উত্তেজনা! উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়! তীব্র কথা কাটাকাটি! মনোনয়নপত্র পরীক্ষা শুরুর আগেই রণক্ষেত্র মোহনবাগান তাঁবু।
শুক্রবার বিকেলে বিরোধী গোষ্ঠী মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়েই আপত্তি তুলে দিল। তাঁদের নিশানায় স্বয়ং নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়।
বিরোধী শিবিরের টেনিস সচিব পদপ্রার্থী দেবাশিস সাহার দাবি, ‘‘নোটিসের সঙ্গে মিনিটসের যে কপি আমাদের পাঠানো হয়েছে তাতে লেখা—মনোনয়ন ভেরিফিকেশন কপিতে ক্লাব প্রেসিডেন্ট আর সচিব সই করেছেন। কিন্তু ৪১(এফ) ধারা অনুযায়ী, সেটা একমাত্র কমিশনের চেয়ারম্যানই করতে পারেন।’’
এর পরেই ঝামেলার সূত্রপাত!
নোটিস হাতে পেয়ে বিরোধীদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্তবাবুকে কড়া মেল পাঠানো হয় বৃহস্পতিবার রাতেই। আবার শুক্রবার মনোনয়নপত্র পরীক্ষা শুরুর আগেও একটা প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে, একটা সময় শাসক দলের কর্তাদের সঙ্গে সরাসরি বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন বিরোধী গোষ্ঠীর ফুটবল সচিব পদপ্রার্থী সুব্রত ভট্টাচার্য। যার আঁচ টের পাওয়া গেল ক্লাব লনের বাইরে দাঁড়িয়ে সুব্রত যখন বললেন, ‘‘আমরা আদালতে যাচ্ছি। নিয়ম বলে এখানে আর কিছু নেই।’’
তবে এই প্রতিবাদ কতটা দীর্ঘজীবী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ বিরোধী শিবিরেই। বিরোধীদের এক দল যখন মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে সরব, তখন তাদের গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য, আইনজীবী পার্থসারথী মিত্র বললেন, ‘‘ওটা একটা ভুলমাত্র। সেটা কমিশনের চেয়ারম্যানও মেনে নিয়েছেন। আর নোটিসে যাই লেখা থাকুক না কেন, ভেরিফিকেশন কপিতে চেয়ারম্যানের সই-ই আছে। আমরা এই নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে চাই না।’’
প্রশ্ন উঠছে সুব্রতর ভূমিকা নিয়েও। তিনি আদালতে যাওয়ার হুমকি দিলেও নিজে কিন্তু মনোনয়নপত্র পরীক্ষার কপিতে সই করে এসেছেন। প্রতিবাদ কি তা হলে শুধু মুখেই? সুব্রতর কাছ থেকে অবশ্য কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। উল্টে তাঁর ক্ষোভ, ‘‘আমরা কমিশনের কাজে সন্তুষ্ট নই। মনোনয়নপত্র পরীক্ষা হচ্ছে। ওই ঘরে তো দু’পক্ষের এক জন করে সদস্যর থাকা উচিত।’’ শাসকগোষ্ঠীর অন্যতম মুখ, বাগানের অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত পাল্টা বললেন, ‘‘আমরা কমিশনের কাজে সন্তুষ্ট। সুশান্তবাবুর তত্ত্বাবধানে স্বচ্ছ নির্বাচন হবে বলেই আশা করছি।’’
এ দিন বিরোধী শিবিরের একটা মনোনয়নপত্র বাতিল হল। টেনিস সচিব পদে দু’জনের নাম ছিল। তাঁদের মধ্যে কল্যাণ সারেঙ্গির সদস্য কার্ড নিয়ে সমস্যা থাকায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়।