স্বস্তি: একসঙ্গে অনুশীলন করাতে চান খালিদ-সুভাষ। নিজস্ব চিত্র
ফের সন্ধির বার্তা সুভাষ ভৌমিক ও খালিদ জামিলের! এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার বিবাদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) ও কোচ।
সুভাষ ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই খালিদের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছেন। কিন্তু গত সপ্তাহে মহম্মদ আল আমনা-র সঙ্গে কাতসুমি ইউসা-র বিবাদের জেরে দূরত্ব কমেছিল তাঁদের মধ্যে। দু’জনেই দাবি করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। একসঙ্গেই কাজ করবেন।
কিন্তু মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সম্পূর্ণ বদলে যায় পরিস্থিতি। ফের সুভাষ-খালিদ ব্যক্তিত্বের সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লাল-হলুদ অন্দরমহলের আবহ। বৃহস্পতিবার সকালেও ইস্টবেঙ্গল টিডি-র বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ ওঠে খালিদ-কে অনুশীলন করাতে না দেওয়ার। আইজল এফসি-কে গত মরসুমে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করা কোচ চেয়েছিলেন সুভাষ ও ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে। কিন্তু রাজি হননি আসিয়ানজয়ী কোচ। শুক্রবার সকালেও ভেস্তে যায় আলোচনার পরিকল্পনা।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে এ দিন সকাল আটটা থেকে অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল ইস্টবেঙ্গলের। এক ঘণ্টা আগেই মাঠে চলে পৌঁছে যান খালিদ। অনুশীলন করানোর জন্য দ্রুত তৈরি হয়ে মাঠেও নেমে পড়েন। কিন্তু অধিকাংশ ফুটবলারকে নিয়ে সুভাষ চলে যান মাঠের অন্য দিকে। শুরু করে দেন অনুশীলন। খালিদের কাছে ছিলেন মাত্র ছয় ফুটবলার! যাঁরা কেউ-ই প্রথম একাদশে নিয়মিত নন! এখানেই শেষ নয়। ফুটবলার কম থাকায় ম্যাচ অনুশীলনের সময় খালিদ নিজেই নেমে পড়লেন খেলতে। ঘণ্টা দেড়েকের অনুশীলনে এক বারের জন্যও কেউ কারও সঙ্গে কথা বললেন না। এই পরিস্থিতিতে এ দিন সকালেও ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকা অ্যালভিটো ডি’কুনহা এবং ফুটবল সচিব উদ্যোগ নিয়েছিলেন টিডি ও কোচকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিতর্ক মেটাতে। ফের বেঁকে বসেন সুভাষ। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নাটকীয় পরিবর্তন টিডি বনাম কোচ চিত্রনাট্যে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে এক শীর্ষ কর্তার উপস্থিতিতেই আলোচনায় বসলেন সুভাষ ও খালিদ।
কী হল বৈঠকে? খালিদ বললেন, ‘‘সুভাষদার সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। শনিবার থেকে আমরা একসঙ্গেই কাজ করব। সুভাষদা আমার চেয়ে বয়স ও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে। ওঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘অসুস্থতার জন্য প্রথম দু’দিন অনুশীলনে আসতে পারিনি। সেখান থেকেই ভুল বোঝাবুঝি শুরু।’’
জানা গিয়েছে, সুভাষের সাহায্যও নাকি চেয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বৈঠকে তিনি টিডিকে বলেন, ‘‘আপনার পরামর্শ নিয়েই কোচিং করাতে চাই।’’ সুভাষ অবশ্য বৈঠকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। তাই খেলা ছাড়া অন্য কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলব না।’’ লাল-হলুদ শিবিরে এর আগেও সুভাষ-খালিদ সন্ধি হয়েছিল। তার স্থায়িত্ব কয়েক ঘণ্টার বেশি ছিল না। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হয় কি না, এখন
সেটাই দেখার।