঙ্গীতাদের। এ বার ভারত জয়ের লক্ষ্য দুলহারাদের সামনে। দেখার, মেয়ে-জওয়ানরা সীমান্তের মতোই মাঠের যুদ্ধে জিততে পারেন কি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement