সতর্কতা: ইংল্যান্ডের ডম সিবলি ভুল করে থুতু ব্যবহার করেছেন বলার পরে আম্পায়াররা স্যানিটাইজ় করছেন বল। এপি
টেস্ট ক্রিকেটের দীর্ঘ ইতিহাসে এমন অদ্ভুত ঘটনা কখনও ঘটতে পারে বলে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। একজন ফিল্ডার থুতু দিয়ে বল পালিশ করার পরেই ছুটে আম্পায়ারের কাছে গিয়ে বলছে, ভুল হয়েছে! এবং, আম্পায়াররা পকেট থেকে ‘স্যানিটাইজ়ড ওয়াইপ’ বার করে বল পরিষ্কার করছে!
এমন অদ্ভুত ঘটনাই ঘটতে দেখলাম ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে। কোভিড অতিমারির মধ্যে খেলা, আইসিসি নিয়মে তাই থুতু দিয়ে বল পালিশ করা যাবে না। নতুন আইন চালু হওয়ার পরে ইংল্যান্ডের ডমিনিক সিবলিই হল প্রথম ক্রিকেটার যে থুতু দিয়ে বল পালিশ করল! ঘটনাটা ঘটেছে ৪১ ওভারের ঠিক পরে। সিবলি থুতু দিয়ে বল পালিশ করেই বুঝে যায়, ভুল করে ফেলেছে। এর পরেই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা গিয়ে আম্পায়ারকে ব্যাপারটা জানায়। যেটা একটা ভাল ব্যাপার। দেখলাম, আম্পায়াররা স্যানিটাইজ়ড ওয়াইপার (অ্যালকোহলে ভেজানো টিসু) দিয়ে বল ভাল করে মুছে দিচ্ছে।
এখানে একটা প্রশ্ন আছে। এত দিন বলে বাইরের কোনও পদার্থ লাগানো নিষিদ্ধ ছিল। লাগালে সেটা বল বিকৃতি হয়েছে বলে ধরা হত। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্যাফ ডুপ্লেসি ‘জেলি’ লাগিয়ে শাস্তি পেয়েছিল। এখানে আম্পায়াররা বলে অ্যালকোহল লাগাল। এতে খুব সামান্য হলেও বলে একটু পরিবর্তন হতেই পারে। বল ভিজতে পারে। তা হলে কি এটাকে আইনসিদ্ধ বল বিকৃতি বলা হবে?
আইসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দু’বারের বেশি বলে থুতু লাগালে সংশ্লিষ্ট দলের পাঁচ রান জরিমানা হবে। ইংল্যান্ডের পরের চারটে টেস্টে (পাকিস্তানের সঙ্গে তিনটে আছে) কোনও দলের যদি পাঁচ রান জরিমানা হয়, আমি একেবারেই আশ্চর্য হব না। কারণ, থুতু দিয়ে বল পালিশ করাটা এতটাই ক্রিকেটারদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে যে, এই ভুলটা স্বাভাবিক।
তবে বলে থুতু, অ্যালকোহল যা-ই লাগানো হোক বা না হোক, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ড বোলাররা কিন্তু চতুর্থ দিন চা বিরতির আগে পর্যন্ত খুব একটা দাগ কাটতে পারেনি। যদিয়ো ৪৫.৪ ওভারের মাথায় স্যাম কারেনের একটা দুর্দান্ত লেগ কাটারে ফিরে যায় শেই হোপস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নৈশপ্রহরী আলঝারি জোসেফ তিন নম্বরে নেমে এক ঘণ্টার উপরে ব্যাট করল। চা বিরতির পরে ছবিটা বদলে দিল স্টুয়ার্ট ব্রড। নতুন বলে তুলে নিল তিন উইকেট। যার জেরে চার উইকেটে ২২৭ থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ খুব তাড়াতাড়ি ২৫২-৭ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২৮৭ করে ফলো অন বাঁচায় জেসন হোল্ডাররা। এর পরে দ্রুত রান তোলার উদ্দেশে জস বাটলার আর বেন স্টোকসকে দিয়ে ইনিংস ওপেন করায় ইংল্যান্ড। চতুর্থ দিনের শেষে তাদের রান ৩৭-২। এগিয়ে ২১৯ রানে। কোভিড-১৯ বদলে দিয়েছে অনেক কিছুই। এ বার বল বিকৃতির সংজ্ঞাটাই বদলায় কি না, দেখার।