শিষ্য-গুরু। উইলিস প্লাজা এবং স্টিভন আবারোয়ি।
তাঁর এক দেশোয়ালি ক্রিকেটার বন্ধুর ফেব্রুয়ারিতে এ দেশে আসার কথা। লাল-হলুদের ক্যারিবিয়ান ফরোয়ার্ড উইলিস প্লাজার আরও দাবি, ছোটবেলার সেই বন্ধু সুনীল নারিনকে সেই সময় অন্তত একদিনের জন্য কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটে কাটিয়ে যেতে এখন থেকেই বলে রেখেছেন। হাজার হোক, প্লাজার অনেক আগে থাকতেই যে কলকাতা নাইটদের ম্যাচ উইনার নারিনের শহর!
ক্যারিবিয়ানে যদি প্লাজার বিখ্যাত ক্রিকেটার বন্ধু থাকেন তো নাইজিরিয়ায় আছেন ফুটবল-মেন্টর! যিনি আবার কিনা প্লাজার বর্তমান ক্লাবের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রাক্তন সফল তারকা।
শাহরুখ খানের ফ্যান প্লাজা সোমবার গোয়ায় তাঁর টিম কোচের প্র্যাকটিস থেকে ফিরেই ফোন করে বসেন নাইজিরিয়ায় নিজের সেই ফুটবল মেন্টরকে। পুণেতে শিবাজিয়ান্সের মতো গোয়াতেও যে বুধবার ইস্টবেঙ্গলের চার্চিল-বধে নায়ক হতে চান তিনি। তাই ট্রেভর মর্গ্যানের কোচিংয়ের পাশাপাশি প্লাজা চাইছেন ‘মেন্টর’ স্টিভন আবারোয়ি-র টিপস।
লাল-হলুদের ন’নম্বর জার্সির নাইজিরিয়ান মেন্টর আবার ১৯৯৯-২০০০ মরসুমে মোহনবাগানকে জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম কারিগর। এখনও নিজের দেশে বসে ভারতীয় ক্লাব ফুটবলের নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। সেই আবারোয়ি সোমবার সন্ধেয় লাগোসের বাড়ি থেকে আনন্দবাজারের কাছে ফোনে স্বীকার করলেন, গোয়া থেকে তাঁর ‘চ্যালা’র ‘টেলি-টিপস’ নেওয়ার কথা।
প্রথমেই তাঁর সাফ কথা, ‘‘উইলিস প্লাজা আবার কী? বলুন ডব্লিউপি নাইন।’’ পরক্ষণে ফোনের ওপ্রান্ত ভেসে আসে জোরালো অট্টহাসি। ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলে প্লাজাকে আবারোয়ি-ই এ বার পাঠিয়েছেন লাল-হলুদে। কিন্তু উইলিস প্লাজা নামটা উচ্চারণ করতে ঘোরতর আপত্তি তাঁর।
একটু থেমে আবারোয়ি বললেন, ‘‘এই তো কিছুক্ষণ আগেই ডব্লিউপি ফোন করে চার্চিল সম্পর্কে জানতে চাইছিল। বলল, গোয়াতে নাকি এখন বেশ গরম। ওকে বেশি করে গ্লুকোজ খাওয়ার পরামর্শ দিলাম। গলাটা একটু নার্ভাস মনে হল। তাই সঙ্গে একটু পেপটকও দিলাম।’’
কী সেই পেপটক?
সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন নাইজিরিয়ান তারকা লাল-হলুদের বর্তমান বিদেশি তারকা নিয়ে বলে চললেন, ‘‘ওকে বললাম জেসিটির জার্সি গায়ে চার্চিলকে দু’টো গোল দিয়েছি। যার একটা ব্যাক ভলিতে, আমার কেরিয়ারের সেরা গোল। মোহনবাগান জার্সিতেও কলকাতায় ওদের বিরুদ্ধে একটা গোল আছে। তখন চার্চিল দারুণ টিম। তুই তো আমার চেয়েও ভাল ফুটবলার। বুধবার তুইও গোল পাবি।’’
যাঁকে নিয়ে তাঁর মেন্টরের এত কথা, সেই প্লাজা এ দিন কোনও কথা বলতে চাননি। তবে প্লাজাকে নিয়ে মজে আছেন লাল-হলুদ কোচ। এ দিন ফোনে ফের বললেন, ‘‘উইলিস প্লাজা টিমের সম্পদ হতে চলেছে। গতি ভাল। ওয়ান টু ওয়ানে সিচুয়েশনে ড্রিবল করে বেরিয়ে যেতে পারে। বক্সের আশেপাশে গোলের জন্য ওর ছটফটানিটা বেশ ভাল।’’
তা হলে কি আই লিগের কলকাতা ডার্বিতে মর্গ্যানের তুরুপের তাস ডব্লিউপি নাইন? শুনে হাসেন ভারতীয় ফুটবলে পোড়খাওয়া সাহেব কোচ। ‘‘ওই ম্যাচটা আরও চার সপ্তাহ পরে। আপাতত প্লাজার মন পরের ম্যাচে। চার্চিল ম্যাচে ও আমার প্রধান অস্ত্র।’’ আবারোয়ি একই প্রশ্নে যে উত্তর দিলেন তাতে বিস্তর অভিমান।
‘‘মোহনবাগান জার্সিতে জাতীয় লিগ জিতেছি। এই তো বছর কয়েক আগেই ওদের ডিফেন্ডার দরকার শুনে জিও তেম্বা নামে এক জাম্বিয়ান স্টপারের কথা বলেছিলাম। ওরা কোনও গুরুত্বই দেয়নি।’’ একটু থেমে ব্যারেটো-ইগরের সতীর্থ বলে দেন, ‘‘এ বার আই লিগ ডার্বি দেখতে শিলিগুড়ি যাচ্ছি। জানেন, ডার্বিতে গোল করালেও আমার নিজের গোল নেই। তাই আমার ডব্লিউপি নাইনের থেকে এ বার বড় ম্যাচের গোলটা চাই। তার জন্য এখন থেকেই ওকে টিপস দিতে শুরু করেছি। তবে সেটা এখানে শেয়ার করছি না।’’