পিতা-পুত্র বনাম সুভাষ ভৌমিক
বিদেশিরা ‘পালিয়েছেন’ অনেকদিন। তাতে কী? মোহনবাগানকে আটকাতে জোড়া কোচ নামাচ্ছে এরিয়ান।
অনেকেই চমকে উঠতে পারেন! একটা টিমের দু’টো কোচ। সে আবার হয় নাকি?
হয়। আর শনিবার বারাসত স্টেডিয়ামে সেই বিরল ঘটনাই ঘটতে চলেছে। আজ, মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সরকারি ভাবে এরিয়ান কোচ তো রাজদীপ নন্দী। তবে টিমের আসল রিমোট থাকবে রাজদীপের বাবা রঘু নন্দীর হাতে। যিনি মাঠে না থেকেও ভীষণ ভাবে থাকবেন ম্যাচে। শুক্রবার রঘু বলছিলেন, “আমি মাঠে যাব না। ক্লাবের টিভিতে ম্যাচ দেখব। তবে মোহনবাগানকে আটকানোর জন্য যে সব টিপস দেওয়ার ছেলেকে দিয়ে দিয়েছি। আমার বিশ্বাস, পয়েন্ট ছাড়া ফিরবে না।”
রঘুর ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেলে অবশ্য প্রবল সমস্যার মুখে পড়ে যেতে পারেন আর একজন— সুভাষ ভৌমিক। লিগের বাকি চারটে ম্যাচই যে মোহনবাগানে টিকে থাকার জন্য তাঁর শেষ লাইফলাইন, সেটা কার্যত ঠিক করে ফেলেছেন কর্তারা! তবে যা পরিস্থিতি, তাতে খেতাব জিততে গেলে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডকে চারটে ম্যাচ তো জিততেই হবে, টালিগঞ্জ আগ্রগামী-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের দিকেও নজর রাখতে হবে। কারণ আর্মান্দো কোলাসো আর সুব্রত ভট্টাচার্যের দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগ হলেই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আসবে কাতসুমিদের সামনে। যদিও মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল ভট্টাচার্যের দাবি, “মোহনবাগান ক্লাব অন্যদের দয়ায় বেঁচে থাকে না। আমাদের এখন লক্ষ্য, বাকি চারটে ম্যাচ জেতা। চ্যাম্পিয়ন হওয়া না হওয়া নিয়ে ভাবছি না।” শঙ্করলাল না ভাবলেও, এরিয়ানের বিরুদ্ধে পয়েন্ট হারালে কলকাতা লিগের সঙ্গে বাগান টিডি-র ভবিষ্যৎ-ও যে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
এ দিকে, হাওয়া বদলের ছবি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট বাগানে। কলকাতা লিগের শুরুতে হ্যাটট্রিক করে যে টিমের সমর্থকদের ক্লাবমুখী করেছিলেন কাতসুমি-জেজেরা, ডার্বির পরে তাঁরা সবাই উধাও। সেই চনমনে, ফুরফুরে পরিবেশটাই নেই! ক্লাব-কর্তারা টিডি সুভাষের মুখ সেলাই করে দিয়েছেন ফুটবলারদের মতো। বোয়া-ফাতাইদের শরীরী ভাষাতেও যে বাড়তি আত্মবিশ্বাসের ছবি ফুটে উঠছে, সেটাও নয়। বাগান কোচের অবশ্য দাবি, “ডার্বির পরের ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়। সাইকে হারানোর পরে টিমের মনোবল বেড়ে গিয়েছে। এই ধারাবাহিকতা পরের ম্যাচগুলোতে ধরে রাখতে হবে।”
কিন্তু ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য যে সব রসদ দরকার, সেটা কি মোহনবাগানে আছে? আগের ম্যাচেই পয়েন্ট তালিকার নীচের সারিতে থাকা একটা দলের বিরুদ্ধে ধুঁকতে ধুঁকতে জয়। তার ওপর দলের বেশিরভাগ ফুটবলার আইএসএল খেলতে বেরিয়ে যাওয়ায় আঠারো জনের টিম বানাতেই কালঘাম ছুটছে বাগানের। এই পরিস্থিতিতে সুভাষকে স্বস্তি দিতে পারে এরিয়ানের বিদেশি-সমস্যা। রাজদীপের অভিযোগ, “বহু দিন প্র্যাকটিসে আসছে না গডউইন এবং স্ট্যানলি (জুনিয়র)। শনিবারের ম্যাচে ওদের টিমে রাখছি না।” ক্লাব সূত্রের খবর, এরিয়ানের দুই বিদেশিকেই শোকজ করা হয়েছে।
শনিবারে কলকাতা লিগ
মোহনবাগান: এরিয়ান (বারাসত ৪-০০)
বি এন আর: কালীঘাট এম এস (যুবভারতী ৩-৩০)