জ্যাক ড্রেপার। ছবি: টুইটার থেকে
ভয় পেয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচ। জানতেন না, চিনতেন না। ম্যাচের আগের দিন কিছুটা জেনেছিলেন, চিনেছিলেন। আর ম্যাচের দিন হাড়ে হাড়ে বুঝলেন। গত বারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন, বিশ্বের এক নম্বরকে প্রথম রাউন্ডের প্রথম সেটে ৬-৪ গেমে হারিয়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিলেন ব্রিটেনের জ্যাক ড্রেপার। প্রথম দিনই ৩৭ মিনিটে উইম্বলডন জেতা হয়ে গেল ড্রেপারের।
ব্রিটেনে টেনিস পরিবারে জন্ম ড্রেপারের। তাঁর মা নিকি ছিলেন টেনিস খেলোয়াড়। তাঁর কাছেই প্রথম টেনিসে হাতেখড়ি ড্রেপারের। বাবা রজার ছিলেন লন টেনিস সংস্থার কর্তা।
২০১৮ সালে জুনিয়র উইম্বলডনের সিঙ্গলসে ফাইনালে ওঠেন তিনি। ব্রিটেনের সর্বকালের অন্যতম সেরা অ্যান্ডি মারের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন করতেন। মারের দরাজ শংসাপত্র, ‘‘দেশের অন্যতম সেরা যুব টেনিস প্লেয়ার ড্রেপার। ও অনেক বড় হবে।’’
ছোটবেলা থেকে শুধু টেনিস নয়, ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, হকিও খেলেছেন ড্রেপার। একটি সাক্ষাৎকারে জানান, এই সব খেলার সুফল পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি অন্য খেলাও খেলতাম, যেগুলো আমায় সাহায্য করেছে।’’ টেনিস ব্যক্তিগত খেলা হলেও, এখানেও যে দল প্রয়োজন, সেটা ১৯ বছরেই উপলব্ধি করেছেন ড্রেপার। তাই বলেন, “ফুটবল, ক্রিকেট, হকি খেলতাম বলে দলের সকলের সঙ্গে চলার মানসিকতা তৈরি হয়েছে।”
একটা সময় চেলসির অ্যাকাডেমিতে ফুটবল খেলতেন। তারপর টেনিসে মন দেন ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির ড্রেপার। ছোটবেলা থেকেই দাদা বেনের সঙ্গে টেনিস খেলতেন। দাদা বড় হওয়ায় বার বার হারতে হত তাঁকে। তবে সেই হার এখন কাজে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘ছোট বেলায় বার বার হারতে হত। তবে যে প্রতিযোগিতার মানসিকতা তৈরি হত, সেটাই পরবর্তী কালে আমার কাজে লেগেছে।’’
ছবি: টুইটার থেকে
এই বছর মায়ামি ওপেনে ড্রেপারের ম্যাচে অভুতপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। মিখাইল খুকুস্কিনের বিরুদ্ধে খেলার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ড্রেপার। প্রথম সেটের পর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কোর্টের মধ্যেই রক্তচাপ মাপতে হয়, স্টেথো দিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। এরপর কুইন্স ওপেনের মতো বড় মঞ্চে চ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে দর্শক হিসেবে অ্যান্ডি মারের দু’ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখেছেন। এ বার জোকোভিচের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন মধ্যমণি। শেষ পর্যন্ত ৪-৬, ৬-১, ৬-২, ৬-২ গেমে জিতে জোকোভিচও জানিয়ে দিলেন আগামী দিনে ড্রেপারের জন্য সেন্টার কোর্ট অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকবে।