লুইস নর্টন দে মাতোসের যুব দল শেষ পর্যন্ত কী করে তা নিয়ে দেশ জুড়ে আগ্রহ রয়েছে। আজ সোমবার কলম্বিয়া ও বৃহস্পতিবার ঘানার সঙ্গে ম্যাচ রয়েছে ভারতের। তারপরই ঠিক হবে মাতোসের ভবিষ্যৎ।
সারা বিশ্বেই টিম হারলে কোচের উপর সবার আগে গিলোটিন নেমে আসে। ভারতের কোনও খারাপ ফল হলে কি মাতোসের চাকরি থাকবে? রবিবার ফুটবল হাউসের আবহাওয়া দেখে মনে হল যুব কোচকে রাখা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ফেডারেশন। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাতোসের সঙ্গে চুক্তি আছে ভারতের।
মাতোস বিশ্বকাপে যাই ফল করুন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই ফেডারেশন কর্তাদের। সচিব কুশল দাসের কথাতেই সেটা স্পষ্ট। রবিবার তিনি বলে দিলেন, ‘‘যে গ্রুপে ভারত পড়েছে সেটা শক্ত গ্রুপ। সেখানে ভারত যদি তিন ম্যাচে দশ-বারো গোল খায় সেটা স্বাভাবিক ঘটনা। বাস্তবের মাটিতে তো হাঁটতে হবে। আমাদের টিম তো প্রথম ম্যাচে খারাপ খেলেনি।’’ পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘‘মাতোসকে রাখা হবে কী না সেটা ঠিক করবে টেকনিক্যাল কমিটি।’’
টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান শ্যাম থাপা আবার সচিবের সঙ্গে একমত নন। ‘‘সবে একটা ম্যাচ হয়েছে। পুরো টুর্নামেন্ট শেষ হোক। তারপরে ঠিক করব কী হবে। তবে বেশি খারাপ কিছু হলে তো কোচ নিয়ে ভাবতেই হবে। অন্তত কমিটি তো সেটাই মনে করে।’’ শনিবার টেকনিক্যাল কমিটির সভায় মাতোসকে নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখানে অনেকেই যুব বিশ্বকাপ দলের কোচের রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজির সমালোচনা করেছেন বলে খবর।
ফেডারেশন যে ভাবনা নিয়ে কোচ ঠিক করে তাতে কমিটি নয়, শেষ কথা বলেন কর্তারাই। কিন্তু প্রশ্নটা উঠছে অন্য জায়গায়।
বিশ্বকাপ দল তৈরির জন্য ১৫ কোটি টাকার বেশি টাকা খরচ করেছে ফেডারেশন। ১৮টা দেশে অনুশীলন ম্যাচ খেলেছেন অনিকেত যাদব, অভিজিৎ সরকাররা। বিদেশি কোচ রয়েছেন টিমের সঙ্গে। তা সত্ত্বেও যদি এত খারাপ ফল হয় তা হলে লাভটা কী? প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অলিম্পিয়ানরা এই প্রশ্ন তোলায় চাপে পড়েছেন ফুটবল হাউসের কর্তারা। এ দিন সুব্রত ভট্টাচার্যের মতো আই লিগ জয়ী কোচও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘জানি না পরের দু’ম্যাচের ফল কী হবে। তবে পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলার জন্য বিদেশি কোচের দরকার পড়ে না।’’ কুশলবাবু অবশ্য প্রাক্তনদের এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। ‘‘এটা তো একটা প্রক্রিয়া। আমরা সবে শুরু করেছি। অন্যরা অনেক আগে থেকে এ সব করেছে। বিশ্বকাপে খেলা তো আর ছেলেখেলা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখুন নিউজিল্যান্ড যখন প্রথম যুব বিশ্বকাপ খেলেছিল তখন স্পেনের কাছে একটা ম্যাচে মনে হয় ১০ গোল খেয়েছিল।’’ চাপান-উতোরে একটা জিনিস স্পষ্ট মাতোসের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।