শেষ ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ৩ বলে ৩ রান। চতুর্থ বলটা উড়ে গেল বাউন্ডারি পেরিয়ে গ্যালারিতে। তাঁর সঙ্গেই শেষ হয়ে গেল ভারতের কাপ জয়ের সব স্বপ্ন। বলটা যখন সবার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিল, তখনই পিচের মধ্যে দাঁড়িয়ে মাথাটা নামিয়ে নিয়েছিলেন বিরাট কোহালি। বুঝে গিয়েছিলেন, ব্যাট হাতে তাঁর সব প্রচেষ্টা এত দিনের সব ম্যাজিক এক লহমায় শেষ হয়ে গেল। বলটা বাউন্ডারির বাইরে পৌঁছে যেতেই ক্যারিবিয়ান উৎসবে যখন মাতলেন সাইমন্স, চার্লসরা তখন মাঠের মাঝে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে স্বপ্নের সেই নায়ক। যাঁকে নিয়ে কত হিসেব, যাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত গোটা বিশ্ব আজ যেন তিনি ডুবে গেলেন হতাশায়। ক্যাপ্টেন কুল তখন এসে পিঠ চাপড়ে দিলেন। হয়তো বলতে চাইলেন, ‘তোমার হতাশার কিছু নেই। এত দূর তো তুমিই আনলে।’
তত ক্ষণে বুক চাপড়ে ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার উৎসবে মেতেছেন রাসেল। দলের বেঞ্চের সামনে দাঁড়়িয়ে চোখ মুছতে দেখা গেল এক ক্যারিবিয়ান মহিলাকে। আনন্দাশ্রু। ঠিক সেই সময়ই ক্যামেরা ঘুরে গেল গ্যালারির দিকে। একরাশ হতাশা নিয়ে মাথা নামিয়েছেন ধোনির স্ত্রী সাক্ষী। সঙ্গে একই অবস্থা রোহিত শর্মার স্ত্রীরও। গ্যালারিতে তখন ঝড়ের আগের পূর্বাভাস হলেও আর ঝড় ওঠার কোনও রাস্তা রইল না। বিরাট ঝড় এই সিরিজের জন্য শেষ হয়ে গেল। শেষ হয়ে গেল ভারতের সব আশা। ইডেন গার্ডেন্সে ফাইনালের গুরুত্বটাই মাটি হয়ে গেল। ভারত নেই। এটাই শেষ কথা।
সব সময় যে ভাগ্য কাজ করে না। তা আবারও প্রমাণও হল। মনে করা হচ্ছিল কোহালি নির্ভর ভারতের কী হবে যদি আজ কোহালির ব্যাট থেকে রান না আসে? কিন্তু তেমনটা হয়নি। বরং রান এসেছে, এসেছে উইকেটও। শুধু ‘উইনিং লাক’ আজ ধোঁকা দিয়ে গেল ক্যাপ্টেন কুলকে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে যেমন হার্দিক পাণ্ড্যকে এনে ফাটকা খেলেছিলেন। এ দিনও শেষ ওভারে বিরাটকে নিয়ে এলেন ধোনি। সে দিন ফাটকা কাজে লেগেছিল এ দিন লাগল না। যদিও ওভার পড়ে ছিল শুধু অশ্বিনের। কিন্তু তাঁর উপর ভরসা রাখতে পারেননি ধোনি। আসলে হেরে গেলে অনেক কিছু নিয়েই কথা ওঠে। তাই হয়তো উঠবে আরও কয়েকটা দিন।
আরও খবর
কোহালি ম্যাজিক সত্ত্বেও শেষ হাসি ক্যারিবিয়ানদের