তৈরি হচ্ছেন কোহালি।
ড্রেসিংরুমেই ব্যাট হাতে তুলে নিলেন। শুরু করে দিলেন ‘শ্যাডো’। পরে আরও কয়েক বার। দল যখন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের সামলাচ্ছিল, ড্রেসিংরুমে তখন ছটফট করছিলেন তাঁদের অধিনায়ক বিরাট কোহালি।
বারবার ড্রেসিংরুমের কাচের দরজা খুলে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন তিনি। জানা গেল, চিকিৎসকদের কড়া নির্দেশ ছিল, ড্রেসিংরুমের নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা থেকে বেরনো যাবে না। তাতে চোট সারতে আরও সময় লেগে যাবে। তাই মাঝে মাঝে দরজা খুলে মুখটা বার করে ফের ঢুকে পড়ছিলেন ভারত অধিনায়ক। এ-ও জানা যাচ্ছে, প্রায় সারা দিন কাচের দেওয়ালের ওপারেই ছিলেন কোহালি। খেলা শেষ হওয়ার পরে পড়ন্ত বিকেলে ব্যাট নিয়ে চলে যান মাঠের পাশেই নেট প্র্যাকটিসের জায়গায়। সেখানে গিয়ে মিনিট কুড়ি ধরে ছুড়ে দেওয়া বলের বিরুদ্ধে ব্যাট করেন তিনি।
কোহালি কি ব্যাট করার মতো অবস্থায় আছেন? শুক্রবার এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে বেশি ভেসে উঠেছে রাঁচীর স্টেডিয়ামে। দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে উমেশ যাদব বলে গেলেন, ‘‘বিরাট ব্যাট করার মতো অবস্থায় আছে। ওর সমস্যা হবে না।’’ তবে প্রয়োজন হলে কি শুক্রবারই নামতে পারতেন অধিনায়ক? খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেল, ডাক্তার বা ফিজিও খুব একটা চাননি কোহালি দ্বিতীয় দিনেই ব্যাট হাতে নামুন। ভারতীয় দলের সঙ্গে থাকা এক কর্তা এ-ও জানাচ্ছেন, কোহালিকে নামতে না হওয়ায় দিনের শেষে স্বস্তির হাওয়া ভারতীয় ড্রেসিংরুমে।
মেজাজ: দাপট স্মিথের।
উমেশ আরও বলছিলেন, ‘‘কাঁধে চোট লেগেছে তাই ব্যান্ডেজ তো থাকবেই। কিন্তু আমার মনে হয়, বিরাট খেলার মতো অবস্থায় আছে। নেটে যে রকম প্র্যাকটিস করল, তাতে মনে হচ্ছে ও তৈরি।’’ শুক্রবার ভারতের দুই ওপেনার মুরলী বিজয় এবং কে এল রাহুল যখন ব্যাট করতে নামেন, সারা দিনে আরও ৪০ ওভারের খেলা বাকি ছিল। এমন একটা সম্ভাবনা ছিল যে, বিরাটকে হয়তো নামতে হতেও পারে। দিনের শেষে ভারত শুধু রাহুলের উইকেট হারিয়ে ১২০ রান তোলায় আর কোনও সমস্যা হয়নি।
আরও পড়ুন
ম্যাক্সওয়েল বলে গেলেন, শেষের দিকে বল ঘুরছিল
বিরাট ব্যাট করতে আগ্রহী হলেও রাতে এক টিভি চ্যানেলে সুনীল গাওস্কর বলেছেন, খুব প্রয়োজন হলেই যেন তিনি ব্যাট করতে নামেন। ‘‘কোহালির চোটটা হয়তো তেমন গুরুতর নয়। কিন্তু ও এমন একটা ছেলে যে সব সময় মাঠে থাকতে ভালবাসে। ও যখন নেই, তখন মনে হয় যতটা বলা হচ্ছে, চোটটা তার চেয়ে একটু বেশি কিছু। যাই হোক, আমার মনে হয় খুব প্রয়োজন না হলে কোহালির ব্যাট করতে আসা ঠিক হবে না,’’ সতর্ক করে দিয়েছেন গাওস্কর।
সন্ধ্যায় দলের অন্য সদস্যরা কিছুটা হেঁটে গিয়ে টিম বাসে উঠলেও সবার শেষে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে আসা বিরাটের জন্য বাস পিছিয়ে আসে। তার পর তিনি বাসে ওঠেন। এতটাই যত্নে রাখা হচ্ছে তাঁকে। অভিব্যক্তিতে যন্ত্রণা বা কষ্টের ছাপ নেই এতটুকু। এমনকী নিজের ট্রলি ব্যাগ নিজেই টেনে নিয়ে ড্রেসিংরুম থেকে বেরোন ভারত অধিনায়ক। সব মিলিয়ে কোহালির ব্যাট করা নিয়ে থাকছে আশার আলো।
ছবি: পিটিআই এবং ফাইল চিত্র।