মঙ্গলবার ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের যা হাল দেখলাম, তাতে একটা কথা বলেই দেওয়া যায়। রবিবার এজবাস্টনে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচে এগিয়ে থাকবে বিরাট কোহালিরাই।
বহু দিন বাদে ভারতের কাছ থেকে একটা অসাধারণ টিম গেম দেখতে পেলাম। ব্যাটসম্যানরা ৩২৪ রান তুলে দেওয়ার পরে বাংলাদেশ শেষ হয়ে গেল ৮৪ রানে। ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিং আমরা অনেক দেখেছি। কিন্তু এ রকম আগুনে পেস বোলিং অনেক দিন দেখিনি।
ভুবনেশ্বর কুমার গতি একটু বাড়াতে পারলে যে ওকে সামলানো মুশকিল, তা জানাই ছিল। ইদানীং সেটাই দেখা যাচ্ছে। বিলেতের আবহাওয়ায় সুইংটাও ভাল পাচ্ছে। এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাটসম্যানদের কিন্তু ও সমস্যায় ফেলে দেবে।
শুধু ভুবি কেন, এ দিন ওভালের বাইশ গজে আমাদের পেসারদের বলে গতি, বাউন্স, সুইং যা নিখুঁত মিশেল দেখলাম, তাতে মনে হল, বিশ্বের সেরা পেস আক্রমণ দেখছি। ওয়ানডে-তে শেষ কবে ভারতকে চারটে স্লিপ নিয়ে বোলিং করতে দেখেছি, মনে পড়ে না। ভুবি, উমেশ— দু’জনেই প্রথম পাঁচ ওভারে তিনটে করে উইকেট তুলে নিল। প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে যাবতীয় আগ্রহ ওখানেই শেষ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কোহালি-কুম্বলে এখন দুই মেরুতে
ভারতীয় পেস আক্রমণের পারফরম্যান্স দেখার পরে বলতে বাধ্য হচ্ছি, রবিবার এজবাস্টনে দুই স্পিনারে খেলা মুশকিল হবে বিরাটদের। এক জন স্পিনার বাছতে হলে আমার পছন্দ রবীন্দ্র জাডেজাই। কারণ ফিল্ডিং আর ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে-তে জাডেজাই এগিয়ে।
সম্বরণের ১১
• রোহিত শর্মা • শিখর ধবন • বিরাট কোহালি • অজিঙ্ক রাহানে • কেদার যাদব • এমএস ধোনি • হার্দিক পাণ্ড্য • রবীন্দ্র জাডেজা • ভুবনেশ্বর কুমার • উমেশ যাদব • যশপ্রীত বুমরা
প্রথম দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচ দেখার পরে বলতে হবে রবিবার তো বটেই, টুর্নামেন্টেও ভারত হট ফেভারিট। ভারতের যা ব্যাটিং অর্ডার, তাতে আট নম্বর ব্যাটসম্যানের (জাডেজা) কাছ থেকেও বড় রান আশা করা যায়। আর রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে তো বিরাটরাই এখন সেরা। তবে একটা জায়গা নিয়ে একটু সমস্যা আছে। যুবরাজ সিংহের জায়গাটা। যুবরাজকে যে অবস্থায় দেখলাম, তাতে আমার মনে হয় না ও রবিবার খেলতে পারবে। ফিট থাকলেও ওই ম্যাচে ওকে খেলানো উচিত নয়। ও তো কোনও প্রস্তুতি ম্যাচই খেলতে পারেনি।
মঙ্গলবার দীনেশ কার্তিক ৭৭ বলে ৯৪ করে গেল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি থাকলে ওকে প্রথম এগারোয় রাখতাম না। কার্তিককে আমার বড় ম্যাচের প্লেয়ার বলে মনে হয় না। তার জায়গায় অজিঙ্ক রাহানে এনেক এগিয়ে। এমনকী কেদার যাদবও (৩১) ওর আগ্রাসী মনোভাবের জন্য আমার কাছে অটোমেটিক চয়েস। আর টিমে ধোনি থাকা মানে কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে অন্য কারও নাম ভাবা সম্ভব নয়। তবে ৯৪ রানে কার্তিককে প্যাভিলিয়নে ফেরানোর সিদ্ধান্তটা মানা গেল না।
এ বার আইপিএলের সেরা ফসল হার্দিক পাণ্ড্য। স্লগে যেমন ব্যাটিং করে, বোলিংটাও তেমন। ও একটা অদ্ভুত শট মারে, যেটা মিড অন মিড উইকেটের মাঝখান দিয়ে ঝড়ের বেগে বাউন্ডারিতে চলে যায়। ফিল্ডাররা নাগালই পায় না। মঙ্গলবারও ওর কাছ থেকে ৫৪ বলে ৮০ রানের দারুণ একটা ইনিংস পাওয়া গেল। যেটা বলে দিচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিততে গেলে লোয়ার অর্ডারে হার্দিকের থেকে এ রকম ঝোড়ো ইনিংস আরও লাগবে।