দুরন্ত লড়ে ফাইনালে সাত্ত্বিক-চিরাগ জুটি

ডাবলসে এই মুহূর্তে চিরাগদের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ১৬। যদিও তাইল্যান্ড ওপেনে তাঁদের বাছাই তালিকায় জায়গা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৩
Share:

অসাধারণ: কোরীয় প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয় সাত্ত্বিক-চিরাগ জুটির। তাইল্যান্ড ওপেনে আজ খেতাবের হাতছানি তাঁদের সামনে। ফাইল চিত্র

বিরল নজির গড়লেন সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি ও চিরাগ শেট্টি। প্রথম ভারতীয় ডাবলস জুটি হিসেবে তাঁরা কোনও বিডব্লিউএফ সুপার ৫০০ টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলেন। শনিবার তাইল্যান্ড ওপেনে এই ভারতীয় জুটি ২২-২০, ২২-২৪, ২১-৯ ফলে হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার জুটি কো সিয়ং পিউন এবং শিন বেক চিয়োলকে।

Advertisement

ডাবলসে এই মুহূর্তে চিরাগদের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ১৬। যদিও তাইল্যান্ড ওপেনে তাঁদের বাছাই তালিকায় জায়গা হয়নি। শনিবার তাঁরা ম্যাচ জেতেন ১ ঘণ্টা ৩ মিনিটে। ২০১৯ ব্যাডমিন্টন মরসুমে প্রথম এই ভারতীয় জুটি কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল। চিরাগরা ২০১৮-র কমনওয়েলথ গেমসে রুপোজয়ী। ব্যাঙ্ককে রবিবার ফাইনালে তাঁদের খেলতে হবে তৃতীয় বাছাই চিনের লি জুন হুই এবং লিউ ইউ চেনের বিরুদ্ধে।

এই ভারতীয় জুটির মধ্যে বয়স কম সাত্ত্বিকের। আঠারো বছর। গত দু’বছর ধরেই তাঁকে ভবিষ্যতের তারকা বলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সার্কিটে তাঁকে যথেষ্ট সমীহ করা হচ্ছে। তাঁর জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশের আমালাপুরমে। সাত্ত্বিকের বাবা ও বড় দাদাও রাজ্য স্তরে নামী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। ২০১৪ সাল থেকে তিনি আছেন হায়দরাবাদের পুল্লেলা গোপীচন্দের অ্যাকাডেমিতে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেন ডাবলসে বিশেষজ্ঞ খেলোয়াড় হবেন।

Advertisement

সাত্ত্বিকের থেকে চার বছরের বড় চিরাগ মুম্বইয়ের খেলোয়াড়। পুরো নাম চিরাগ চন্দ্রশেখর শেট্টি। মাত্র সাত বছর বয়সে ব্যাডমিন্টনে হাতেখড়ি। পরিবারের সবাই চেয়েছিলেন তিনি এঞ্জিনিয়ারিং পড়ুন। কিন্তু চিরাগ ব্যাডমিন্টকে আরও বেশি সময় দিতে বেছে নেন বাণিজ্য বিভাগকে। তাঁর আদর্শ প্রকাশ পাড়ুকোন। একবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, মা তাঁর ব্যাডমিন্টন খেলার প্রবল বিরোধী ছিলেন। কিন্তু কমনওয়েলথ গেমসে ছেলেকে রুপোর পদক জিততে দেখে তিনি মত বদলান।

সাত্ত্বিক-চিরাগ জুটি হালফিলে ডাবলসে এক উজ্জ্বল নাম। তবে তাঁরা জুটি গড়ার পরে একটা বড় সমস্যা হয়। কারণ দু’জনই কোর্টের পিছন থেকে আক্রমণ করতে ভালবাসেন। পরে অবশ্য জুটির স্বার্থে সাত্ত্বিকই নেটের সামনে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় খেলতে শুরু করেন। এই জুটি তৈরির পিছনে প্রধান ভূমিকা দক্ষিণ কোরিয়ার কোচ কিন তাম হারের। সেটা প্রায় তিন বছর আগের কথা। এই জুটির প্রথম বড় সাফল্য ২০১৬-তে মরিশাস ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। তবে তাইল্যান্ড ওপেনের মতো বিডব্লিউএফ সুপার ৫০০ টুর্নামেন্টে এত বড় সাফল্য এই প্রথম। ছোটখাটো বেশ কিছু টুর্নামেন্টে আগে তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। আর ডাবলস ও মিক্সড ডাবলস দু’বিভাগেই সাত্ত্বিক বারবার নজর কেড়েছেন।

শনিবার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে সাত্ত্বিক বলেছেন, ‘‘মনে হয় এখন আমরা আগের থেকে অনেক বেশি মাথা ঠান্ডা করে খেলতে শিখেছি। কোরীয় জুটির বিরুদ্ধে আমাদের জয়টা বিশেষ তাৎপর্যময়, কারণ সার্কিটে ওদের পরিচিতি অনেক বেশি। এই জয় ফাইনালে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। কাল নিজেদের সেরাটা দিয়ে দেশকে গর্বিত করার চেষ্টা করব।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আমরা এত দিন এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করেছিলাম। এ বার আসল কাজটা করতে হবে ফাইনালে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement