রূপকথা ফুরনোর অভিব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে সিসি বেলিস। ছবি: এএফপি।
ফ্লাশিং মেডোয় পঞ্চদশী মার্কিনের রূপকথার দৌড় দ্বিতীয় ম্যাচেই শেষ হয়ে গেল! যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ইতিহাসে অনেকগুলো নতুন নজির গড়ে প্রথম রাউন্ডে সিসি বেলিস এ মরসুমের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালিস্ট চিবুলকোভাকে হারিয়ে টেনিসমহলে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১২০৮ নম্বরের র্যাকেট-ম্যাজিক পরের ম্যাচে বিশ্বের ৪৮ নম্বর কাজাখ জারিনা দিয়াসের সামনে আর কাজে দিল না। পনেরো বছরের মেয়ে, যে কিনা এ বছরই জুনিয়র উইম্বলডন খেলেছে, ইচ্ছে করলে ফ্লাশিং মেডোতেও জুনিয়রে নামতে পারত, সিনিয়র পর্যায়ের দ্বিতীয় যুদ্ধে হেরে গেলেও তার আগে কিন্তু প্রচুর লড়াই করল। হারল ৩-৬, ৬-০, ২-৬। সমতা ফেরানোর সেট-এ বিপক্ষকে একটা গেমও না দিয়ে জেতে। এবং ম্যাচ শেষে সহজ ভঙ্গিতে বলেছে, “প্রথম সেটে একটু নার্ভাস লাগছিল। দ্বিতীয় সেটে আমি একদম খোলা মনে খেলেছি। তবে তৃতীয় সেটে ও আমার চেয়ে ভাল খেলেছে। আমি যেমন খেলতে চাই তেমনটা খেলতে পারিনি। তবে ইউএস ওপেনে আমার প্রথম সিনিয়র লেভেলে খেলার অভিজ্ঞতাটা দারুণ হয়ে থাকল।”
ভবিষ্যৎ টেনিস তারকার যুক্তরাষ্ট্র ওপেন থেকে ছিটকে পড়ার দিন বর্তমান মহাতারকারা তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেন। পুরুষ ও মেয়েদের শীর্ষ বাছাই জকোভিচ এবং সেরেনা উইলিয়ামস, ২০১২-র চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ডি মারে, এ বারের উইম্বলডন জয়ী কিভিতোভা-রা শেষ বত্রিশে ঢুকে পড়েছেন। জকোভিচের এটা টানা ২৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম তৃতীয় রাউন্ডে পা রাখা। আর সেরেনার ৮০তম ইউএস ওপেন ম্যাচ জয়। ফ্রান্সের পল অঁরিকে ৬-১, ৬-৩, ৬-০ উড়িয়ে দেওয়ার পথে ১৩টা ‘এস’, ৩৩টা উইনার মেরেছেন টেনিসের জোকার। তার পর বলেন, “বেশ ঝোড়ো আবহাওয়া ছিল নিউইয়র্কে। তার সঙ্গেই মানানসই হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। ফলে এত সহজ জয়। সত্যি বলতে কী, ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে শট খেলতে অসুবিধেই হয়নি।” সেরেনা আবার ভানিয়া কিং-কে ৬-১, ৬-০ গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে ২৫টা উইনার মারার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের হাফডজন সার্ভিস ব্রেক করেন। লেপার্ডের গায়ের মতো ডোরাকাটা প্রিন্টেড জার্সিতে জিতে উঠে সেরেনা কিন্তু বলেছেন, “ঝোড়ো হাওয়াকে ম্যানেজ করে শট নিতে বেশ সমস্যা হচ্ছিল। তাও মাত্র একটার বেশি গেম প্রতিপক্ষকে জিততে দিইনি বলে ভাল লাগছে।” মারে জুনিয়র পর্যায় থেকে তাঁর সমসাময়িক জার্মান প্রতিদ্বন্দ্বী বাচিঞ্জারকে ৬-৩, ৬-৩, ৬-৪ হারানোর পথে অবশ্য কোনও শারীরিক সমস্যায় পড়েননি। যে রকম সমস্যা তাঁকে প্রথম ম্যাচে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিল। গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়নদের তরুণ চ্যালেঞ্জারদের মধ্যে জিতেছেন কানাডার রাওনিক আর অস্ট্রেলিয়ার কিরগিওস-ও। দু’জনই তৃতীয় রাউন্ডে। তবে হেরে গিয়েছেন মেয়েদের দ্বিতীয় বাছাই সিমোনা হালেপ এবং দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ভেনাস উইলিয়ামস। আর এ সবের মধ্যে মিক্সড ডাবলসে প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকেছেন দুই বর্ষীয়ান ভারতীয় লিয়েন্ডার পেজ ও রোহন বোপান্না। যথাক্রমে নিজের-নিজের বিদেশি সঙ্গী কারা ব্ল্যাক ও স্রোবোটনিককে নিয়ে।