অশ্বিন-টুইটে স্টাম্পড হজ

টেস্টের মঞ্চ থেকে ক্রিকেট সরে যাচ্ছে এ বার আইপিএল নামক টি-টোয়েন্টি ধমাকায়। তবু ভারত আর অস্ট্রেলিয়া— দু’দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে গোলাবর্ষণ থামছে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৫
Share:

টেস্টের মঞ্চ থেকে ক্রিকেট সরে যাচ্ছে এ বার আইপিএল নামক টি-টোয়েন্টি ধমাকায়। তবু ভারত আর অস্ট্রেলিয়া— দু’দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে গোলাবর্ষণ থামছে না।

Advertisement

বৃহস্পতিবারে যেটা নতুন ছিল, তা হল, দু’তরফেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সদিচ্ছা ছিল। বিরাট কোহালি যেমন টুইটারে লিখলেন, অস্ট্রেলীয়দের সঙ্গে আর বন্ধুত্ব করবেন না বলে তাঁর যে মন্তব্যটি নিয়ে হইচই হচ্ছে, সেটি অনেক ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে। তিনি সাধারণ ভাবে সব অস্ট্রেলীয়কে নিয়ে এমন কথা বলেননি। কোহালি লেখেন, ‘সব অস্ট্রেলীয় নয়, কাউ কাউকে বোঝাতে চেয়েছি। বলতে চেয়েছি, কারও কারও সঙ্গে আর বন্ধুত্ব হবে না। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে অনেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে আমি খেলেছি। তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল ছিল, ভাল থাকবেও’।

আরসিবি-তে বিরাটের তারকা অস্ট্রেলীয় সতীর্থ হচ্ছেন শেন ওয়াটসন। চোটের জন্য খেলতে না পারলেও ছিলেন মিচেল স্টার্ক। অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলারকে যদিও এ বারই ছেড়ে দিয়েছে আরসিবি। কারণ, চোটের জন্য তাঁর খেলার সম্ভাবনা নেই। তবে অতীতে একাধিক বার স্টার্কের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শোনা গিয়েছে আরসিবি অধিনায়ক কোহালির গলায়।

Advertisement

তাঁর টুইটের কাছাকাছি সময়ে আর একটি টুইট ভাইরাস হয়ে যায়। সেটি ব্র্যাড হজের ক্ষমা প্রার্থনা। ধর্মশালায় না খেলায় কোহালিকে আক্রমণ করেছিলেন হজ। অস্ট্রেলীয় টিভি-তে বিশেষজ্ঞ হিসেবে বসে হজ দাবি করেন, তিনি জানেন কোহালি কেন শেষ টেস্টে খেললেন না। আর কারণটা হচ্ছে, তিনি আইপিএলের জন্য নিজেকে বাঁচিয়ে রাখছেন। সেখানেই না থেমে প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার যোগ করেন, অতীতে তিনি এমন অনেক ক্রিকেটারকে দেখেছেন। যাঁরা টেস্টে পুরো গা লাগিয়ে না খেলে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখছে আইপিএল বা লোভনীয় অন্যান্য টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের জন্য। যা নিয়ে শুরু বিতর্ক।

সমস্যা হচ্ছে, হজ নিজেই আইপিএলের সদস্য। এ বারেও তিনি গুজরাত লায়ন্সের প্রধান কোচ। ঠিক তার আগে আগেই কোহালি এবং আইপিএল নিয়ে তাঁর নেতিবাচক মন্তব্যে তাই বিভিন্ন মহলে খুব সমালোচনা হতে থাকে। সম্ভবত সেই চাপেই হজ ডিগবাজি খান। বৃহস্পতিবার টুইটারে লম্বা ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি ভারতীয় ক্রিকেটভক্ত এবং কোহালির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।

দীর্ঘ ব্যাখ্যায় তিনি লেখেন, ভারতে আসা এবং আইপিএলে খেলা বা কোচিং করানো তিনি খুব উপভোগ করেছেন। তাঁর এমন মন্তব্য করা উচিত হয়নি। ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পাশাপাশি কোহালিকে রাতারাতি ‘অনুপ্রেরণামূলক অধিনায়ক’ বলেও বর্ণনা করেন। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে, আইপিএল শুরুর আগে ভারতীয় বোর্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজির চাপে পড়েই কি হজ ক্ষমা চাইলেন?

হজের টুইটেই যদিও নাটক শেষ হল না। এর পর টিপ্পনি কেটে দু’দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ককে ফের উস্কে দেন অশ্বিন। তিনি আবার টুইটারে লেখেন, ‘৩০ মার্চ ওয়ার্ল্ড অ্যাপলজি ডে হিসেবে গণ্য হতে পারে’। বিশ্ব ক্ষমা দিবস অবশ্যই হজের ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে কটাক্ষ করে লেখা। টুইটারে বিকেলের মধ্যেই অশ্বিনের এই মন্তব্যে ৬,০০০ ‘লাইক’ পড়ে। ১,৫০০ জন রিটুইট করেন। ক্রমশ তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তেও থাকে।

হজের ডিগবাজির পিছনে আরও একটি কারণ আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধর্মশালার টেস্ট জেতার পরেই কোহালি বলে দেন, তিনি আইপিএলের শুরুতেও খেলার মতো অবস্থায় আসেননি। আরও সপ্তাহ দেড়েক লাগবে সেরে উঠতে। তার মানে প্রথম দুই ম্যাচে অন্তত তিনি খেলতে পারবেন না। সেই তথ্য জানার পরেই হজ বুঝে যান, গণ্ডগোল করে ফেলেছেন। কিন্তু ক্ষমা চেয়েও নিস্তার নেই তাঁর। স্টাম্পড হয়ে গেলেন অশ্বিনের টুইট-দুসরায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement