চায়ের টেবিলে স্ত্রীর সঙ্গে এই ছবি পোস্ট করে তাঁর টুইট, ‘‘জীবনসঙ্গিনীর সঙ্গে এই স্বর্গীয় পরিবেশে নিজেকে আশীর্বাদধন্য মনে করছি। সকলকে জানাই আমাদের অন্তরের ভালবাসা।’’
নিজের ৩১তম জন্মদিন শহর থেকে দূরে, ক্রিকেট থেকে দূরে প্রকৃতির কোলেই কাটালেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা। এই মুহূর্তে ভুটানে ছুটি কাটাচ্ছেন ‘বিরুষ্কা’। ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারে যে ভ্রমণের মাঝেই ছবি পোস্ট করছেন তারকা দম্পতি। তবে মঙ্গলবার, নিজের জন্মদিনে অভিনব একটি চিঠি লিখলেন বিরাট। লিখলেন তাঁর অতীতকে। লিখলেন সেই ‘চিকু’ (বিরাটের ছোটবেলার ডাক নাম)-কে, যার বয়স থেমে আছে ১৫ বছরে। টুইটারে চিঠি পোস্ট করে বিরাট লিখেছেন, ‘‘আমার জীবনের শিক্ষা তুলে ধরলাম ১৫ বছর বয়সি শৈশবের সেই আমার কাছে। চিঠিটা পড়বেন।’’ যে চিঠিতে বিরাট লিখেছেন...
‘‘হাই চিকু, প্রথমেই জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আমি জানি, তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাকে প্রচুর প্রশ্ন করতে চাও তুমি। দুঃখিত, কিন্তু তোমার বেশি প্রশ্নের জবাব দিতে পারব না। কারণ, ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা না জানা থাকলে প্রতিটা ঘটনা তোমাকে চমকে দেবে, প্রতিটা চ্যালেঞ্জ আরও উত্তেজক হয়ে উঠবে, প্রতিটা ব্যর্থতা শেখার সুযোগ নিয়ে আসবে। এখন বুঝবে না, কিন্তু ঘটনা হল, লক্ষ্যভেদের চেয়েও লক্ষ্যে পৌঁছনোর এই যাত্রাটাই আসল। এই যাত্রাটাই সুপার।
আমি শুধু বলব, জীবন তোমার জন্য অনেক কিছু নিয়ে অপেক্ষা করে থাকবে। কিন্তু তোমাকে প্রতিটা সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য তৈরি থাকতে হবে। তুমি ব্যর্থ হবে, যেমন বাকিরা হয়। কিন্তু আমাকে একটা প্রতিশ্রুতি দাও। ব্যর্থতা ভুলে আবার উঠে দাঁড়াবে। যদি প্রথমে না পারো, আবার চেষ্টা করবে।
চমক: কোহালির সেই চিঠির অংশ, যা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে। টুইটার
তোমাকে অনেকে ভালবাসবে, আবার অনেকে অপছন্দ করবে। তারা এমন সব লোক, যাদের তুমি চেনোই না। কিন্তু এদের নিয়ে মাথা ঘামাবে না। নিজের উপরে বিশ্বাস রেখে যাবে।
আমি জানি, তুমি সেই জুতো জোড়ার কথা ভাবছ, যা বাবা তোমাকে আজ উপহার হিসেবে দেয়নি। কিন্তু আজ সকালে বাবা তোমাকে যে ভাবে জড়িয়ে ধরল বা তোমার উচ্চতা নিয়ে যে ভাবে মজা করল, তার কাছে ওটা কিছুই নয়। আমি জানি, বাবাকে মাঝে মাঝে খুব কড়া মনে হবে। তাঁর এতটা কড়া হওয়ার কারণ হল, তিনি তোমার জন্য সেরাটাই চান। তোমার মনে হবে, বাবা-মা সব সময় আমাদের বুঝতে চান না। কিন্তু মনে রেখো, নিজের পরিবারই শুধু নিঃশর্ত ভালবাসা দিতে পারে। ওঁদের ভালবাসো, সম্মান করো, যত বেশি সম্ভব সময় ওঁদের সঙ্গে কাটাও।
বাবাকে বলো, তুমি তাঁকে ভালবাসো। আজকে বলো। কালকে বলো। বারবার বলো।
শেষে বলব, তোমার মনের কথা শোনো, স্বপ্নের পিছনে দৌড়ও, দয়ালু হও। আর বিশ্বকে দেখিয়ে দাও, স্বপ্নের পিছনে ছুটে কী ভাবে তফাত গড়ে দেওয়া যায়। নিজের মতো হও।
আর...ওই পরোটার স্বাদ কখনও ভুলো না, বন্ধু! এর পরে ভবিষ্যতে ওই স্বাদ পাওয়াটা দুর্লভ হয়ে যাবে...
প্রতিটা দিন সুপার করে তোলো।’’
—ইতি বিরাট।