এ বারের আইপিএলটা কলকাতা নাইট রাইডার্সের কেমন যাচ্ছে, সেটা বোঝার জন্য শেষ কয়েকটা দিনের ওপর চোখ রাখলেই হবে। কখনও আমরা দারুণ খেলছি। কখনও খুব খারাপ। মাঝে মাঝে আমাদের খেলা দেখে মনে হচ্ছে, পরপর কয়েকটা ম্যাচ জিতে নেব। কিন্তু সেই কাজটাই করতে পারছি না। এখন সময় এসেছে টানা কয়েকটা ম্যাচ জেতার।
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আমরা খুবই খারাপ খেলেছি। সেটা অবশ্য হতেই পারে। আমাদের প্রস্তুতি ভাল হয়েছিল। ছেলেরা মানসিক ভাবেও লড়াইয়ের জন্য তৈরি ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। ওই দিনটায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অনেক ভাল খেলেছিল। আমি এর আগেও বলেছি, আবারও বলছি। হারটা বড় কথা নয়। কী ভাবে আমরা ওই হারের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ালাম, সেটাই বড় কথা। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচে আমরা শুধু ঘুরেই দাঁড়াইনি, প্রতিযোগিতার অন্যতম সেরা জয়ও তুলে নিয়েছি।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে রণনীতি কী হবে, তা নিয়ে আমাদের পরিষ্কার ধারণা ছিল। আর ছেলেরা নির্মম ভাবে সেই রণনীতি মাঠে প্রয়োগ করেছে। আমাদের প্রত্যেক ক্রিকেটার জানত, মাঠে ওদের ভূমিকাটা ঠিক কী হবে। আর প্রায় সবাই সেই পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজে লাগিয়েছে। এই রকম ব্যাপার সচারচর ঘটে না। কিন্তু যখন ঘটে, তখন খুব তৃপ্তিদায়ক হয়। ইনদওরের ওই ছোট মাঠে যে প্রচুর রান হবে, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। দেখার ছিল, ও রকম ব্যাটিং তাণ্ডবের মধ্যে কোন বোলার কী ভাবে চাপ নিতে পারে।
আমাদের দলে কয়েকটা ছোটখাটো চোট সমস্যা আছে। বাধ্য হয়ে প্রথম এগারোয় কয়েকটা পরিবর্তন করতে হয়েছিল। যার ফলে আমরা রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তিও মেপে নিতে পেরেছি। যে শক্তি দেখে আমরা খুশি।
গ্রুপ পর্বের গোটা দু’য়েক করে ম্যাচ বাকি সবার। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবার অঙ্কের বিচারে নানা রকম সম্ভাবনা তৈরি হয়। এ বারেও হয়েছে। বাস্তবটা দেখলে বলতে হবে, প্রথম দু’টো জায়গা ইতিমধ্যেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং চেন্নাই সুপার কিংস নিয়ে নিয়েছে। প্লে-অফের দু’টো জায়গার জন্য লড়াইয়ে এখন পাঁচটা দল। আমার অবশ্য একটা প্রশ্ন নিয়েই যাবতীয় মাথাব্যথা। সেটা হল, আমরা কি এখনও নিজেদের ভাগ্য নিজেরা ঠিক করতে পারি? ভাগ্য ভাল, উত্তরটা হচ্ছে, হ্যাঁ। আমরা যদি শেষ দু’টো ম্যাচ জিততে পারি, তা হলে প্রথম চার দলের মধ্যে থাকব।
রাজস্থান এখন দারুণ ছন্দে আছে। ওদের হারানোটা সোজা হবে না। হায়দরাবাদও আমাদের বিরুদ্ধে নামবে এটা জেনে যে, প্রথম দু’দলের মধ্যে ওরা চলে গিয়েছে। ওরাও খুব বিপজ্জনক দল। কিন্তু আমি একশো ভাগ নিশ্চিত যে, এই দু’টো ম্যাচ জেতার মতো দক্ষতা আর মানসিকতা কেকেআরের ছেলেদের আছে। একটা ভাল জয় সব সময় টিমকে তাতিয়ে দেয়। আর পঞ্জাবের বিরুদ্ধে জয়টার চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে।