সেঞ্চুরির পর কেদার যাদব।
ক্রিকেট সার্কিটে অনেকেই এখন তাঁকে বলতে শুরু করেছেন পকেট ডায়নামাইট। শুধু দর্শকই নয়, বিরাট কোহালি পর্যন্ত অবাক হয়ে গিয়েছেন তাঁর শট দেখে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মঞ্চে কেদারের এ রকম ধুমকেতুর মতো উত্থান আশা করেননি কেউই। শুধু এক জন ছাড়া। তিনিও মহারাষ্ট্রের প্লেয়ার ছিলেন, জাতীয় নির্বাচক ছিলেন এবং একটা সময় কেদারকে কোচিংও করিয়েছেন। তিনি সুরেন্দ্র ভাবে।
‘‘কেদারের সাফল্যের কোনও কৃতিত্ব নিতে চাই না, শুধু একটা ব্যাপার ছাড়া,’’ হাসতে হাসতে সংবাদসংস্থাকে বলছিলেন ভাবে, ‘‘ওর খাওয়ার অভ্যাসটা বদলে দেওয়ার পিছনে আমারই হাত আছে। আমিই মুর্গির মাংসটা খেতে বলেছিলাম ওকে।’’ মহারাষ্ট্রের রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ কর্মীর ছেলে। পুরো পরিবারই নিরামিষাশী। ভাবে তখন কেদারকে বুঝিয়েছিলেন, যে শরীরে শক্তি আনতে গেলে মাংসটা খাওয়া দরকার। তার পরই নিজের খাদ্যাভাস বদলে ফেলেন কেদার।
কেদারের উপর ভাবের প্রথম নজর পড়ে কেরলের বিরুদ্ধে কোচবিহার ট্রফির একটি ম্যাচে। ২৬২ বলে ১৯৫ করে যান তরুণ কেদার। ‘‘তখনই বুঝেছিলাম ছেলেটার মধ্যে কিছু আছে। ওর শরীরীভাষা দেখে বুঝতে পারবেন না, কিন্তু ও সব সময় বিপক্ষকে আক্রমণ করে ম্যাচের রাশটা নিজের হাতে রাখতে চায়,’’ বলছিলেন ভাবে।
ভাবে আরও একটা তথ্য দিচ্ছেন কেদারের সম্পর্কে। জানাচ্ছেন, এক জন বিশেষজ্ঞ কিপারের চেয়ে কম দক্ষতা নেই কেদারের। ‘‘আমি ওকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে কিপিং করতে দেখেছি। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে দেখেছি। যে কোনও বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপারের চেয়ে ভাল কিপিং করতে পারে ও। তা ছাড়া বোলিংটা তো আছেই। সত্যিকারের বহুমুখী প্রতিভা কেদার।’’ কেদারের স্পেশ্যাল ইনিংস বলতে দু’বছর আগে ওয়াংখেড়েতে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ইনিংসটার কথা তুলে আনছেন তাঁর মেন্টর। ‘‘সে দিন পিচে পড়ে বল দারুণ মুভ করছিল। জাহির দুর্দান্ত বল করছিল। কিন্তু কেদারকে নড়াতে পারেনি। সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়েছিল। ওকে কিন্তু থামানো যাবে না,’’ মন্তব্য ভাবের।
কোচিংয়ের দিনগুলো থেকেই আলাদা করে ভাবের সঙ্গে বসে নিজের ভুলত্রুটি শুধরে নিতেন কেদার। সে রকম একটি অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন ভাবে, ‘‘কেদারের ল্যাপটপ খুলে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। শেষ হল সলমন খানের একটা ডান্স নাম্বার দেখে। ওর স্টকে সলমনের এ রকম গান প্রচুর আছে। বিশেষ করে বেল্ট ধরে দাবাংয়ের সেই বিখ্যাত সলমন নাচটা ওর সবচেয়ে প্রিয়।’’
সাধে কী আর কেদার যাদবের ইন্ডিয়া এ টিমের সতীর্থরা তাঁকে ‘দাবাং’ বলে ডাকেন!