অতীতের দিনগুলো মনে রেখে সামনের দিকে এগোতে চাইছেন মারকুটে সূর্য। ছবি - টুইটার
২০১৮ সালে ১৪ ম্যাচে ৫১২ রান। ২০১৯ সালে ১৬ ম্যাচে ৪২৪ রান। ২০২০ সালে ১৬ ম্যাচে ৪৮০ রান। গত তিন বছর মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের মিডল অর্ডারের তিনি মেরুদণ্ড। তাঁর ব্যাটের উপর ভর করে একাধিক ম্যাচ জিতেছে রোহিত শর্মার দল। তবুও কোনও অজানা কারণে জাতীয় দলে ব্রাত্য ছিলেন সূর্য কুমার যাদব। শুধু আইপিএল নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইয়ের হয়েও লাগাতার নিজেকে মেলে ধরেছেন। তবুও টিম ইন্ডিয়ার দরজা তাঁর জন্য খোলেনি। বারবার তাঁকে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। তবে এ বার মিলেছে সুযোগ। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের টি- টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বিরাট কোহালির দল। সেখানেই এসেছে নিজের জাত চেনানোর পালা।
যদিও অতীতের সেই কঠিন দিনগুলি ভুলে যাননি সূর্য। ব্রাত্য থাকার জ্বালায় অনেক রাত ঘুমোতে পারেননি। সব মনে আছে তাঁর। বলেছেন, “আমি একা সমুদ্রের ধারে হেঁটে বেড়াতাম। আমাকে এ ভাবে দেখে দেভিশা (স্ত্রী) ভয় পেত। খুব চিন্তায় থাকত। আসলে যন্ত্রণা ভোলার জন্য আমি একা থাকতে চাইতাম। হাতের কাছে যে ম্যাচ আছে সেখানে কী ভাবে ভাল খেলা যায় সেই সব বিষয় নিয়ে ভাবতাম। পরে অবশ্য আমার স্ত্রী ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল। ওর দিকে তাকিয়ে একগাল হাসলেই সব কিছু আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যেত।”
শুধু স্ত্রী নয়, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সতীর্থদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। বলছিলেন, “আইপিএলের শুরুটা মুম্বই থেকেই হয়েছিল। মাঝের কয়েকটা বছর কেকেআরে চলে যাই। পরে আবার পুরনো দলে ফিরে এলে সতীর্থরাই আমাকে আপন করে নেয়। আমি ভারতের হয়ে খেলার যোগ্য, সেই ভরসা ওরা জুগিয়েছিল। তাই আমিও মনে মনে ভাবতাম পরিশ্রম যখন করছি, সুযোগ তো একদিন আসবেই।”
বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় দলের সুযোগ পাওয়ার খবর কানে আসতেই যেন শূন্যে ভাসছিলেন। তাঁর কাছে যেন ব্যাপারটা ‘অবিশ্বাস্য’ মনে হয়েছিল। তবে সময় যত এগিয়েছে তিনি ততই স্থির হয়েছেন। তাই স্বপ্ন পূরণ হওয়া নিয়ে সূর্য বলছেন, “আগামী মাসে দেশের জন্য খেলতে পারব এটা ভেবে গর্বিত বোধ করছি। ছোটবেলা থেকে ক্রিকেট শেখার মুহূর্তগুলো চোখের সামনে ভাসছে। আমার বাবা-মা সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। ওঁদের অবদান ভোলার নয়। অতীতের সেই দিনগুলো বড্ড মনে পড়ছে।”
তাঁর জীবনে সবকিছুই বড় অদ্ভুতভাবে ঘটেছে। শেষ করার আগে সেটাও জানিয়ে দিলেন এই মুম্বইকর। বললেন, “সেদিন অনুশীলন শেষ করে ঘরে এসে বিশ্রাম করছি। এক কাপ চা খেয়ে স্নানে যাব। ঠিক সেই সময় ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবর পেলাম। যে আনন্দ পেয়েছিলাম সেটা বলে বোঝাতে পারব না।”