অবিস্মরণীয় জুটি। তামিমের যোগ্য সঙ্গত ইমরুলের (১৫০)।
চব্বিশ ঘণ্টা আগে স্বপ্নটা দেখা শুরু হয়েছিল। আজ সেই স্বপ্নটাই বাস্তব হয়ে গেল। যখন ওপেনিং জুটিতে ৩১২ রান তুলে পাকিস্তানকে আটকে দিলেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান— তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস। প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকে শনিবার দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ তুলল ৫৫৫-৬। একই সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলে গেলেন তামিম (২০৬)। সফরে ওয়ান ডে সিরিজে সব ক’টা ম্যাচে হার পাকিস্তানের, হার টি-টোয়েন্টিতেও। এই অবস্থায় টেস্টে জয়ের আশা জাগিয়ে তুলেও পারল না পাকিস্তান— পারল না দুই বাঙালি ব্যাটসম্যানের সোজন্যে। তামিমের পাশাপাশি ইমরুল করলেন ১৫০ রান। আটটা টেস্টে হারের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে প্রথম ড্র-টিও আদায় করে নিল বাংলাদেশ। যার পরে অবশ্য পাকিস্তান ক্রিকেট মহলে ঝড় উঠেছে। মহম্মদ উফসুফের মতো প্রাক্তন বলেছেন, ‘‘এই ড্র আমাদের মতো প্রাক্তনদের কাছে হারের সমান।’’
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি এবং সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এত দিন ছিল মুশফিকুর রহিমের (২০০)। এ দিন তা ভেঙে দিলেন তামিম। ম্যাচের পর বাংলাদেশ মি়ডিয়ায় মুশফিকুরের মন্তব্য, ‘‘একটু খারাপ তো লাগছেই। নিজের রেকর্ডটা ভেঙে গেল।’’ যা শুনে তামিম বলছেন, ‘‘নিশ্চয়ই রসিকতা করেছে। আমার ডাবল সেঞ্চুরিতে ও দারুণ খুশি হয়েছে।’’ শুধু মুশফিকুর কেন, গোটা বাংলাদেশ ক্রিকেট মহলই খুশি। বাংলা ক্রিকেটে এক নতুন যুগের সূচনা দেখছে তারা।
তামিমের (২০৬)দুশোর লাফ। ছবি: এএফপি
মুশফিকুরের রেকর্ড ভাঙার পর মুশফিকুর-স্তুতিই শোনা যাচ্ছে তামিমের মুখে। বলছেন, ‘‘মুশফিকুর সব সময় আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আমার মনে হয়, আগামী এক বছরের মধ্যে আমার রেকর্ডটা ভেঙে যাবে। আর মুশফিকুরই ভেঙে দেবে। আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান তো ও-ই।’’
গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট যে উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে উঠছে, তারই একটা ধাপ দেখা গেল এই খুলনায়। তামিম-ইমরুল শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেলেন না, ক্রিকেট বই থেকে মুছে দিলেন নানা রেকর্ডও। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই ওপেনার মিলে খেলেছেন ৪৫৪ বল, ৫৫৬ মিনিট। ভাঙলেন কলিন কাউড্রে-জিওফ পুলারের দ্বিতীয় ইনিংসে করা ২৯০ রানের রেকর্ড। যে রেকর্ড টিকে ছিল ৫০ বছরের বেশি!