পুরস্কার মঞ্চে কর্তারা ব্রাত্য, বয়কটের ধ্বনি

ভারতীয় বোর্ডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও এ বার প্রবেশ নিষেধ হতে চলেছে অনেক শীর্ষস্থানীয় কর্তার। যা নিয়ে সারা দেশের ক্রিকেট কর্তাদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

নিষেধাজ্ঞা: পুরস্কার অনুষ্ঠানে আসতে পারবেন না শ্রীনিবাসন।

ভারতীয় বোর্ডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও এ বার প্রবেশ নিষেধ হতে চলেছে অনেক শীর্ষস্থানীয় কর্তার। যা নিয়ে সারা দেশের ক্রিকেট কর্তাদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

এই মুহূর্তে বোর্ডের প্রশাসনের দায়িত্বে রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট-নিযুক্ত তিন সদস্যের পর্যবেক্ষকের দল। বিনোদ রাইয়ের নেতৃত্বে বোর্ডের পর্যবেক্ষকেরা পুরস্কার অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন। বেঙ্গালুরুতে ৮ তারিখ হবে এই অনুষ্ঠান। প্রত্যেকটি রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, লোঢা কমিটির সংস্কারে পাশ করা কর্তারাই শুধু অনুষ্ঠানে আসার অনুমতি পাবেন।

এমনিতেই দেশ জুড়ে পর্যবেক্ষকের দল নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে তিন সদস্যের দলের কাজকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সমবেত আবেদন জমা পড়তে শুরু করেছে। বোর্ডের পদাধিকারীরা তো আবেদন করেইছেন, বিভিন্ন রাজ্য সংস্থাও আদালতের দ্বারস্থ হতে শুরু করেছে। বুধবারে যেমন প্রত্যাশা মতোই সিএবি গেল আদালতে। সিএবি-র আইনজীবী ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে বলেছি, অধিকারের বাইরে গিয়ে পর্যবেক্ষকেরা আমাদের কিছু কিছু নির্দেশ পাঠাচ্ছেন।’’ একই সঙ্গে তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক দলকেও চিঠি লিখেছে সিএবি। তাতে তারা জানিয়েছে, অধিকারের বাইরে গিয়ে দেওয়া নির্দেশ মানতে পারছি না।

Advertisement

এর মধ্যেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান নিয়ে নতুন নির্দেশে ক্ষোভ বেড়ে গিয়েছে। কর্তারা বলছেন, ‘‘পুরস্কার অনুষ্ঠানে অনেক পুরনো, বয়স্ক ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানোটা আমাদের বহু দিনকার রীতি। এখানেও কি তার মানে সত্তর বছর হয়ে গেলে কেউ আসতে পারবে না? এটা কেমন নির্দেশ হল?’’

রাতের দিকের খবর, বোর্ডের পুরস্কার অনুষ্ঠান বয়কটও করতে পারেন একাধিক রাজ্য সংস্থার কর্তারা। কয়েক জনে বুধবার রাতেই বলেই দিলেন, ‘‘সংস্থার প্রবীণ সদস্যদের প্রতি এটা অপমান। সেটা মেনে নিয়ে অনুষ্ঠানে যাওয়ার কোনও কারণ দেখছি না।’’ এমনকী, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্তও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে নেমেই পিচ-দর্শন স্মিথদের

সত্তর বছর পেরিয়ে যাওয়া শরদ পওয়ার মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থা থেকে এখনও সরেননি এন শ্রীনিবাসন। তাদের সচিবও থাকার অধিকার হারিয়েছেন। সিএবি-তে কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে পদ হারিয়েছেন। পর্যবেক্ষকের দলের পাঠানো নির্দেশ অনুযায়ী, এঁরা কেউ অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন না।

অথচ, বোর্ডে এত দিন ধরে বার্ষিক পুরস্কার ছিল অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ও প্রশাসকদের সম্মান জানানোর একটা মঞ্চ। প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা আসেন। বর্তমান তারকারা সস্ত্রীক থাকেন। ভারতীয় বোর্ডের কৃতী প্রশাসকদের হাত দিয়ে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এ বার যা পরিস্থিতি, কারও কারও আশঙ্কা হচ্ছে, ফাঁকা চেয়ার-টেবল না পড়ে থাকে। যদি বেশির ভাগ রাজ্য সংস্থা অনুষ্ঠান বয়কট করে তা হলে জৌলুস হারানোর প্রবল সম্ভাবনা।

কর্তাদের মনে আরও বড় প্রশ্ন উঠছে, লোঢা কমিটির সুপারিশ বা সুপ্রিম কোর্টের মূল রায়ে কি এমন কোনও ইঙ্গিত ছিল যে, বোর্ডের অনুষ্ঠানেও এ সব নির্দেশ আসবে? উত্তেজিত কোনও কোনও কর্তার কথা শুনে মনে হল, সুপ্রিম কোর্টের কাছে এ নিয়েও অভিযোগ জানাতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement